এক কবি ছিলেন। আমাদের মাঝে ছিলেন তিনি। এখন আর নেই। না না। মারা যাননি। তিনি এখনো বেঁচে আছেন। ছোট কালে তাকে দেখতাম। ভাবই আলাদা। কবি হতে গেলে আলাদা একটা ভাব লাগে। তাকে দেখে এমনই মনে হতো আমাদের। তিনি রাস্তা দিয়ে হেঁটে গেলে তার ভাবের গন্ধ নাকে এসে লাগত। ভুল করে যদি তিনি কথা বলতো তাহলে ত...! তিনি যে ভাষায় কথা বলতেন সেই ভাষা বাংলার মতো তবে বাংলা ভাষা মানে আমরা যে ভাষাকে বাংলা ভাষা বলি ঠিক সেই ভাষা ছিল না। এর নাম নাকি কাব্য ভাষা। তিনি টয়লেট করতেন কাব্য ভাষায়, তিনি বাজার করতেন কাব্য ভাষায়, তিনি ক্রিকেট খেলতেন কাব্য ভাষায়, হয়তো ছক্কাও মারতেন কাব্য ভাষায়। কবি বলে কথা। আমরা যারা মুনির পুত কামলা তাকে কেবল দেখতাম, আর ভাবতাম কবিরা বুঝি অন্য
বৈঠক ঘর
মানুষ ভুল করলেও মানুষ
ঠিকানা। বাসের নাম। লোকাল বাস। জাতীয় মানের লোকাল। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে থামে না। হাতইশারায় থামে। থামলো। আমি আর সোহেল ভাই বাসে উঠলাম। হিমউৎসবের হাত ধরে জাহাঙ্গীরনগর আসা। উৎসবটি বেশ মুগ্ধকর। প্রথমবারের মতো ওয়াজের মতো করে গান শুনলাম। আড়াইসিধার শীতকাল মানে ওয়াজ-মাহফিল। ওয়াজ শুনে শুনে আড়াইসিধার প্রত্যেকটি শিশু বড় হতে থাকে। আসমানের ওয়াজ। আসমান থেকে হুজুর ধীরে ধীরে জমিনে নেমে আসেন। সবার কন্ঠে সুবহানাল্লাহ। সিট খালি নেই। পেছনের সিট খালি। ভাই পেছনের সিটে বসে গেলেন। আমি দরজায় দাঁড়িয়ে দৌঁড়ানো দৃশ্য দেখছি। দরজার পাশের সিটটি খালি হলো। বসলাম। জানালার পাশে বসতে চাইলাম। লোকটি বসে গেলেন। জানালার পাশে যেন বসতে পারি লোকটিকে বললাম। লোকটি বললেন ‘না’। কিছুক্ষন চুপ করে থাকি। তারপর... তাকে আস্তে করে বললাম বমি কী আপনার উপরে করবো, না জানালা দিয়ে সোজা বাইরে ফেলে দিবো!?
সূর্য আর রাতের সম্পর্ক
জুতার ব্যাপারে আমি খুব চোজি। বেল্টযুক্ত জুতা আমার খুব পছন্দের। কারণ আমি চাই জুতা আমাকে আগলে রাখুক। কারণ কোনো কিছুই আমি রাখতে পারি না যদি আমার সাথে না থাকে। আমার প্রিয় বেল্টযুক্ত জুতাটি বিগত দিনের প্রিয় কিছু মুহুর্মুহু সময়ের সাথী। এখান থেকে সেখান, সেখান থেকে এখান, নদী থেকে জল, জল থেকে পাহাড়, অনেক অনেক জায়গায় ভ্রমণ, পরিভ্রণের একমাত্র নির্লস পরিষেবা প্রদানকারী আমার বেল্টযুক্ত জুতাটি। ইদানীং জুতাটি আমাকে রক্তাক্ত করছে। কষ্ট হচ্ছে খুব। রক্ত ঝরছে।লাল মাংস উপমার মতো তাকিয়ে আছে। হাঁটতে পারছি না। জিয়া হল থেকে কলা ভবন রিক্সা দিয়ে যাই। ভাবছি কতটুকু আর রক্তাক্ত করবে? একসময় আমার পা ঠিকই মানিয়ে নিবে। আমার কষ্ট আমার সহ্য হলেও আমার বন্ধুদের সহ্য হয় না। তারা আমাকে কষ্ট থেকে মুক্ত রাখতে চায়। এ মা, আপনি এখনি জুতা পরিবর্তন
জিরো টু ইনফিনিটি
প্রিয় ঋতু। প্রিয় ঋতু নামে আমাদেরকে রচনা লিখতে হতো। ক্লাস ফাইভ থেকে ইন্টারমিডিয়েট পর্যন্ত এই রচনা লেখার রীতি চালু ছিল। আমার চারপাশের সবাই প্রিয় ঋতু রচনা মুখস্থ করতো। কিন্তু আমি কোনোদিন বাংলা রচনা মুখস্থ করে পরীক্ষার খাতায় লিখিনি। ছোট কাল থেকে কেন যেন বানাইয়া লিখতে ভালো লাগে। বানাইয়া লেখা মানে নিজের মতো করে লেখা। ফলে প্রিয় ঋতু রচনা লিখতে হলে আমি একেক পরীক্ষায় একেক উত্তর লিখতাম। মজা করে লিখতাম। প্রিয় ঋতুর দৃশ্যগুলো চোখের সামনে টপ টপ করে ভাসত আর আমি লিখতাম। এক কথায় বললে আমার প্রিয় ঋতু শীতকাল। কারন শীতকালের সাথে কাজের একটি শক্তিশালী সম্পর্ক রয়েছে, মানুষ প্রচুর কাজ করতে পারে এবং প্রচুর আরাম করতে পারে। তাছাড়া শীতকালের কুয়াশার মধ্যে জোছনার মতো মিহি মিহি একটা বিষয় রয়েছে। রচনা লেখার আবার একটি বিশেষ পদ্ধতি ছিল।
ভৈরব নদীর মতো একজন স্মৃতি
একটি স্মৃতির কথা বলা যেতেই পারে। স্মৃতি আসলে মাছের মতো যতোক্ষণ মনজলে ডুবে থাকে ততোক্ষণ তরতাজা থাকে। স্মৃতি কিন্তু একটি নামও হতে পারে। স্মৃতি কখনো ছেলেদের নাম হবে না। নামের বৈষম্য পৃথিবীতে আমার কাছে বৈষম্যের মা। শিশুকাল থেকেই একজন মানুষ দুটি পরিচয়ে বড়ো হতে থাকে -- ছেলে অথবা মেয়ে, মানুষ ব্যতিত অন্য কোনো প্রাণির মধ্যে এই বিষয়টি এতো তীব্রভাবে পরিচয়প্লেট হিসেবে অবস্থান করে না। মাঝেমধ্যে দেখি বিড়ালের বাচ্চা জন্ম হলে ওলা বিলাই দুই একটি বাচ্চাকে গুম করে ফেলতে। পরে জানতে পারি গুম হওয়া বাচ্চারা বেটা বিলাই ছিলো। বেটা বিলাই বেটা বিলাইকে সহ্য করতে পারে না। ওলা বিলাই বাচ্চাদের গুম করে নিয়ে প্রথমে গলায় আঘাত করে, পরে ইন্দুর যেভাবে খায় সেভাবে সে বেটা বেলাইকে খাইতে থাকে। ওলা বিলাই কিন্তু মেয়ে বিলাই বাচ্চাকে
ওয়ান টু ওয়ান
থাকি আমি জিয়া হলে
থাকি জিয়া হলে। জিয়া হলে থাকি বলে আপনারা ভাববেন না এখানে জিয়া সৈনিকদের বাড়িঘর। বাংলাদেশ তো। তাই পুরাই উল্টা। জিয়া হলে বঙ্গবন্ধু সৈনিকের একচেটিয়া আস্তানা। মজা পাবেন একটি কথা শুনলে-- আমাদের হলের যিনি প্রভোস্ট তার নামও জিয়া। আমার রুমের পাশেই মহাসড়ক। মহাসড়কে চব্বিশ ঘন্টা গাড়ি চলে! আর আমাদের মাথার ভেতর চলতে থাকে পু পা বে বো। গরুর নতুন শিং ওঠলে যেমন সবারে গুতা দিতে চায় তেমনি বাংলাদেশী ড্রাইভাররা সারাজীবন শিংধারী নতুন গরু থাকিয়া যায়। সাবেক বছর এমন দিনে আমার ঠান্ডা লাগে। আমার স্মৃতিশক্তি বলে নাই, বলিয়াছে ফেইসবুকের on this day appsটি। ইতিহাসের কী মহান কুদরত এমন দিনে আবারও আমার শরীর ঠান্ডার কবলে পড়িল। সামনে বিশাল কাজ। শরীরে ঠান্ডা থাকিলে হইবে না। তাই ঠান্ডার কৃষ্ণলীলা দূর করিবার মিশন হাতে নিলাম। এক ডাক্তার ভাইকে ফোন
গতিতে নদী স্রোতে সাগর
আপনি যে কাজ করেন সেই কাজের সার্টিফিকেট আশা করা বোকামি। সার্টিফিকেট দেয়া নেয়া প্রতিষ্ঠানের কাজ। প্রতিষ্ঠান সব সময় তার বানানো ফর্মায় আপনাকে মূল্যায়ন করবে। কখনো আপনার মতো করে প্রতিষ্ঠান চিন্তা করতে পারবে না। এখন আপনি নিজেই একটি প্রতিষ্ঠান হতে চান নাকি প্রতিষ্ঠানের পন্য হতে চান বিষয়টি একান্ত আপনার। আমার পরিচিত এক ভাই এখন ভালো মানের ব্যবসায়ী। তার ব্যবসায়ী হওয়ার কথা ছিল না। কথা ছিল কৃষক হওয়ার। এখন সে কৃষি কাজও দেখাশোনা করে আবার ব্যবসাও করে। কিন্তু তার ব্যবসার শুরুটা খুব মজার। পুঁজি বায়ান্ন টাকা। মাত্র বায়ান্ন টাকা! একদিন বায়ান্ন টাকা দিয়ে গ্রামীণ ফোনের একটি মোবাইল কার্ড কিনে নিয়ে আসে নিজে ব্যবহারের জন্য। পাশের বাড়ির যুবক কার্ড কিনতে যাবে। যেহেতু গ্রাম এলাকা এবং রাত সেহেতু আশেপাশে মোবাইল রিচার্জ কার্ড পাওয়া জটিল। খুবই জটিল। রাস্তায় লোকটির
কনডম কেন? কোথায়?
কনডমকে গ্রাম এলাকায় বলে ফুটকা। বাচ্চা দোকানে যায় এবং দোকানদারের কাছে ফুটকা চায়। দোকানদার ফুটকা দেয় এবং হাসে। বাচ্চা ফুটকায় বাতাস করে বেলুন বানায়, বেলুন দিয়ে আনন্দ খেলে। রাতে বাচ্চার বাবা দোকানে যায় এবং এইদিক সেইদিক ভালো করে দেখে নিয়ে লজ্জাচোখে দোকানদারের কাছে ফুটকা চায়। দোকানদার ফুটকা দেয় এবং হাসে। বাচ্চার বাবা ফুটকা থেকে বাতাস বের করে ইনজেকশন বানায়, ইনজেকশন দিয়ে আনন্দ খেলে। ## এই গল্প থেকে আমরা শিখতে পারলাম বাবারা যে জিনিস থেকে বাতাস বের করে, বাচ্চারা সেই জিনিসে বাতাস ভর্তি করে।
অভাবে নয়, স্বভাবে
তাকে রক্ষা করবে তার আল্লা। বিষয়টা খুব মজার। কিন্তু সে জানে না আল্লা রক্ষা করা ধবংস করার দায়িত্বে নাই। দুনিয়া এক সিস্টেমের নাম। সিস্টেমে আছো তো এমনিতেই সব রক্ষা পাবে। আমি তাকে ভয় দেখাতে চাই নি। সে ভয় পেয়েছে। তার ভয় পাওয়ার কারনও সিস্টেম। চাচা, এই রুমটাকে কী নামে ডাকে? সে ইশারা দিল লেখাটির দিকে। একটি লেখা যেখানে বুলেট করে লেখা Guard। আপনিই এই ট্রেন চালান? হুম। কীভাবে? এই প্রশিক্ষন নিয়েই আমি এখানে বসেছি। সরকার তো আর এমনিতেই আমাকে পচাঁত্তুর হাজার টাকা মাস শেষে দিয়ে দেয় না। আমিও বললাম 'হুম'। তারপর সে ওযু করতে গেল। সালাত কায়েম করবে। খুব আস্তে আস্তে সালাত কায়েম করতে থাকে সে। সালাত শেষ। এখন প্রভুর কাছে হাত তুলে সে। এই হাত তুলল, এই হাত নামাল। খুব অল্প সময়ের ব্যাপার। ভৈরব স্টেশন থেকে আমি দাঁড়িয়ে আছি।