জুনায়েদ বোগদাদির মামা সাররী সাকতী। সকত থেকে সাকতী। সকত শব্দটির অর্থ হলো ভূমিতে পড়া। ভূমিতে পতিত ফল কুড়িয়ে বিক্রি করে তিনি জীবনযাপন করেন প্রথম জীবনে। তার পীরের নাম মারুফ কারখি। সাররী সাকতী অত্যন্ত উচু মানের একজন সাধক ছিলেন— কথিত আছে দীর্ঘ ৯৮ বছর তিনি কখনো মাটিতে পীঠ লাগাননি— ঘুম পেলে দেয়ালে ঠেশ দিয়ে বসতেন। সাকতী অসুস্থ হয়ে পড়ে। মুমূর্ষু। আবহাওয়া খুবই গরম। জুনাইদ বোগদাদি বাতাস করতে চায়লেন।তিনি নিষেধ করেন। তার মতে বাতাস আগুনের তেজ নাকি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়। জুনাইদ বোগদাদি বাতাস করা বন্ধ করে নছিহত চায়লেন নিজের মামার কাছে নিজের জন্যে। — জুনায়েদ! মানুষের সাহচর্য বর্জন করে শুধু আল্লাহর ধ্যানমগ্ন হয়ে কালযাপন করো। জুনায়েদ মামার কথা শুনে জবাব দিলেন— ‘এমন কথা যদি আপনি আগে বলতেন তাহলে আমি মানুষ থেকে এমন দূরে থাকতাম যে
বৈঠক ঘর
বুদ্ধিজীবীদের ভালো লাগে
বুদ্ধিজীবীদের আমার অনেক ভালো লাগে। তারা মেয়েদের চুলের মতো গোছানো। তারা মেপে মেপে খান, মেপে কথা বলেন। বুদ্ধিজীবীদের আমাদের অনেক ভালো লাগে। তারা সাপের লেজের মতো পিচ্ছিল এবং খুব ভালো করেই গর্ত চিনেন, আর বিড়ালের মতো উষ্ণতা প্রিয়। তাদের ঘিরে থাকে নাতিশীতোষ্ণ তোষামদকারীর দল। বুদ্ধিজীবীদের তাদের খুব ভালো লাগে। কারণ তারা আমার মতোই বোকারামের দল— আবোল তাবোল কথা বলে, তালে বেতালে চলে। আপনি ইমানদার হলে অন্তত কথা বলাতে সাবধান থাকবেন। কারন কোন কথায় আপনার ইমান চলে যাবে আপনি নিজেও জানবেন না। বুদ্ধিজীবীরা কিন্তু কথার ব্যাপারে সাবধান থাকে, কারন যে কোনো কথার কারনে তাদের বুদ্ধির তকমা ডাস্টবিনে চলে যেতে পারে। যত আছান আমার মতো এই নবীন বোকাদের— হারানোর কিচ্ছু নাই, সবই পাওয়া, সবই দয়ালের দান।
দেশটা অপমানিত হলে তুমিও অপমানিত হও
দেবলছেড়া পুঞ্জি। কেউ কেউ বলে ডাবলছেড়া পুঞ্জি। শমশেরনগরের একটি জায়গা। বাগান এলাকা। চা বাগান। দেবলছড়া পুঞ্জির পাশেই খাসিয়া পল্লী। মিস্টার পিডিশন এই পল্লীর প্রধান। খাসিয়া পল্লীর পাশেই প্রাইমারি স্কুল। স্কুলের বিশাল মাঠ। মন ঠান্ডা করে দেয় এমন মাঠ। এই মাঠ থেকে সকাল ছয়টা ৪৫ মিনিটে শুরু হয় আমাদের ট্রেইল ম্যারাথন। ৪২.২ কিলোমিটার। আমরা কিন্তু ছয়টা ৪৫ মিনিটে ম্যারাথন শুরু করিনি। আমরা বলতে আমি আর সাদিয়া দেওয়ান মুনা। মুনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের philosophy ডিপার্টমেন্টের স্টুডেন্ট। ম্যারাথন করে প্রায় দুই বছর আগ থেকে। মুনার আন্তরিক সহযোগিতার ফলে ম্যারাথনযাত্রা শুরু করতে পারলাম, তাও আবার ট্রেইল ম্যারাথন দিয়ে। কেন আমরা ৫৫ মিনিট পরে ম্যারাথন শুরু করি? ড্রেস পরিবর্তন করার জন্যে কোনো জায়গা খুজে পাচ্ছিলাম না। ব্যাগ রাখার জন্যে কোনো নিরাপদ জায়গায় খুজে পাচ্ছিলাম না। তাছাড়া শমশেরনগর থেকে
আফালের মাছ [ ৮ ]
শিশুর কোনো জাহান্নাম নেই। কারন জান্নাতের প্রতি তার কোনো লোভ নেই, পাগলেরও তাই। No hell for the child as they have no a little yearning for the heaven is to the crazy dab একটি প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাসকে অপ্রয়োজনীয় বলতে গেলে আরেকটি বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করা লাগে। আর বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করতে গেলে ঝড়ের দিনের আম হলে চলে না, হতে হবে রক্তবীজের মতো প্রানদায়ক। দুর্গা, পুরুষ তোমার অবয়ব বানাতে গিয়ে বানিয়ে ফেলে তার প্রেমিকার অবয়ব ঢেউয়ের মতো হালকা হয়ে যাওয়ার পর ভাসতে ভাসতে পুরাতন পিরামিড পাড়ি দিয়ে তোমার বাড়ির উঠোনে পতিত হবো কোনো এক সমুদ্র হয়ে মানুষের সৌন্দর্য দেখার জন্য আমি তার নীরবতা পর্যন্ত অপেক্ষা করি বেয়াদব চোখ মন দেখে না, স্তন দেখে— বোকা চোখ স্তন দেখে না, মন দেখে— মানবিক চোখ মনের পাশে
আমার আর মাছ হওয়া হলো না
শুন্যকে মিছিলে দাঁড় করালেও সংখ্যা হয় না, সংখ্যা মারা গেলেও শুন্য হয় না, অন্ধকারের সীমান্তে অন্ধকার থাকে আলোর সীমান্তে থাকে আলো, পাহাড়ের সাথে মুদির দোকান মালিকের কথা হয়, মুদির মালিক চাঁদ কিনতে চায়, তাই সে জোছনা রাতে টিএসসিতে এসে বসে থাকে, টিএসসি আবার আলু বিক্রি বন্ধ করে দিয়েছে, এখন সে নায়িকা শাবানা নিয়ে ব্যস্ত, শাবানা আবার অভিনয় রেখে আল্লারাসূল নিয়ে মহা ব্যস্ত, জান্নাত তাকে পেতেই হবে। এই দিকে দেখা দিয়েছে আইন সংকট। অনেক সংকটের মুহূর্তে মহারাজের ঠান্ডা লেগেছে, মহারাজ গান করতে পারছে না। রাজ্যে এখন মুশকিল কান্ড। নদী শুকিয়ে গ্যাছে। তাই নদী কৌশলে ডাকে। রাক্ষস রাক্ষসীর খেলা জমবে এবার। আমার আর মাছ হওয়া হলো না। আমার আর পাখির দেশে যাওয়া হলো না। এখন একটা কুড়েঘর বানাব মাছ আর পাখির মতো হুবহু।
মানুষমুখী মানসিকতা
প্রত্যেক ইবাদত ভাই ভাই। প্রত্যেক ইবাদত জলের মতো যৌথকোষ। ইবাদত মানে নিজের প্রতি সচেতন থাকা। জলের কোনো অংশে ঢিল মারলে যেমন জলকোষে ঢেউ লাগে তেমনি কোনো ইবাদতে মনোনিবেশ করলে ইবাদতকোষে ঢেউ লাগে। সালাতে সিয়াম, যাকাত, হজ্ব রয়েছে। সালাত বান্দার সাথে আল্লার সম্পর্ক যা হজ্বের নামান্তর, সালাতে শরীরের যাকাত দেয়া হয়ে যায়, সালাত একপ্রকার সিয়াম কারন সরিষা পরিমান খাবারও সালাতরত অবস্থায় খাওয়া যায় না। ইসলামে সালাত কেন? সালাতের উদ্দেশ্য মানুষকে মানুষমুখী করা, উগ্রতা থেকে মানসিকতাকে হেফাজত করা। কুরানে আছে তোমাদের উপর সিয়াম ফরজ করেছি, তোমাদের আগেও ফরজ করা হয়েছিল যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো। আলোচ্য বিষয় যেন তাকওয়া অর্জন করতে পারো। মানে সিয়ামের উদ্দেশ্য তাকওয়া অর্জন। তাকওয়া হল মানসিকতার স্তর। মানসিকতা মানুষমুখী হলে আইনের শাষনের প্রয়োজন নেই যেখানে প্রত্যেক মানুষ প্রত্যেক মানুষের কল্যানের চিন্তা করবে। আর
ফুলের গন্ধও কেন তাদের ডাকবে?
জনম দুঃখী প্রকৃতিকে দেখতে খুব ভালো লাগে। কারন মাইনাসে মাইনাসে প্লাস। আনন্দের কোনো ঘর বাড়ি নাই, দুঃখের বসত ভিটা আছে। কুকুরের কোনো দুঃখ আছে বলে আমার মনে হয় না। কুকুর প্রভুকে খুব তেল দিতে পারে। তেল খেয়েও প্রভু মাঝেমাঝে রাগের ভান করে, আসলে প্রভু কুকুরের প্রতি বিশেষ সন্তুষ্ট থাকে। আজকে হলের সামনে একটি নারী কুকুর ও একটি পুরুষ কুকুর দেখলাম। তারা বেশ আনন্দে আছে। বিবাহ ছাড়া তারা রাত্রিযাপন করতে পারে। তারা আনন্দে থাকবে না তো মানুষ আনন্দে থাকবে? বাবা কুকুরের কাজ কেবল বীর্য দান করা, মা কুকুরের কাজ কেবল একটি নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত বাচ্চাকে দেখাশোনা করা, তারপর প্রত্যেকের নিজস্ব জৈবিক জীবন। কুকুর দুটি অনেকক্ষন ধরে প্রেম খেলায় মত্ত। কুকুর ফেইসবুকের ইনবক্সে প্রেম করে না, তাদের প্রেম সরাসরি শারীরিক। কুকুর পরিবারে পরকীয়া প্রেম বলে
ব্যবসায়ী ও সমাজসেবক
আমার দুই বন্ধু। আমরা তিনজন হাঁটছি। তারা দুইজন কথা বলছে। একজন ব্যবসায়ী। একজন সমাজ সেবক। ব্যবসায়ীজন বলছে— আমার মাথায় একটা আইডিয়া আসছে। কী? এই শহরে ত অনেক রিক্সা আছে। হুম। রিক্সার পেছনে আমার কোম্পানির বিজ্ঞাপন দিয়ে দিলে সারা শহরে আমার বিজ্ঞাপন ছড়িয়ে যাবে। এত সহজে ও সস্তায় মূল্যবান বিজ্ঞাপন দেয়ার আর কোনো উপায় নেই। সমাজ সেবকজন এবার বলে— আমার মাথায় একটা আইডিয়া আসছে। কী? অনেকের ওড়না বাহনের চাকার সাথে প্যাঁচ খায়। তাই রিক্সার পেছনে লিখে দিতে পারি 'আপনার ওড়না চাকা থেকে সাবধানে রাখুন'। ভালো আইডিয়া। তারপর ব্যবসায়ীজন আবার বলে— আরও একটি কাজ করা যায়। কী? রিক্সার পেছনের অংশকে দুটি ভাগ করে একটি ভাগে আমার কোম্পানির বিজ্ঞাপন আরেকটি ভাগে ওড়নার কথাটা বললে কেমন হয়? ভালো হবে। ব্যবসাও হবে আবার সমাজ সেবাও হবে। আমি কান পেতে শুনছি আর হাসছি। কারন সমাজ সেবা যখন থেকে ব্যবসায়ীদের হাতে
হায়রে মধু
আমার বোতলে যে মধু ছিল আজকে তাকে পরিপূর্নভাবে শেষ করলাম। মধুটা জেনুইন। গাছ থেকে সরাসরি সংগ্রহ করা। আমার ভাই সংগ্রহ করে দিয়েছিলেন। প্রতিদিন মধুকে দেখতাম আর আস্তে আস্তে খেতাম। ইচ্ছা করলে তিন মাসেই খেয়ে শেষ করতে পারতাম। করি নাই। ভালো কিছু আস্তে আস্তে খাওয়া উত্তম। আবার নতুন মধু আসবে আমার ঘরে। এই মধু আরও ভালো হবে। কারন এইবার নিজেই মৌয়াল হবো, নিজেই মধু সংগ্রহ করবো। জীবনের জন্য যা কিছু উত্তম তা চয়েজ করতে ভাই কেন বাবার উপরও নির্ভরশীল হওয়া উচিত নয়। বোতলের মধু তোমাকে বিদায়! আমার মধু তোমাকে স্বাগতম!! আমি জানি আজ সকাল থেকে মৌমাছি উড়তে শুরু করবে ফুলে ফুলে। কেবল আমার জন্য। আমি মৌয়াল হবো— এই আনন্দে মৌমাছি উড়বে। আমি নিজে মৌপর্না থেকে মধু নিয়ে আসবো— এই আনন্দে মৌমাছি উড়বে। মৌমাছি আর আমার
পরিচয় মানে ধর্ম পরিচয় নয়
আজ মানে বৃহস্পতিবার। আজ মানে আর এক সপ্তাহ। আমার পাশে বসা মিষ্টি। আজ সে আমার পাশে বসা। গতকাল সে আমার পাশে ছিল না। আগামীকালও সে আমার পাশে থাকবে না। গতকাল যে আমার পাশে ছিল তাকে যেমন করে অনুভব করতে পারি আগামীকাল যে আমার পাশে থাকবে তাকে তেমন করে অনুভব করতে পারি না। গতকাল আর আগামীকালের মাঝে আমিকাল বরাবরই নিয়তি হয়ে যায়। নিয়তি ঠিক নয়— বলা যায় সময়নিষ্ঠুরতা। সময়নিষ্ঠুরতা যতবার উপলব্ধি করেছি ততবার নাজিম হিকমতের কয়েকটি লাইন আমাকে জাপটে ধরেছে ‘বাতাস আসে বাতাস যায় / চেড়ির একই ডাল একই ঝড়ে / দুইবার দোলে না।’ এক সপ্তাহ পর আমরা কেউ আর ক্লাসে বসবো না। ক্লাস হবে। জেলখানার মতো নিয়মকানুন ঠিকঠাক চলবে। এক সপ্তাহ পর আমরা কেউ আর জেলখানায় থাকবো না। অনেক কালো টিপ আর