আমাদের ভানুসিংহের আক্ষেপ ছিল মাঝে মাঝে তার দেখা পায় চিরদিন কেন পায় না। চিরদিন যারে পাওয়ার ইচ্ছা তার দেখা মাঝে মাঝে পাইলেই বেটার। শীত আর সূর্যের আদরে যে গাছ বেড়ে ওঠে তার পুষ্টিমান অনেক ভালো। তাইতো প্রতিদিন নিয়মতান্ত্রিক ব্যস্ততার মধ্যে যখন একদুইদিন ছুটি পাওয়া যায় তখন স্বাভাবিকভাবেই আলিফ লাইলার সিন্দবাদ হয়ে রাতের জলে জাহাজ ভাসাতে ইচ্ছা করে এবং বাস্তবায়নও করি। এখান থেকে সেখানে, সেখান থেকে এখানে— এমন করে রাতজাগাপাখি হয়ে ছুটি উপভোগে ব্যস্ত কতিপয় বিন্দুবোধের দল। আমরা যারা বিন্দুবোধের সদস্য তারা তাবৎ পৃথিবীর তাবলিক রাতের জলে ভাসা জাহাজে নিয়ে আসি, আর বাতাসের স্রোতে ভাসিয়ে দেই আমাদের বিশ্লেষন। আজকে কথা হচ্ছিল সার্বিয়া নিয়ে, কথা হচ্ছিল জেনেভা ক্যাম্প নিয়ে, কথা হচ্ছিল ওমর মুভিটি নিয়ে যেখানে প্রেমিক দম্পতি বাংলাদেশ হানিমুনে আসার ব্যাপারে হাস্যরসের কারখানায়, কথা
বৈঠক ঘর
সংগঠন, সম মানসিকতার মিলন
সংগঠন। সম মানসিকতার দুই বা ততোধিক মানুষ যখন কোনো নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যকে সামনে রেখে মিলিত হয় তাই সংগঠন। সংগঠনের জন্য আর্থিক বিষয় মুখ্য নয়, আবার মুখ্য। কারন অর্থের তরলমান অনেক জায়গায় প্রয়োজন হয়, আবার অনেক ক্ষেত্রে আবশ্যক হয়ে পড়ে। সংগঠন তারাই করে যারা সমাজের অন্য আট দশজন থেকে আলাদা। সংগঠনের অনেক কাজ থাকতে পারে কিন্তু সংগঠনে তৎপর লোকটির প্রধান গুন আত্মমর্যাদাবোধ। ইন্টিগ্রিটি সেন্স না থাকলে সংগঠন করা যায় না, মূলত ইন্টিগ্রিটি সেন্স থেকে একজন মানুষ সাংগঠনিক মানুষ হয়ে উঠে। একটি মাজারের খাদেম আর সাংগঠনিক মানুষটির মধ্যে অবশ্যই কিছু নীতিগত পার্থক্য থাকবে। খাদেম বাজার খুলে বসে আছে মানে টাকা আসবে, যে কেউ তার মাজারে গরু ছাগল মহিষ ভেড়া উপহার দিতে পারবে। একজন সাংগঠনিক মানুষ কখনো বাজারের খাদেমের মতো অন্যের কাছে অর্থ প্রত্যাশা করতে পারে
ধর্ষণ, সুবিচার ও মাও সেতুং
বেইজিং গনপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকারের অধীনে সরাসরি কেন্দ্রশাসিত পৌরসভা হিসেবে পরিচালিত। বেইজিং কথাটির অর্থ ‘উত্তরের রাজধানী’। মহানগর এলাকার ভেতর দিয়ে হাই নদী ব্যবস্থার অনেকগুলো উপনদী প্রবাহিত হয়েছে, যাদের মধ্যে ছাওপাই নদী ও ইউংতিং নদীর কথা উল্লেখযোগ্যভাবে বলা যায়। বেইজিং সুসংহতভাবে গঠিত নয়; এখানে গ্রামীন বসতি ও স্থাপনার আধিপত্যই বেশি। প্রাদেশিক মর্যাদাবিশিষ্ট বেইজিং ষোলটি পৌরজেলা, উপ-পৌরজেলা এবং গ্রামীন জেলা নিয়ে গঠিত। ১৯৫০ সাল। ১৯৫০ সালের বেইজিংয়ের কথা। ১৯৫০ সালের বেইজিংয়ের একটি গ্রামের কথা। ১৯৫০ সালে বেইজিংয়ের একটি গ্রামের একটি ধর্ষিত মেয়ের কথা। চেয়ারম্যান তখন মাও সেতুং। বলা হয়ে থাকে মাও সেতুং কোনোদিন দাত মাজতেন না। কারন হিসাবে তিনি বলতেন বাঘের কথা। বাঘ নাকি দাত মাজে না। চেয়ারম্যান তখন মাও সেতুং। একটি মেয়ে উদাম মাঠে গণধর্ষণের কবলে পড়ে! মেয়েটি আস্ত শরীর নিয়ে বাড়ি ফিরে কান্না অভিমান
প্রতিযোগিতার অসীম গোলক ধাঁধাঁ
স্কুলে ভর্তি হওয়ার সাথে সাথে শিশুর হাতে বই ধরিয়ে দেয়া হয় না, দেয়া হয় প্রতিযোগিতার অসীম গোলক ধাঁধাঁ। গোলক ধাঁধাঁয় পড়ে প্রথমে শিশুটি তার পাশের শিশুটিকে প্রতিযোগী ভাবতে শিখে। জীবনের প্রথম শিক্ষালয়ে শিশু শিশুর কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করার পরিবর্তে কাঁধে অস্ত্র রেখে চলার শিক্ষা লাভ করে। এইভাবে শিশু বড় হতে থাকে, হতে থাকে ব্যক্তিগত, হতে থাকে আপনি বাঁচলে বাপের নাম পরিবারের বাসিন্দা। অপরের প্রতি শ্রদ্ধাবোধ কমতে থাকে। অপরকে যে শ্রদ্ধা করে না সে কখনো পূর্ণাঙ্গ মানুষ হতে পারে না। অপূর্ণাঙ্গ মানুষ আবিষ্কারের কাহিনি মুখস্থ করে, কখনো আবিষ্কারক হয়ে ওঠতে পারে না। আবিষ্কারক হয়ে ওঠার জন্য যে সমতার নীতি প্রয়োজন তা কিছু বিসর্জন দেয় স্কুলে, কিছু কলেজে, বাকি সবটা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসে। প্রত্যেক ছাত্র কঠোর পরিশ্রম করে। লাইফটারে একেবারে তেজপাতা বানাইয়া ফেলে। তারপর তারা চাকর
বিয়ে করলে মন ত খারাপ থাকবেই!
অটোতে বসা। দুধ কিনে আনছি। সয়াবিন তেল দিয়া যে বাজারি দুধ বানায় এই দুধ না। রিয়েল দুধ। বিয়ের আগে দুধ খাওয়া উত্তম। বিয়ের পরে দুধ খাওয়া অতি উত্তম। তবে বিয়ের আগে ও পরে রিয়েল দুধ পাওয়া খুবই কষ্টের। অনেক খুঁজতে হয়। অনেক কষ্ট করেও খুঁজে পেলে ভালো। মুরুব্বিদের বলতে শুনছি রিয়েলের এক গুন, আনরিয়েলের আঠারো দোষ। গেইট বাজার থেকে রিয়েল দুধ কিনে আনছি। তরতাজা ব্যাপার স্যাপার। অটোতে আমি আর অটোম্যান। অটো চলছে। অটো থামল। এক লোক উঠে।লোকটির দিকে তাকিয়ে কথা বলার ইচ্ছা হল। আপনার মন খারাপ? লোকটির আমার দিকে মিটমিট করে তাকায়। আপনি বিয়ে করেছেন। (রাস্তার পাশেই তার বাড়ি। অটোতে উঠার সময় তার চেহারায় বউয়ের সাথে ঝগড়া করার ছাপ)। হুম। বিয়ে করলে মন ত খারাপ থাকবেই। কেন? স্বামী চায় বউ তাকে যেন বুঝে, বউ চায় স্বামী যেন তাকে বুঝে,
আফালের মাছ [ ৭ ]
রিক্সাওয়ালা ভাসমান রেকর্ডার সবাই যখন কথা বলে সবপাশ মাতাল করে রাখে নিজেকে তখন নিতান্ত গরীব কথার মানুষ মনে করতে থাকি। কৃপন স্বভাবও কিন্তু আমার নেই। ব্যাংকে আমি কথা জমা রাখি না। আজকাল কথা শুনতেও ভালো লাগে না। আমি মনে হয় গাধার মতো চুপ থাকতে শিখেগেছি দুর্বলের মতো গর্জন করবো বলে। শুনেছি দুর্বলের গর্জন নাকি অনেক সুন্দর, অনেক শক্তিশালী। যা দেখা হয় তা মনেই দেখা হয়, চোখ তো কেবল দেখার উপায় মাত্র ইতিহাস সত্যের কবর, সত্যের জন্য কোনো হাশরের ময়দান নেই History is the grave of the truth, no meadow be found for the truth প্রিয় ফুলের গান শুনতে চাই না, কবরে থেকেও ফুলের ঘ্রাণ পেতে চাই Dear not eager to listen a song on flower, burning need to have odor of flower even in
সেই হাসি, সেই চোখ
আজও মনে পড়ে তাকে। আজও মনে পড়ে তার সেই হাসি। আজও মনে পড়ে তার সেই চোখ। বাংলা বিভাগে ভর্তির যাবতীয় কাজ শেষ করলাম। এখন আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র। মনে আনন্দ আর আনন্দ। কলাভবনের দ্বিতীয় তলায় আমাদের বাংলা বিভাগ। রুদ্র মুহাম্মদ শহিদুল্লাহ এই কড়িডোর দিয়ে হাঁটাহাঁটি করতেন, আমি এখন এই কড়িডোর দিয়ে পায়চারী করে রোদেলা সময় যাপন করবো। এতো আনন্দ আমি কোথায় রাখি! আনন্দ মনে গানে গানে সিঁড়ি ভেঙে নিচে নামি। ডিন অফিসের সামনের দরজায় বের হয়ে যাবো। দেখি ডিন অফিসের সামনে কস্টিউম করা সুন্দরী মেয়েরা ম ম পন পন বো বো করছে। এক সুন্দরী মেয়েকে জিজ্ঞেস করলাম ‘এখানে কী?’ মেয়েটি হাসিমাখা চোখে উত্তর দেয়— নাট্যকলা ও সঙ্গীতের ভাইভা হচ্ছে। ও তাই। জ্বী তাই। তারপর মেয়েটি আমার সম্পর্কে জানতে চায়লো। আমি আপনি আপনি আমার আনন্দের নিউজটা প্রকাশ করার
কাজল রবি দাস ও রিক্সাওয়ালা
ক. কাজল রবি দাসের দোকানে গিয়ে চামড়া জুতা দেয়ার জন্যে বললাম। তিনি জেনুইন চামড়ার জুতা দিলো। সোল ব্যতীত জুতাটির আপাদমস্তক চামড়ার। দাদা কিসের চামড়ার এই জুতাটি? গরুর। গরু না আপনাদের দেবতা? এই সব কতা ইণ্ডিয়া গিয়া কন, ইডা বাংলাদেশ। চামড়ার জুতা পড়লে নাকি মাথা ঠান্ডা থাকে। দেবতার চামড়া থেকে যে জুতা নির্মান হলো সেই জুতা পায়ের নিচে পড়ে কেমনে মাথা ঠান্ডা রাখবো!? খ. রিক্সাওয়ালাকে বললাম আমাকে আজিমপুর কলোনিতে দিয়ে আসতে। টিএসসি থেকে আজিমপুর কলোনি। মামা ভাড়া কত? ৩০ টেহা দিলেও নিতে ফারমো, ৭০ টেহা দিয়াও নিতে ফারমো, আবার ২০ টেহা দিয়াও নিতে ফারমো। রিক্সাচালকের দরদাম শুনে আমি তো অবাক। আমি ৩০ টেহা দিয়া রাজি হইলাম। আল্লা গো! ইডা রিক্সা চলতাছে না, চলতাছে বিমান। মামা আস্তে চালান। মামা বেশি কতা কইয়েন না— যেমন ভাড়া তেমন চলন। রিক্সা থেকে নেমে আমি মোটামুটিভাবে আসমানের
ভয়ে মরতে চাই না
ভূমিকম্পে পুরো বিল্ডিং কেঁপে ওঠল, আমি খাচ্ছিলাম, খেতে থাকলাম, হাউমাউ কান্না পুরো বিল্ডিং ছড়িয়ে গেল। আমি তখনো খেতে থাকলাম। ভূমিকম্প থেমে গেলো। আমি তখনো খেতে থাকলাম। পুঁটিমাছ ভাজি আর ভাত। বিল্ডিং ভাঙেনি। তাদের ভয় পাওয়া আর কান্নাকাটি লজ প্রজেক্টে লেখা হলো। মরে যাবো একদিন নিশ্চিত কিন্তু ভয়ে ভয়ে মরতে চাই না। ভয় মৃত্যুর ঔষধ নয় বরং ভয় মৃত্যুর এসিস্টেন্ট। মরে যাবো একদিন নিশ্চিত কিন্তু ভয়ে ভয়ে মরতে চাই না। মরে গেলে আমার জন্য কেউ দোয়া করবেন না, দোয়া করবেন তাদের জন্য যাদের পাশে আমি দাঁড়াতে চেয়েছিলাম।
প্রয়োজনে দূরেও যাওয়া
দুই হাজার এগারো সালে আমি একখান কম্পিউটার কিনি। দুই হাজার তের সাল পর্যন্ত তার সাথে আমার সম্পর্ক ভালোই ছিল। দুই হাজার তের সালের পর তার সাথে আমার সম্পর্ক অনিয়মিত হয়ে পড়ে। যেহেতু আমি ব্রেকআপ নীতিতে বিশ্বাসী না সেহেতু বলতে পারছি না তার সাথে আমার ব্রেকআপ হয়েছিল কিংবা বলতে পারছি না পিরিতি ভাঙিয়া গেলে নাহি লাগে জুড়া। আমার প্রিয়তমা কম্পিউটার আরামসে ঘুমে ব্যস্ত, আমিও তাকে কোনো প্রকার বিরক্ত করতাম না। সে যেখানে ঘুমিয়ে থাকতো সেখানেই আমি আমার দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসপত্র রাখতাম। তার কানের কাছ দিয়ে আমার হাত চলাফেরা করত কিন্তু কখনো তার শরীরে হাতের স্পর্শ সজাগ করেনি। কিন্তু আমার বিশ্বাস ছিল আমি ডাক দেয়া মাত্র আমার প্রিয়তমা কম্পিউটার কাজ করতে আরম্ভ করবে। অনেক কম্পিউটার বিশারদ আমাকে অনেকভাবে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছে। আমি ভয়