জাজিরা। তারপর জিঞ্জিরা। তারপর নারকেল জিঞ্জিরা। তারপর সেন্টমার্টিন। তারপর দারুচিনিদ্বীপ। প্রবালদ্বীপ তারপর। কৌতুক। একটা কৌতুক বলা যেতে পারে। ডাক্তার সাহেব। জ্বি বলুন। আমার বউ আমাকে সন্তুষ্ট করতে পারছে না! কী বলেন!? গ্রামের সব পুরুষ আপনার বউ দ্বারা সন্তুষ্ট, আর আপনি সন্তুষ্ট হতে পারছেন না!? না না তা হতে পারে না, আপনি শীঘ্রই আপনার স্বাস্থ্যের পরীক্ষা করান। মাছের বারবিকিউ। কোরাল মাছের বারবিকিউ খাচ্ছি আর ডাক্তার সাহেবের কাছ থেকে কৌতুক শুনছি। তিনি মাঝে মাঝে এমন কৌতুক করেন। বলা হয়ে থাকে তিনি নারকেল জিঞ্জিরার একমাত্র ডাক্তার। এটি একসঙ্গে আশার এবং হতাশার কথা। কারন তো অবশ্যই আছে। তবে সব কারন সব সময় ওপেন করার প্রাসঙ্গিকতা রাখে না। মাছের বারবিকিউ জীবনে প্রথম খেলাম। ডাক্তার সাহেবকে ধন্যবাদ দেয়া দরকার। না। ধন্যবাদ দিলাম না। সেন্টমার্টিনে আমার প্রথম পদক্ষেপ এই আশ্বিন মাসে। ১৪২৭। আমাদের
বসত বাড়ি
যদি সুন্দর একখান মুখ পাইতাম
যদি সুন্দর একখান মুখ পাইতাম যদি নতুন একখান মুখ পাইতাম মইশখালীর পানের খিলি তারে বানাই খাওইতাম। এই গানটির সুরকার ও গীতিকার এম এন আখতার। তিনি জীবনে বিচিত্র ধরনের গান রচনা করেছেন। তার গানের সংখ্যা পাচ হাজারের অধিক। তার একনিষ্ঠ শিষ্য শেফালী ঘোষ। শেফালী ঘোষ চট্রগ্রামের গানকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে তুলে ধরতে সক্ষম হয়েছেন। শেফালী ঘোষের কন্ঠে প্রথম মহেশখালীর নামটি শুনি। অবশেষে মহেশখালী আসি। সবাই মহেশখালী এসে স্পটের দিকে দৌড়াতে আরম্ভ করে। মহেশখালীর দর্শনীয় স্থান আদিনাথ মন্দির, বৌদ্ধ মন্দির, শুটকি মহাল, হাসের চর ইত্যাদি ইত্যাদি। পৃথিবীর যেখানেই যাই সেখানে যাওয়ার পর আমি নিজে একটি জায়গা আবিষ্কার করি যেটা আমার দর্শনীয় স্থান এবং যেখানে বসে ঘন্টার পর ঘন্টা আড্ডা দিতে থাকি। পাবলিক বাসের টুরিস্টদের মতো স্পটের দিকে ঘামেটামে দৌড়ানো পাবলিক এমরানুর রেজা নহে। লোকাল ঘাট। লোকাল ঘাটে
একটি চুরির ঘটনা
দত্ত। মাইকেল। মাইকেল আর দত্ত এক নয়। তবুও তাঁর নাম মাইকেল মধুসূদন দত্ত। মাইকেল মধুসূদন দত্ত কেনো বলেন বঙ্গে বিবিধ রতন রয়েছে তা যশোরে না আসলে বুঝতে পারতাম না। পৃথিবীর মধ্যে বাংলাদেশের গ্রাম অবশ্যই আলোচনার মতো সৌন্দর্যের দাবিদার। বাংলার গ্রাম শ্যামলিমা-- শ্যামল বর্নের গন্ধ জোয়ার। ঝিকরগাছা থেকে যাবো রাজগঞ্জ। কপোতাক্ষ নদের ব্রিজের গোড়া থেকে বাইকে ওঠলাম। বাইক যিনি চালাচ্ছেন তার নাম আমিন। তার ছেলের নাম আসলাম ( বাংলাদেশের মানুষের নামের অর্থ জানলে আরবি অভিধানের অর্ধেক মুখস্থ হয়ে যাবে)। আসলাম মাদ্রাসায় পড়ে। ঝিকরগাছা ভিক্ষুকমুক্ত এলাকা। সাইনবোর্ডে লেখা। বাস্তবতা কেমন তা অনুমান করতে পারি না। কারন বাংলাদেশের অনেক কিছু অনুমান করা সম্ভব নয়। কারন বাংলাদেশ আর আগের বাংলাদেশ নেই। বাংলাদেশে এখন দৃশ্যমান মুখের চেয়ে অদৃশ্য মুখ অনেক বেশি শক্তিশালী। ঝিকরগাছা থেকে রাজগঞ্জ প্রায় আঠার কিলোমিটার
আমাদের সিন্দাবাদ আমাদের নদী জল জোছনা
সিন্দাবাদ টুর। আমাদের সিন্দাবাদ টুরের কিছু বৈশিষ্ট্য রয়েছে। আলাদা বৈশিষ্ট্য। সচারাচর আমরা যে টুর দিয়ে থাকি সিন্দাবাদ টুর তার থেকে আলাদা। সিন্দাবাদ নামটি নেয়া হয়েছে আরব্য রজনীর গল্পাংশ আলিফ লায়লা থেকে। আলিফ লায়লার সিন্দাবাদ খুবই আল্লাভক্ত মানুষ। আল্লা তার কথা শুনে। সিন্দাবাদ নাবিক। মূলত সে আল্লার প্রেরিত একজন মহাপুরুষ। এই মহাপুরুষ পৃথিবীর অপরাধচক্র দমন করার জন্যে সাগর টু সাগর কাফেলা নিয়ে টুর করে থাকে। আমাদের সময়ের, আমাদের শৈশবের নায়ক আলিফ লায়লার সিন্দাবাদ। এই সিন্দাবাদ ভ্রমনে আমরা আমাদের শৈশবের নায়ক সিন্দাবাদের বিভিন্ন দিক বর্তমান সামাজিক বিশ্লেষণে আলোচনা করে থাকি। আমাদের সিন্দাবাদ টুর শুরু হয় দুই হাজার উনিশ সালের কোরবানির ইদের দ্বিতীয় দিন থেকে নাছিরনগরের চৈয়ারকুড়ি গ্রাম থেকে। চৈয়ারকুড়ি গ্রামটি মহাগঙা আর সিংরা নদীর আদুরে লালিত। এটি মূলত হাওড় গ্রাম। বর্ষাকালে এই গ্রামের
স্বাধীনতা শব্দটি আমাদের
পঁচিশ মার্চ কালো রাত হিসাবে ছোট কাল থেকে শুনে আসছি। রাত কালো হয় কীভাবে জানি না। অন্ধকার আর কালো এক কথা না। অনেক সময় দেখি মুখের আগে অনেকে কালো বিশেষন হিসাবে ব্যবহার করেন। কালো মুখ। প্রভুরা শাদা কালারের। তাইতো প্রভুদের সরাসরি চেলা বা ভাব চেলারা কালোকে নেগেটিভ অর্থে ব্যবহার করে থাকেন। পঁচিশ মার্চ রাতে ঢাকার কয়েকটি গুরুত্বপূর্ন অংশে আক্রমন চালায় পূর্ব পাকিস্থানের রূহানি ভাই পশ্চিম পাকিস্থানের কতিপয় শাষকগোষ্ঠী। আবার বলছি কতিপয় শাষকগোষ্ঠী। যে যায় লঙ্কায় সে হয় রাবন মানে শাষকগোষ্ঠী কখনো জনগনের কথা শতভাগ মাথায় রাখতে পারে না অথবা পারতে চায় না। কিন্তু আমরা শুনেছিলাম সেই স্মরনীয় বক্তব্য "আমি প্রধানমন্ত্রীত্ব চাই না, আমি এ দেশের মানুষের মুক্তি চাই"। এ দেশের মানুষের মুক্তি বলতে অবশ্যই অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক মুক্তির খোলা বাতায়নকে বুঝায়। মুক্তি কী
চন্দ্রনাথ মন্দিরের কথা
চন্দ্রনাথ মন্দিরে ওঠার সময় টের পাইনি তা ভূমি থেকে শত শত ফুট উপরে। উপর থেকে যখন নিচের দিকে তাকাই তখন টের পাই অনেক উপরে চলে আসলাম আমরা। আসলে লক্ষ্য যখন অত্যন্ত দৃঢ় হয় তখন দূরত্ব কোনো ফ্যাক্ট না। মন্দিরের দিকে যাত্রা শুরুর বিশ মিনিট পর আমার মনে হয়েছিল চলে আসলাম। কিন্তু না মন্দির বহুত দূর হে। যাত্রা শুরুর চার ঘন্টা পর চন্দ্রনাথ মন্দিরে পৌঁছানো গেলো। শক্তিপীঠের চেয়ে পাহাড়ের গতরে সজাগ গাছপালা ফুসফুসের অক্সিজেনের জন্য বেশ কার্যকরী টনিক অন্তত আমার কাছে। গাছের ভেতর দিয়ে পাহাড়, পাহাড়ের হৃদয় দিয়ে গাছ, ক্লান্তি আবার প্রশান্তি, প্রশান্তি আবার ক্লান্তি এমন বিষয় পাহাড়রমনেই সম্ভব। পাহাড় থেকে ভূমিতে নামার সময় পায়ের নিজয়েন্ট থেকে বৃদ্ধা আঙ্গুল পর্যন্ত চিনচিন ব্যথাযুক্ত একধরনের টান অনুভব করতে হয়। মধ্যাকর্ষন শক্তি তখন পায়ে চলে আসে, মাথা
সীমান্ত হাট
মধুগ্রাম। ফেনী জেলার একটি গ্রাম। মধুগ্রামের পাশেই প্রতি মঙ্গলবার সীমান্তহাট বসে। বাংলাদেশ তেল সাবান থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের খাবারসামগ্রী কিনে। ভারত কিনে মাছ। বাংলাদেশের খাবারসামগ্রীর উপর ভারতের আগ্রহ নেই বললেই চলে। বর্ডার হাটের গেইট দিয়ে ইচ্ছা করলেই বাংলাদেশে ঢুকতে পারে ভারত। ইউনুস বর্ডার হাটে চা বিক্রি করে। ভারতের শ্রীনগর তার বাড়ি। শ্রীনগর বর্ডার হাট তথা ছাগলনাইয়ার পাশের গ্রাম। ছাগলনাইয়া বাংলাদেশে, শ্রীনগর ভারতে। ইউনুস প্রায় পাসপোর্ট ভিসা ছাড়া তার মামার বাড়ি ময়মনসিংহ বেড়াতে আসে। বাংলাদেশ কিন্তু ইচ্ছা করলেই বর্ডার হাটের গেইট দিয়ে ঢুকতে পারবে না ভারতে। কারন নিরাপত্তা ব্যবস্থা যথেষ্ট আইনপন্থী। এই সীমান্তহাটটি আবার মিলন মেলা হিসাবেও কাজ করে। এপার ওপার আত্মীয়দের মিলন মেলা। কাঁটাতার দিয়ে স্পষ্ট চলমান মানুষ দেখা যাচ্ছিল রাস্তায়-- সাইকেল চালাচ্ছে। আর এই পাশ তথা বাংলাদেশের চলমান রাস্তায় চলছে বাইক।
জাঙালিয়া গ্রাম দেখে এলাম
জাঙালিয়া নামে এক গ্রামে গেলাম। গ্রামটি যেন মমতা দিয়ে ঘেরা, গ্রামের সারা শরীরে সবুজের লোম। হাড়িধোয়া নামে হ্রদের মতো একটি নদী গ্রামীণ পরিবেশে জলভেজা আবেদনকে পরিপূর্ণ করে রেখেছে। ধানের সবুজ অবুঝ মনটিকে সান্ত্বনার চকলেট দিয়ে নাচিয়ে রাখে সারাক্ষণ। নাম নাজানা কিছু পাখির অচেনা সুর হৃদয়ের কোন অচেনা গলিপথে যেন হামাগুড়ি দিয়ে জায়গা করে নেয়। এখানকার মানুষেরা মানুষের মতো সহজ, সরল, সাবলীল। হোমিও ডাক্তার কাসেম চাচ্চু, কবিরাজ লিটনদা জীবনকে উপলব্ধি করে বিশ্বাসে। প্রশ্ন করা তারা এখনো শেখেনি। তাতে কী? শান্তিপূর্ণ জীবনই তো সকল প্রশ্নের উত্তর বাড়ি। সমস্যা নেই। তারা শান্তিতেই আছে। চায়ের স্টলগুলো যেন আত্মীয়বাড়ির আলগা ঘর -- আড্ডার আত্মার নিকটতম জায়গা। কাহারা সারা দিনের জমানো ব্যথা, অভিমান, চাপা ক্ষোভ, ঘৃণা এই চায়ের দোকানে রেখে যায়, চায়ের দোকান তাদের হাজারো কথা বুকে ধারন করে মূর্তিমান, নির্বাক
চন্ডীঘরে ভ্রমণ
চোখের পাতা আস্তে আস্তে নিভে আসে। লোকটি জানে সে ভুল করছে। তারপরও করে। অভ্যাস জনাব অভ্যাস। অভ্যাসের কারনে মানুষ খাবার খায়, প্রানি সঙ্গম করে, বাচ্চা উৎপাদন করে কতিপয় অনির্বান সেন। নকশাল কেবল খাবারের জন্য অস্ত্র হাতে তুলে নিয়েছে বলে আপনার মনে হতেই পারে। মনটা তো আপনার, মনের মুখোমুখি আপনি না হয়ে স্নো পাউডারও মাখতে পারেন। কিন্তু ততক্ষনে আমাদের শরীরের হাওয়া বদল হতে লাগলো। শরীরে শীত শীত ডাকাতের আক্রমন। ঘুম থেকে ওঠে দেখি কেউ আর ঘুমে নেই। আমিই ঘুমিয়ে আছি। দ্রুত নাকি রেডি হতে হবে। তারপর দিল্লী, তারপর চন্ডীঘর। আমরা চন্ডীঘর নামবো। চন্ডীঘরে জনাব চন্ডাল আছে কিনা জানি না। অনেক কিছুই আমরা জানি না, তারপরও আমাদের মাস্তানি শেষ হয় না। শেভুকে মাস্তান মাস্তান লাগছে। ভদ্র মাস্তান। সব মাস্তানেরই ভেতরে একটা অসহায় ভাব