আমি প্রতিদিন রাতে একগ্লাস জুস খাই। পেঁপের বা আমের বা কলার জুস। একটি দোকান থেকেই খাই। পকেটে যেহেতু টাকা এবং মনভর্তি স্বাধীনতা আছে সেহেতু যে কোনো দোকান থেকেই খেতে পারি। কিন্তু খাই না। যেখানেই থাকি জুস খাওয়ার জন্য আমি সেই দোকানে চলে আসি (ঢাকা থাকলে)। লেনদেন আমি একজায়গা থেকে করতে পছন্দ করি। আমার মোবাইল কোনো কারনে অন্য চার্জজার দিয়ে চার্জ দিলে মোবাইল গুসসা করে অনেকটা বাংলা সিনেমার এককালীন চমৎকার অভিনেত্রী শাবানার মতো। সে তখন ভালোভাবে কাজ করতে চায় না। তাই যেকোনো লেনদেনে আমি বহুগামীতা পছন্দ করি না। একবছর যাবৎ আমি সেই দোকান থেকে জুস খাচ্ছি। কিন্তু দোকানদার আমার সাথে অন্য কাস্টমারের মতোই আচরন করে। প্রতিদিন দোকানে গিয়ে আমাকে বলতে হয়, ভাই প্রয়োজনে টাকা বেশি নেন কিন্তু আমার জুস যেন ভালো হয়। সে
বৈঠক ঘর
আফালের মাছ [ ৬ ]
মৃত্যু এক পর্যটন নগরী, প্রাণী বাধ্যগত পর্যটক মায়ের জাত এখনো ঘরকেই জয় করতে শিখেনি, আর বাইরে তো তুমুল বৃষ্টি শিশুদের চোখ নিষ্পাপ নগরী, শিশুদের হাসি হৃদয়ের ঢেউ প্রতিটি ভ্রমণ একটি জন্মের কথা বলে, প্রতিটি রমণ একটি ভ্রমণের কথা বলে প্রেমিকা বানরকে পছন্দ করে, প্রেমিককে মনে করে খোপার বেলী ফুল মানুষের হাসির নিচে থাকে স্বার্থ, কান্নার নিচে আমিত্ব প্রত্যেক নারী সাবজেক্ট- ভার্ব-অবজেক্ট, প্রত্যেক পুরুষ অবজেক্ট-ভার্ব-সাবজেক্ট রাত মানে অন্ধকার নয়— চোখের অসুখ Night is not the collection of dark body; very limitation of the eye রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কেমন করে যেন ঘরের ভেতরের কথা খুব সহজ করে বাইরে নিয়ে এসে ফুলেল গন্ধময় করে তুলেন, বাইরের কথা ঘরে নিয়ে এসে ভীষন সুন্দর পূজাঅর্ঘ প্রতিমা করে তুলেন আলোর খুব কাছে থাকে পোকামাকড়— আলো থেকে
আফালের মাছ [ ৫ ]
শরীরের কোন অংশে ক্যানসারের ভাইরাস পাওয়া গেলে তা কেটে ফেলে দিতে হয়। ডাক্তার তাই করেন। জীবন বাঁচাতে গেলে ডাক্তারকে এমন অনেক নিষ্ঠুর কার্যাবলী অত্যন্ত দক্ষভাবে সমাপ্ত করতে হয়। প্রয়োজনে নিষ্ঠুর হওয়ার নাম মানবিকতা। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বাংলাদেশে রোগীর চেয়ে ডাক্তার বেশি। আপনার সন্তানকে নিয়মিত সহনশীলতার টিকা দেন যাতে সে গনতান্ত্রিক মানুষ হয়ে ওঠতে পারে। শিক্ষিত ছাগল শেষ পর্যন্ত মানুষ হয়ে ওঠতে পারে কিন্তু গনতান্ত্রিক ছাগল শেষ পর্যন্ত মানুষের হয়ে ওঠতে পারে না। Things end but thoughts survive যাদের গার্লফ্রেন্ড অথবা বয়ফ্রেন্ড নেই তাদের গার্লফ্রেন্ড অথবা বয়ফ্রেন্ড শয়তান অনেকেই আমাকে ম্যাসেজ দেয় ‘শুভ রাত্রি’। তারা শুভ এবং রাত্রির মাঝখানে ফাঁক রাখে। কিন্তু আমি জানি শুভ এবং রাত্রি বিবাহিত। তাই তাদেরকে আলাদা রাখতে চাই না অন্তত রাতের বেলায়। তাইতো আমি ম্যাসেজ পাঠাই
আসলে মানুষ, নির্ভরশীল
জিন্দেগি বহৎ কুছ সিখাতে হে কাভি হাসাতি হে কাভি রোলাতি হে হুদছে জাদা কিছিপে ভারোসা মাত কার না আন্দেরে সে তো পারছায়ি বি সাত সুর ঝাতে হে অন্ধকারে নাকি নিজের ছায়াও নিজের সাথে থাকে না। আমি বলি অন্য কথা। অন্ধকারে ছায়া আর আমি এক হয়ে যাই। বিপদ আসলেই নিজের চরিত্র আয়না হয়ে যায়। নিজেকে তখন নিজের চোখে দেখা যায়। কষ্টের ভেতর থাকে অন্য রকম মানব জীবন। কষ্টের গানই মূলত গান। কষ্টের কথাই মূলত পৃথিবীর আদি কথা। মানুষকে অবশ্যই মানুষের উপর বিশ্বাস, ভরসা রাখতে হয়। একজন বিজ্ঞানীর সাথে একজন কৃষক জন্মগতভাবে থাকেন। কারণ কৃষকের উৎপাদিত ফসল বিজ্ঞানীকে ভোগ করতে হয়। একজন কৃষকের সাথে একজন তাঁতী বাধ্যতামূলকভাবে থাকেন। কারণ কৃষককে কাপড় পরিধান করতে হয়। একজন তাঁতীর মাঝে একজন ডাক্তার থাকেন। কারণ তাঁতীকে ঔষধ সেবন করতে হয়। আসলে মানুষ
দ্বিতীয় মানুষ
প্রজাপতি, তোমার গিফট হাতে পেলাম। চমৎকার কারুকার্যখচিত আল্পনা। অনেকক্ষণ হাতে তৈরি খামের দিকে তাকিয়ে ছিলাম,তাকিয়ে ছিলাম খামের ভাঁজে ভাঁজে যে স্পর্শ লুকিয়ে আছে তার দিকে। চোখে নাকি মন থাকে, আমি বলি চোখে থাকে জীবন। তাই জীবন দিয়ে খামের জীবনকে উপলব্ধি করার চেষ্টা করি। উপলব্ধির জায়গায় আমি চমৎকার মানুষ, প্রকাশের জায়গায় এখনো আশাবাদী হয়ে ওঠতে পারি নি। বেশি ফুলের নাম জানি না। কারণ আমার শৈশব কেটেছে সরিষার ফুলের গন্ধে। তা ছাড়া তথ্যগত জায়গা থেকে আমার শৈশব ততটা শিক্ষিত না। তারপরও তোমার পাঠানো খামের প্রচ্ছদে নীরবে শুয়ে থাকা অজানা ফুলের দিকে আমার চোখ। ফুলের মাঝখানে ‘প্রজাপতি’ শব্দটি আমাকে মারাত্মক প্রেমিক করে তোলে। প্রিয় নাম যে ফুলের চেয়েও সুন্দর হতে পারে, হতে পারে ফুলের চেয়েও সুগন্ধী আমার জানা ছিল না। তার উপরে প্রিয় নামটি প্রিয়ার নিজ হাতে
ব্যবসায়ী এবং ব্যবসায়ী
সাপ একবার বলল তোমরা আপেল খাও, তারপর থেকে তারা বারবার আপেল খেতে লাগলো। আপেল খাওয়ার কারনে পৃথিবী নামক দ্বীপে তাদেরকে নির্বাসন দেয়া হলো। তবুও তারা আপেল খাবে। জান্নাতে যেমন সাপ ছিল পৃথিবীতেও সাপ আছে। তবে পৃথিবীতে সাপ এসে ব্যবসায়ী হয়ে গ্যাছে– মাছ ব্যবসায়ী, গাইড ব্যবসায়ী, শিক্ষা ব্যবসায়ী, গান ব্যবসায়ী, ধর্ম ব্যবসায়ী, কর্ম ব্যবসায়ী, ব্যবসায়ী এবং ব্যবসায়ী।
দশটি হাঁসের জীবন
বিবিসি নিউজ শুনছিলাম। শুনছিলাম এক গ্রামীন মায়ের বক্তব্য। অবশ্যই বক্তব্য বলা যাবে না, বলতে হবে গ্রামীন মায়ের কথা। কারন মিডিয়া মনে করে গ্রামীন সহজ সরল মানুষ বক্তব্য দেয়ার মতো যোগ্যতা রাখে না। বক্তব্য বা অভিভাষন দেয়ার একমাত্র যোগ্যতা রাখে শহরের গুগলমুখী মানুষ যারা মুখ ও মুখোশের হিসাবটা ভালো জানে। কথায় যা উঠে আসলো তা হলো গ্রামীন মা বন্যায় আটকা পড়েছে। তার কুড়ি পঁচিশটা হাঁস ছিল, তার মধ্যে দশটি হাঁস মারা গ্যাছে। আর দশটি হাঁস মারা যাওয়াতে তার বড় ক্ষতি হয়ে গ্যাছে। হ্যাঁ, সে বলছিল তার বড় (!) ক্ষতি হয়ে গ্যাছে। অথচ এই শহরের বিলাসী রেস্টুরেন্টে প্রতি ডিনারে মাত্র একটি টেবিলে দশ হাঁসের অবচয়ের হিসাব ডাস্টবিনে জমা থাকে!
উত্তাল শাহবাগ
গণজাগরণ মঞ্চ। উত্তাল শাহবাগ। জয় বাংলা ধ্বনি-প্রতিধ্বনি। বসে আছি আমিও। বসে আছি মূল মঞ্চের খুব নিকটে। বার বার আমার চোখ ক্যামেরার দিকে। ক্যামেরা যদি একবার আমার চেহারাহানা ক্লিক করে তাইলে আমার গ্রামের মানুষ ঘরে বসে আমারে দেখতে পাইবো। দেখতে পাইলেই আমারে ফোন দিবো আর কইবো, ‘আফনারে অমুক টিভিতে দেখছি।’ তাতেই আমি খুশি, বসে থাকার উসুল হয়ে যাবে। আমার পাশেই বসে আছে মোমবাতি মোমবাতি টাইপের এক নারী। তার সাথে কিউট কিউট এক শিশু। শিশুর কপালে বাংলাদেশের পতাকা, শরীরে পাঞ্জাবি। নারী আমার দিকে তাকিয়ে বলে, ‘মনে হচ্ছে আবার স্বাধীনতা যুদ্ধ চলে আসছে।’ উত্তর না দিয়ে মৃদু হাসলাম। মৃদু হাসলাম। কিছুক্ষণ পর ছোট ছোট বৃষ্টির ফোঁটা পড়ছে। নারী আর বসে থাকেনি। কারণ বৃষ্টির ফোঁটা নারীর ম্যাকাপ করা মুখে আক্রমণ করে, ম্যাকাপ নষ্ট হয়ে যায়, ক্যামেরায় রূপালী ফেইস আর আসবে
আপনি খুব হতাশ?
আপনি খুব হতাশ। মনে হচ্ছে এখনি আত্মহত্যা করে ফেলা দরকার। আপনার মনে হওয়া মোটেও অবান্তর কিছু না। আত্মহত্যা আপনি করতেই পারেন। আপনি মরে গেলে কারো ভাবান্তর হবে না। এই দুনিয়ায় অনেক বিখ্যাত মানুষ মারা গেছেন, তাতে পৃথিবীর বিশেষ কোনো ক্ষতি হয়নি। এই দুনিয়ার অনেক কুখ্যাত মানুষ মারা গেছেন তাতেও পৃথিবীর কোনো বিশেষ উপকার হয়নি। আপনিও মারা যাবেন। তাতে পৃথিবীর বিশেষ কোনো উপকার বা ক্ষতি হবে না। এই বস্তুজগৎ প্রত্যেক বিষয়ের প্রত্যেক জিনিসের ডজন ডজন অল্টারনেটিভ নির্মান করে রেখেছে। এই বস্তুজগতে প্রত্যেক বস্তুর নেগেটিভ ও পজেটিভ রয়েছে। লবনের যেমন উপকার ও ক্ষতি রয়েছে, আপনারও তেমনি উপকারী ও ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে আপনার চারপাশে। তারপরও আপনি বাচবেন, তারপরও আপনি হাসবেন, তারপরও আপনি সময়মতো কাদবেন। আপনার ডিপ্রেশনকে ঘৃনা করবেন না, সে আপনারই অংশ, আপনার থট প্রসেসের অংশীদার
নেগেটিভ মানসিকতা
নেগেটিভ মানসিকতা আই ডিসলাইক করি। নেগেটিভ মানসিকতা থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকতে চাই। তার মানে চাঁদকে আমি সূর্য হিসাবে দেখতে চাই না। চাঁদ ইজ চাঁদ। সূর্য ইজ সূর্য। আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন। বলতে গেলে প্রায় জনশুন্য। বুঝলাম তিতাস ট্রেন চলে গেছে। মেশিন কন্ট্রোলারের কাছে গেলাম। এখন কোনো ট্রেন আছে? না, নাই। ভৈরব থেকে কোনো ট্রেন আছে? আছে, তবে ধরতে পারবেন না। কেন পারবো না? চট্টলা তালশহর ছেড়ে আসতেছে, লাইন দিয়ে দিছি। আসলেই কী পারবো না? অ মিয়া আফনে আসলেই বেশি বুঝেন, বলছি পারবেন না, পারবেন না। মানছি দশ মিনিটের ভেতরে ট্রেন চলে যাবে ভৈরব। দশ মিনিটের ভেতরে আশুগঞ্জ থেকে ভৈরব যাওয়া সো মাচ সো টাফ। কিন্তু অসম্ভব না। তাই একপ্রকার রেগেই গেলাম। আমি আসলেই বেশি বুঝি, তোমার দাদার দাদার চেয়েও বেশি বুঝি এই কথা শুনে লোকটি হা করে তাকিয়ে রইলো।