ফিরোজা বেগম। গ্রামের সহজ সরল মানুষ। তার তিন মেয়ে এক ছেলে। তার একটি মাত্র স্বামী। স্বামী বাইক দুর্ঘটনায় একটি পা হারায়। ছেলেটি পৃথিবীর সার্কাস বুঝার আগেই সংসারের হাল ধরেছে। ফিরোজা বেগম যথেষ্ট সুন্দরীও বটে। সে কোনোদিন স্কুলের বারান্দায় যায়নি। নারী যখন সুন্দরী হয় এবং অশিক্ষিত হয় তখন গ্রামীন জীবনে এক ভয়ঙ্কর পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। তাছাড়া গরীবের বউ এমনিতেই সবার ভাবী। তাছাড়া সম্পদ যেখানে থাকে সেখানে পিঁপড়ার দলাদলি ভয়ঙ্করভাবে লক্ষ করা যায়। পুরুষতন্ত্র নারীকেও সম্পত্তি মনে করে। সুন্দরী নারী ত শুধু সম্পত্তি নয় সম্পদও বটে। অশিক্ষার অভিশাপ, সুন্দর দেহের অভিশাপ, দারিদ্র্যের অভিশাপ নিয়ে ফিরোজা বেগমকে অনেক জটিল কুটিল পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়। প্রত্যেকটি পরিস্থিতি টেকেল দিতে তার মৃত্যুর মতো যন্ত্রনা সহ্য করতে হয়। মৃত্যু যন্ত্রনা কেমন জানি না কিন্তু যত যন্ত্রনার
গল্প
মাছ নয়, নদী নিয়ে গেলো
এক বন্ধুর হাতে স্বর্ন দিয়ে বলেছিলাম 'এক মাস পর নিয়ে যাবো।' দুই বছর পর বন্ধুকে বললাম 'আমার স্বর্ন ফেরত দাও।' বন্ধু ফেরত দিলো রূপা। তার মতে আমি তাকে রূপাই দিয়েছিলাম। আমি বন্ধুর সাথে কোনো প্রকার তর্কে জড়ানোর প্রয়োজন মনে করিনি। কারন ডায়মন্ড হিরার চেয়ে মহামূল্যবান 'আস্থা' সে হারিয়েছে যা তার জন্যে আমার হৃদয়ে জমা ছিল!
কবুতর
শ্যামবাঢী। শান্তিনিকেতন। রুম ভাড়া নিয়ে থাকি। সকালে বৌদির দোকানে যাই, চুপ করে লুচি- ঘুগনি তারপর দুই কাপ চা খেয়ে সোজা রুমে চলে আসি। গাছের নিচে টিনের চাল, চালের নিচে একমাত্র আমি। দুপুরে রুমে রান্না করি-- ভাত, আলু অথবা ডিম। কোনোদিন আলু-ডিম একসাথে। ঢেড়সভাজি মাঝে মাঝে তরকারির তালিকায় অভিজাত হিশেবে জায়গা করে নেয়। খুব বেশি অলস হয়ে উঠলে রান্না করা গরম ভাতের সাথে আগুনছ্যাঁকা শুটকীই যথেষ্ট। দুপুরে জয়দেব দার কাছ থেকে কয়েক গ্লাস আখের রস খাওয়ার জন্য বের হই। দুপুরেই সূর্যের সাথে আমার দেখা হয়, কেবল দুপুরেই। কতটুকু সূক্ষ্ম হলে নিজেকে দেখা যায় জানি না তবে জানার ব্যাকুল তিয়াস নিয়ে নিমজ্জিত থাকি সময়ের বিন্দু বিন্দু রেখায়। পৃথিবীতে যখন অন্ধকার নামতে শুরু করে, সব পাখি যখন নীড়ে ফিরে, সবাই যখন অন্ধকারকে ঘরে ফেরার আযান মনে
জলের নিচের মাছ আমিও হতে পারতাম
তখন আমি ছাত্র। তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্র। আমার ক্রমিক নং চার। তিন ছিল আমারই মতো আরেকজন মানুষের। সেই মানুষটাকে আজও আমি ভুলতে পারিনা। পারিনা বললে ভুল হবে। ভুলতে চেষ্টা করিনা। আমাদের গ্রামের পাশেই মেঘনা নদী। মেঘনা নদীর পাশে একটি বিদেশি এলাকা। বিদেশী এলাকাটিকে আমরা হাউজিং বলি। সেখানে যতসব ভদ্রলোকদের জায়গা। সেখানে সেই মানুষটি যার ক্রমিক নং তিন সে থাকে। বিকেল বেলা বাজার চারতলার মাঠ থেকে হাউজিংয়ের দিকে তাকিয়ে থাকি, কখনো খেয়া নৌকায় চলে যাই নদীর ঐপাড়ে যদি তাকে দেখা যায়। হাউজিং এলাকাটি দেয়াল দিয়ে বেষ্টিত, আমার মতো সাধারন মানুষের প্রবেশ নিষিদ্ধ, তথাপি দেয়ালের উপর দিয়ে ছাঁদে তাকিয়ে থাকতাম যদি তার দেখা পাই। তাকে কখনো দেখা যেতো না, তার মতো করে অনেকের দেখা পাই। মতো করে পাওয়া মানুষ দিয়ে কী আর জীবন চলে!
তাবির তার নাম
তাবির। তার নাম। তাবির তার নাম। সন্ধ্যা হলে বাবলা গাছের সরাসরি নিচে আসেন। পাখি তখন ঘরে ফিরতে শুরু করে। শব্দধ্যান। তাবির এই সময় শব্দধ্যান করেন। বাবলা গাছের পাশেই তার ঘর। ছোট্ট একটা ঘর। একজন থাকতে পারে এমন ঘর। রুমও বলা যেতে পারে। তবে ঘর বলা সুবিধাজনক। কয়েকদিন পর পর এক মহিলা বাবলা গাছের সামনে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। তাবিরকেই গালিগালাজ করে। তাবির তখন ঘরের ভেতরে পরমের ধ্যানে মগ্ন। কোনোদিন আবার খুচরো কাজে ব্যস্ত থাকেন। কোনোদিন তাবির মহিলার সাথে অংশগ্রহন করেন। তাবির গালিগালাজ করেন না। মহিলাকে গালিগালাজ করার সুযোগ করে দেন। মেজর। তাবিরের বন্ধু। সে প্রায়ই তাবিরের বাবলা গাছের নিচে আসে। রাগ প্রকাশ করে মেজর। মহিলার প্রতি রাগ প্রকাশ করে। মহিলাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিতে চায় মেজর। তাবির নিষেধ করে। অনেকদিন হয়ে