ফুটফুটে বাচ্চা একটা— মানুষের বাচ্চা। ধরতে গ্যাছে ফুটফুটে মুরগির বাচ্চা। ফুটফুটে মানুষের বাচ্চাটি কোনোক্রমে ধরে ফেলেছে একটি মুরগির বাচ্চাকে— মুরগির ফুটফুটে কুসুম কুসুম বাচ্চাটি চেউ চেউ করে উঠলো— আহা! বিপদ! মহা বিপদ!! কোনো প্রকার সংশয় দ্বিধা না করে মুরগি আক্রমণ করে বসে মানুষের বাচ্চাটিকে— ঠোকর দিয়ে মানুষের বাচ্চার দুটো চোখ তুলে নিলো মুরগি। কষ্ট পাওয়ার কিচ্ছু নেই— এটি তার মুরগিবিক অধিকার। মানুষের বাচ্চা দিলো মনকাপানো চিৎকার। গোটা দশজন মানুষ নেমে আসলো বাচ্চার কাছে। গোটা দশজনের পায়ের চাপে মুরগি হারালো তার ফুটফুটে বাচ্চা। সব ফুটফুটে মুরগির বাচ্চা মানুষের পায়ের চাপে পিষ্ট হয়ে গেলো— কষ্ট পাওয়ার কিচ্ছু নেই— এটাই তাদের মানবিক অধিকার! মানুষের বাচ্চাটি যে ফুটফুটে মুরগির বাচ্চাটিকে ধরতে গ্যাছে তাতেও আমি কোনো সমস্যা দেখছি না— এটি তার বাচ্চাবিক অধিকার! সমস্যা কোথায় জানেন? বাচ্চাবিক অধিকার! বাচ্চা যখন
বৈঠক ঘর
এক এবং একাকার
আমি নদীপাড়ের ছেলে। পানসে নদী— মেঘনার সরাসরি সন্তান। মেঘনার মন খারাপ থাকলে যে খুব প্রথমে ফিল করতে পারে সে এই পানসে। মেঘনার আনন্দ যার মনে প্রথম জোয়ার তুলে সে এই পানসে নদী। বর্ষাকালে পানসে নদী আর মেঘনাকে আলাদা করা যায় না— তারা এক এবং একেবারে একাকার। নদী পাড়ের মানুষ বিসর্জনের অর্জন খুব করে উপভোগ করতে পারে— দেখতে জানে বৃষ্টি কত সুন্দর করে নদীর জল হয়ে যায়। আমার চোখের জল যখন তোমার মনে গিয়ে নদী হয়ে যাবে তখন তোমাকে আমার শৈশব যৌবনের বেদনা ও প্রার্থনার পানসে নদী— পানসে নদীটা তোমার নামে লিখে দেবো।
কথোপকথন [ ৫ ]
অর্জুন— ব্যক্তি পাপ করতে না চাইলেও সে পাপকর্ম করতে বাধ্য হয় কি করে? কে তাকে দিয়ে পাপকর্ম করায়? কৃষ্ণ— ব্যক্তিকে পাপকর্ম করায় তার নিহিত স্বার্থ, তার মোহ। স্বার্থহীন কর্মে কোনো পাপ থাকেনা। স্বার্থহীন কর্ম সর্বদা সমাজ-কল্যানকারী হয়৷ অর্জুন— তাই? কৃষ্ণ— হুম। তবে কর্মে যখন স্বার্থমোহ জড়িয়ে যায়, তখন ব্যক্তিকে রাগ-দুঃখ, কষ্ট, হতাশা, জ্বালা, যন্ত্রণা মুহূর্তে মুহুর্তে কুরে-কুরে খায়৷ অর্জুন— তাহলে আপনি রাধার সাথে কোনো অন্যায় করেননি? কৃষ্ণ— পাল্লাগ্রাম বস্তুর ওজন করে। পাল্লাগ্রামকে ওজন করে কে? অর্জুন— কে? কৃষ্ণ— পাল্লাগ্রাম ওজন হয়েই আসে। অর্জুন— আচ্ছা, বুঝতে পারলাম। কথোপকথন [ ৪ ]
মহান নেতা
মহান নেতা। এক মহান নেতা দুপুরের খাবার খেতে বসে— ভাত আর দুটি ডিম। আর কোনো তরকারি রান্না হয়নি সেদিন— এমন সময় দুজন মেহমান আসে— তারাও ক্ষুধার্ত। মহান নেতা তাদের জন্যে দুটি বাসনে ভাত পরিবেশন করে। তরকারি তো নাই! মহান নেতা নিজের দুটি ডিম দুজনকে দিয়ে দেন— মহান নেতার থালায় কেবল সাদা ভাত— একজন মেহমান নিজের আস্ত ডিম থেকে অর্ধেকটা নেতাকে দেন, আরেকজন মেহমান দেন অর্ধেকটা ডিম। ফলে নেতার হয়ে যায় একটা ডিম, আর মেহমানরা খাবার শেষ করে অর্ধেকটা ডিম দিয়ে। ~প্রিয় নেতা ভাই, খাওয়ার লোভটা ছেড়ে দেন— খাওয়ানোর চিন্তা করুন— মৃত্যুর দিন পর্যন্ত জনগণ আপনাকে উপোস রাখবে না— জনগণ উপোস থাকলে আপনাকে না খেয়ে মরতে হবে
আফালের মাছ [ ১২ ]
আমাদের হরতালের দিন কেউ রাস্তায় নামেনি, ঠিকই একটি পাখি রাস্তায় নেমেছিল এবং সবদিক কম্পিত করে বলেছিল ‘হরতাল মানি না’। দুঃখের বিষয় আমরা কেউ পাখির ভাষা বুঝি না। চকচক করলে সোনা হয় না— স্বর্ন চকচকই করে। রাজহাঁস জলের মধ্যে থেকে দুধকে আলাদা করে নিতে জানে— মেয়েরাও ভীড়ের মধ্যে থেকে তার নিজের পুরুষকে আলাদা করে নিতে জানে— তবে রাজহাঁস দুধকে আলাদা করে — মেয়েরা প্রায়ই আলাদা করে জল— ফলে বিয়ের কয়েকদিন পর বালিশ ভেজে যায় জলে। বিয়ে এক উদ্ভট জুয়াখেলা— এই খেলায় দুইপাশে সমান উত্তেজনা— উত্তেজনার উত্তম পরাজয়। মাটির গুনাগুনের উপর নির্ভর করে ফসলের গুনাগুন—ভালো বীজ ভালো মাটিতে শেকড় ছড়ালে ভালো ফসল— কেবল মাটির উপরে ভালো কাজ করলেই মাটির নিচে ভালো থাকা যায় না— মাটিরও রয়েছে কিছু প্রয়োজনীয় জিজ্ঞাসাবাদ। কারো সাথে
কথোপকথন [ ৪ ]
— একটা কথা বলতে চাই, আপনি মাইন্ড করবেন বাসুদেব? — আগে বলো, তারপর মাইন্ড করি। — হা হা হা, বাসুদেব আপনি রসিকতার রাজা। — আপনাকে অনেকে লম্পট, নারীলিপ্সুক বলে। — হা হা হা, যারা বলে অতিসত্য কথা বলে, তবে সত্য বলে না। — কেমন বিষয়টা বাসুদেব, ঠিক মাথার উপর দিয়ে গেলো? — অর্জুন গাছের ছাল থাকে না, জানো তুমি? — জ্বি বাসুদেব, হরিণের সুস্বাদু মাংস যেমন হরিণের শত্রু তেমনি অর্জুন গাছের ছালের অধিক উপকারিবোধ তাকে গাছের সাথে থাকতে দেয় না। — যে নারী আমাকে অধিক ভালোবাসে সেই আমার উপর কলঙ্কের অলঙ্কার লেপন করে যাতে শেষপর্যন্ত আমার শরীরে ছাল থাকে। — শোনো অর্জুন, তোমাকে একটা কথা বলি। — বলুন বাসুদেব, আমার মনোযোগ আপনার দাসত্ব মেনে নিতে প্রস্তুত। — জোলেখা ইউসুফকে জেলে দিয়েছিল, অনেকে অনেক কারন বলে থাকে, মূল কারন আরেকটা—
কথোপকথন [ ৩ ]
অর্জুন— বাসুদেব, ইদানিং ব্রেইন কাজ করে কম,স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাচ্ছে মনে হচ্ছে। বাসুদেব— রাতে ঘুমানোর ঠিক আগ মুহূর্তে এক চামচ মধু খাবে। প্রায় এক মাস বয়ে গেলো— অনেকগুলো রাত ঢুকে গেলো দিনের ভেতর— অনেকগুলো দিন ঢুকে গেলো রাতের ভেতর— জন্ম নিলো হাজারো ঘটনা হাজারো লেনদেন। অর্জুন— বাসুদেব, আমার ব্রেইনের অবস্থা তো আগের চেয়েও খারাপ হচ্ছে বাসুদেব— আচ্ছা অর্জুন— একটা পথ দেখান বাসুদেব বাসুদেব— মধু খেয়েছো নিয়মিত? অর্জুন— মধুতে ভেজাল, তাই খেজুর গুড় খেয়েছি, মধুও মিডা খেজুরের গুড়ও মিডা। বাসুদেব— হা হা হা বাসুদেব— বাবুরে, বিষও তিতা, চিরতার জলও তিতা, তুমি নিশ্চয়ই চিরতার অভাবে বিষের প্রয়োজন অনুভব করবে না!? অর্জুন— ভুল হয়েছে বাসুদেব, ব্রেইন ইদানিং একটু কম কাজ করছে তো কথোপকথন [ ২ ]
আফালের মাছ [ ১১ ]
মানুষ ‘শয়তান’ বলে গালি দিতে দিতে শয়তানের দায়িত্ব কমিয়ে দিচ্ছে আজ বৃষ্টি হলে কাল থেকে জলের ইহকাল শুরু, ঘুম এক পরকালের নাম অনেকের কাছে প্রেমিকা শব্দের বাংলা অনুবাদ রোবট যাকে রিমোট দিয়ে নিয়ন্ত্রন করা যায়, স্বামী শব্দের বাংলা অনুবাদ রাখাল যার ইশারা সীমানায় প্রত্যেকটি পশু রাব্বাইক রাব্বাইক বলতে বাধ্য গোবরের পদ্মফুল ছদ্মবেশে গোবরই থাকে রেজা ভাই একা চলে, সাথে নিয়ে রব, কখনো তাকে সাথে অনিন্দ্য রফরফ সমস্যা সমুদ্র হমান, সমাধানের উপায় যেনো ডিঙি নৌকা, তবু সমস্যা সমাধান করতে হবে এক এক করে, একেবারে নয় অঙ্গ ব্যবহার না করলে অঙ্গহানি ঘটে কালো কোনো রঙ নয়— সব রঙকে সে ধারন করে— আল্লা কোনো রঙ নয়— সব রঙকে তিনি ধারণ করেন পরিস্থিতি পালটাই কিন্তু দরজা খোলার কাজটি দরজাতেই থেকে যায় টাকাহীনরে হঠাৎ
মাটি ক্যাফের ডার্টবোর্ড
১৮৬০ সালের কাছাকাছি সময়ে ডার্টবোর্ড ইংল্যান্ডের সোনালি রোদে প্রথম কোনো এক শাদা চামড়ার লোক খেলেছিলো বলে আমরা নিষাদরা অনুমান করে থাকি। বর্তমান আয়ারল্যান্ডসহ পৃথিবীর অনেক দেশে বেশ জনপ্রিয় এই নিশানাপ্রধান খেলাটি। এই খেলাটি হাত, চোখ এবং ব্রেইনের খেলা। ডার্টবোর্ড থেকে ব্যক্তির অবস্থান দূরত্ব ৮ ফোট ৯ ইঞ্চি— ভূমি থেকে বোর্ডটির উচ্চতা ৫ ফোড ৮ ইঞ্চি বা ১.৭২ মিটার। তার কিন্তু অনেক ডাকনাম আছে— throwers, arrows, tungsten, dartsmith। ওয়ার্ল্ড ডার্ট ফেডারেশন (WDF) ১৯৭৪ সালে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ইন্ডিয়া-পাকিস্তান এই ফেডারেশনের সদস্য পদ লাভ করলেও বাংলাদেশ এখনো পদ্দা সেতুতে ছবি তুলা নিয়ে ব্যস্ত। PDC World Cup of dart প্রতিষ্ঠা লাভ করে ২০১০ সালে জার্মানিতে। ডার্টবোডের মূলবিন্দু সই করতে পারলে জিত আপনার এবং আপনার নাম্বার হবে ১০০— মূলবিন্দুর শরীর ঘেঁষে রয়েছে স্পর্শবিন্দু এবং তাকে সই করতে
বিশ্বাস
পানসে নদীতে এখন জলের যৌবন। নৌকা থাকে ঘাটে সারি সারি। রাতে নৌকাড্ডা বেশ জমে উঠে। চাচ্ছি আজকে আমাদের আড্ডায় কুকুরটা অংশগ্রহণ করুক। বাড়ি গেলে যতক্ষণ ঘরের বাইরে থাকি ততক্ষণ সে আমাদের সাথেই থাকে। নৌকায় উঠা তার জন্যে টাফ। তাকে কেউ নৌকায় উঠা শেখায়নি। অথবা তাকে নৌকায় উঠাবে এমন বিশ্বাসযোগ্য লোক কুকুরটা পাইনি। আমি ভালো করেই জানি কুকুরটা আমাকে খুব বিশ্বাস করে। কারন আমি তাকে মিষ্টি খেতে দিয়েছি সে খেয়েছে, আমি তাকে আম খেতে দিয়েছি সে খেয়েছে, এমনকি আমি তাকে পেয়ারা খেতে দিয়েছি সে খেয়েছে। আজকে তাকে নৌকায় উঠাবো। খান ভাই আমার সাথে চ্যালেঞ্জ করেছে যে আমি কুকুরটাকে নৌকায় উঠাতে পারবো না। মুচকি হাসি ☺ দিয়ে চেষ্টা করতে থাকি। কুকুরটা যখন নৌকায় উঠে যাচ্ছে এমন সময় খান ভাই একটা বাশ কুকুরটার দিকে ছুড়ে