ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ‘স’ বর্ণটির উচ্চারণ ‘হ’ বর্ণ হিশেবে করা হয় সে> হে; শালা> হালা; সারা> হারা; সাজ> হজ; সতীন >হতিন; সকলে> হুগলে আবার কখনো কখনো ‘স’ কে ‘ছ’ বর্ণ হিশেবে উচ্চারণ করা হয় সালাম> ছালাম; সিলমোহর> ছিলমোহর; গোসল> গোছল; সালুন> ছালুন> ছান ‘ক’ বর্ণটিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় ‘হ’ বর্ণ হিশেবে উচ্চারণ করা হয় কাকা> কাহা; ঢাকা> ঢাহা; থাকা> থাহা; সকাল> সহাল, বাঁকা> বেঁকা> বেহা; ডাকাত> ডাহাইত Ξ আরও পড়ুন Ξ ♥ বাওনবাইরার ভাষা [ ৩ ] ♥ বাওনবাইরার ভাষা [ ২ ] ♥ বাওনবাইরার ভাষা [ ১ ]
ভাষা
সহজিয়া বানান জীবন
‘ণ’ বর্নটি অনেকের কাছে গুরুত্বপূর্ন মনে হতে পারে। আমার কাছে তার কোনো গুরুত্ব নেই। আমি ভাই ‘ন’কে নিয়ে বেশ ভালো আছি। আপন অর্থ নিজ আবার আপণ অর্থ দোকান, এতো সব দরজা আর তালা চাবি আমার ভালো লাগে না। আমি আপনে যাই = দোকানে যাই আপন কাজে মন দাও = নিজ কাজে মন দাও কারো কাছে আমার বক্তব্য পরিষ্কার করার জন্য ‘ণ’ ব্যবহার করতে হয়নি। তাই সহজিয়া বানান জীবনে আমি সংসার করি
বাওনবাইরার ভাষা [ ৩ ]
কইতারিনা আমি = বলতে পারি না আমি মতলব = ইচ্ছা, অভিলাস কনদা নামবা = কোন দিক দিয়ে নামবে সুন্দর অইবো = সুন্দর হবে থিরি= তৃতীয় কমু আমি = আমি বলবো যাই ত = হুম, যাই আইফুরমু = আসবো ছক্কা খেলা = লুডু খেলা নিচে যা = নিচে যাও চারহি = চাকরি চিললান = চিৎকার লেম্বু/ লেম্বু= লেবু কিএললাইগ্যা = কী কারণে লেং দেয়া = কৌশলে পা দিয়ে পায়ে আঘাত বেততমিজ = বেয়াদব ছাইরা দে = ছেড়ে দাও ( তীব্র রাগ এবং আকুতি প্রকাশ) আইচ্ছা = ঠিক আছে পাকনা= পরিপূর্ণ পাকা, অকাল পক্ক পাকনামী = অতিরিক্ত পাণ্ডিত্য প্রদর্শন গাডা = আঙ্গিনা ~ বাড়ির গরু গাডার ঘাস খায়না = কোনোজন নিকটজনকে গুনীজন হিসাবে মূল্যায়ন করে না। [ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আঞ্চলিক ভাষা] দ্বিতীয় পর্ব: বাওনবাইরার
বাওনবাইরার ভাষা [ ২ ]
ডেগ = রান্না করার পাত্র কেডা = নিদিষ্ট অর্থে কে অতলা = প্রচুর (এহানে অতলা মানু কেরে) রাত > রাইত তারা > হেরা কাল > কাল্লা লাউ = কথা লাঠি > লাডি দরকার > দরহার লোহা > লোয়া এটা > ইডা এখন > অখন পুত্র > পুত ইনি > ইলা কিতা = নিদিষ্ট অর্থে কি ঝি = মেয়ে (ফুফুকেও ঝি বলা হয়) খুঁটি > হুডা বাড়ি> বাইত রাত > লাইত হুতুম = শোয়া ফাতি = বাঁশের পাত্র ডিগলা = রশি (মূলত গরু ছাগল বেধেঁ রাখার রশি) হয়েছে > অইছে মহিষ > বইস জিংলা = চিকন বাঁশ [ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আঞ্চলিক ভাষা]
জামালপুরের ভাষা [ ১ ]
বাইলসা = বালতি হাবান = সাবান কৈরকা = মুরগি আহেক = আসো, এসো ওটি = ঐখানে এটি = এখানে মাইদেনি = সকাল বেলার খাবার বাইডেক = আঙিনা ইলেদ্যা= ইচ্ছা দোহান = দোকান দোহানদার = দোকানদার হরকা = সরকার হইন্ধা = সন্ধ্যা চই = হাঁস ছপ = ঝোপ আরা = বাঁশবাগান যাহেক = যাও, যাওয়া মাইদেন = সকাল পাগাল= ধারালো দা কেদ = কাদা কান্দন = কাঁদা ছেরা = নাতির প্রতি সম্বোধন ছেরি = নাতনির প্রতি সম্বোধন পুনাই = বাচ্চা পুনা = প্রাণির বাচ্চা হিয়্যাল = শিয়াল ঠাহুর = ঠাকুর বরাক = মুষলধারে বৃষ্টি নামিল্যা / নাম্নি = পেটের অসুখ, লুজ মোশন পানঠি = লাঠি বিআইততা = বিবাহিত আবিআইততা = অবিবাহিত হয়োর = শ্বশুর হোয়রি = শ্বাশুড়ী আন্নে আইসকেন =
বাওনবাইরার ভাষা [১]
আসব > আমু যাব > যামু খাব > হামু রাঁধব > রান্দুম দেখব > দেহুম শুনব > হুনুম মারব > মুরামু ডাকব > ডাহুম [তরে মুরাইয়্যা বাফ ডাহামু] করব > কুরুম মরব > মুরুম [তরার যন্ত্রণায় আজা মুরুম] (বিশেষত মায়ের উক্তি) উচ্চারণের সময় ‘ব’ ধ্বণিটি ‘ম’ হিশেবে উচ্চারিত। কখনো মাঝের বর্ণটি উধাও; আবার প্রথম বর্ণে ‘উ’ কার চলে আসে। [ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আঞ্চলিক ভাষা]
ভাষার সীমাবদ্ধতা, বর্নের সীমাবদ্ধতা
ছোটকাল থেকে শুনে আসছি ধ্বনির সাংকেতিক চিহ্ন বর্ন। কথাটি আংশিক সত্য, অধিকাংশ সত্য নয়। কারন ধ্বনি একটি বিশাল এলাকা। আর বর্ন ছোট এলাকা, খুবই ছোট এলাকা। উপলব্ধি যখন সাগর ধ্বনি তার জল। ধ্বনির বৈচিত্র্য ভাষার মাধুর্য নির্দেশ করে। আবিষ্কৃত বর্ন প্রায় সময় ধ্বনির বৈচিত্র্যময় এলাকায় প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে। কারন বর্ন মৌলভি যারা আছেন তারা বর্নের প্রথাগত উচ্চারন জায়গায় একেবারে পাগড়ি পরে সুন্নতি লাঠি নিয়ে বসে তাহেন। ফলে মুরিদরা মনে করে বর্নের উচ্চারন শুদ্ধতা মানে ভাষার একেবারে গঙ্গাজল শুদ্ধতার জায়গা। যেমন, ফন একটি শব্দ। ফন মানে সুন্দর, সতেজ, পরিষ্কার, ফ্রেশ। ফন শব্দটি উচ্চারন করার জন্য প এবং ফ এর মাঝে আরেকটি বর্ন আবিষ্কার করার প্রয়োজন। কিন্তু বাংলা ভাষায় সেই বর্নটি নেই। পৃথিবীর অনেক ভাষা পৃথিবীর অনেক শব্দ নিতে পারে না। এখানে ভাষার সীমাবদ্ধতা,
মুখ থেকে সমাজে
ওতুটুক = এতটুকু তাম্বু লাল= সূর্য অস্ত যাওয়ার পূর্বে চূড়ান্ত লালিমা [তাম্বুল মানে পান, তাম্বু লাল মানে পান খাওয়ার পর মুখে যে লাল আভা ছড়ায় তার সাথে সূর্যের অস্ত যাওয়ার চূড়ান্ত মুহুর্তের তুলনা~ হাইনজা বদা তাম্বু লাল]। বদা = নিতম্বে থাপ্পড় দেয়া, পরাজয় সূচক ধ্বনি [দেশীয় খেলায় পরাজিত খেলোয়াড়দের নিতম্বে জয়ী খেলোয়াড়রা নিদিষ্ট সংখ্যাক থাপ্পড় দিত] হেমাদে =থেমে যাওয়ার নির্দেশ গেছেগা = চলে গেছে [ পুরাঘটিত বর্তমান + সাধারণ অতীত] লইছে = নিয়েছে, নেয়া, থাকা [বালেল লাইগগা লইছে গা~ ক্ষুদ্র কিছুর জন্য অযথা আকুতি] বুগুল দিয়ে যাওয়া = পাশ দিয়ে যাওয়া লেদা = পশু-পাখির বিষ্ঠা ওলাহাইননা = অভিবাসী, শেকড় ছাড়া ওলা বিলাই = হিংস্র পুরুষ বিড়াল টুলা = বন বেড়াল হিয়াল = শেয়াল বাইসাব = বড় ভাই পাজুন /বেনদা= লাঠি, পশু-পাখি চড়ানোর লাঠি হেদা = ওম দেওয়া, তাড়ানো চুহুইল = ধান থেকে প্রাপ্ত তুষ আইললা= দেশীয়
সালাম থেকে সেলাম থেকে সেলামি
সালাম থেকে সেলাম, সেলাম থেকে সেলামি। সেলামি মানে সালাম দেয়ার জন্য প্রাপ্য অর্থ। এখানে সেলামি মানে সালাম করার কারনে প্রাপ্য অর্থ। সালাম করার রীতি মুসলিম কালচারে নেই। সনাতনী কালচারে প্রনাম করার রীতি চালু আছে। যারা একসময় প্রনাম করতে অভ্যস্ত ছিল তারাই এখন সেলাম করে। সালাম অর্থ শান্তি ~ আসসালামু আলাইকুম Peace be upon yours (not you) = আপনাদের উপর শান্তি নেমে আসুক। কারন এখানে কা শব্দটি ব্যবহার করা হয়নি, করা হয়েছে কুম (আলাইকুম)। কা ' র বহুবচন কুম। কা ( জমির বা সর্বনাম) অর্থ আপনি বা তুমি কিন্তু কুম অর্থ আসে আপনাদের বা তোমাদের। তাহলে প্রশ্ন আসতে পারে একজন ব্যক্তিকেও কেন আসসালামু আলাইকুম বলবো। বলবো এই কারনে যে মুসলিম বিশ্বাস মনে করে ব্যক্তি কখনো একা না, ব্যক্তির সাথে সব সময় দুইজন ফেরেশতা
কথাদের ঘরবাড়ি
শব্দঘর তবন = লুংগি ;ফিরনি > সিরনি >সিন্নি ;আগগা= এগিয়ে আসা;পিচ্চা = পিছনে যাওয়া;ভাটি > বাইট্টা = ছোট আকৃতির, পেছনে যাওয়া ~ সিন্নি দেহলে আগগা, কুত্তা দেহলে পিচ্চা = সুবিধাভোগী মানসিকতা ; আগে গেলে বাগে হা, পিচে গেলে পইসা ফা = শান্ত চিত্তে সফলতা থাকে এমন ;কুস্তা = কিছু, অল্প পরিমাণ ;তাফাত = দূরে;বাগ = দূরে যাওয়া;বন /হের = খড়;আগা / গু = মলমূত্র ;খালা + আম্মা = খালাম্মা > হালাম্মাজ্যেষ্ঠ >জেঠা> জেডা =বড় চাচাজ্যেষ্ঠী > জেঠী>জেডী = বড় চাচী বেছা (becha)~ vend, sell out, sell, encash বিক্রি > বিহি > বেছা দুয়ান (doyan) ~ shop, small market, store, hoard দোকান > দোহান > দুহান > দুয়ান হস্তা (hosta)~ cheap, common, punk,twopenny, potty, get-at-able, inexpensive সস্তা > হস্তা ইলা (ela)~ he/she, subjective form of third person singular number,