বিবাহিত নিসঙ্গতা আমার ফেনায়িত গোধূলিতে ঘুরেফিরে বার বার দেখা পাই হিজল বনের ক্লান্ত শরীরে বিষাদের ঝাঁকুনি হেলেন ধবংস করে মনের সাজানো নগর চলে যাওয়ার গুপ্ত বায়নায় অভিযোগের কাহিনি প্রেম তো কৃষ্ণগর্ত ভেতরে টানে রাগ, অনুরাগ, অভিযোগ, বিরাগ পুরোটা জীবন যতখানি একবিংশ শতাব্দী মাংস চিনে চিনে আরামদায়ক বসবাস দর্জির চাণক্য সেলাই প্রেম তাই সুখে থাকা আন্তরিক প্রলেপ কৃত্রিম মনে বাঁধাই হচ্ছে বারংবার সিড়িপথে সিড়ি কেবল উপরে উঠা নয় নিচে নামারও প্রস্থত পথ কাউকে অভিযোগ দিচ্ছি না, অভিযোগ দেয়া যায়না আজকের স্তব্ধ আকাশ আমারই বিবাহিত আয়না
কবিতা
একটা পাগলকে খুঁজে বেড়াই
শান্তিনিকেতন আসলে একটা পাগলকে খুঁজে বেড়াই রোজ যে গর্ত খুঁড়ে নিজের জন্য, অনেক স্বপ্নের ভীড়ে যার হলুদিয়া মন। শান্তিনিকেতনে আসলে একটা পাগলকে খুঁজতে থাকি রোজ যে গল্প করতে করতে খাবারের কথা ভুলে যায়, যে গান গাইতে গাইতে ভুলে যায় বানানো সমাজের আদব কায়দা, যে রাতের পর রাত অন্ধকারের ভেতর হেঁটে বেড়ায়। একটা পাগলকে খুঁজি যার গলায় মানুষের মালা, যার মুখে প্রেমের কালাম, যার চোখ থেকে রোদ কান্না একসঙ্গে নেমে আসে, যে হাসতে জানে, হাসাতে জানে, যার কাছে জীবন মানে মানুষ। বীজগনিত, পাটিগনিত, ত্রিকোনমিতির হিসাব জানবে না সে, বোকা ট্রেনের মতো সে কেবল জীবন নিয়ে চলবে চলবে, ভেদিয়া গ্রামের মতো চুপচাপ সবুজ বিলাবে, অজয়ের ব্রিজে বিকাল বেলা বাতাস খেতে আসবে। সূর্য নিভে গেলে আদিম ঘরে রাখবে সে কিছু স্বপ্নের নিশান, নিশান বাতাসে উড়বে ঘুরবে
জলের শরীরে জলের মৃত্যু
পাতাওয়ালা গাছের নিচে বসতে বসতে হঠাৎ গৌতম হওয়ার ইচ্ছা জাগলে ফুলদের বাড়ি যাবো— ফুলদের সাথে কথা হবে কতিপয় ফল নিয়ে। গাছের ছায়ায় পাখিমন ঘুমাতে চায় আল্পনা ছোঁয়ায়— সত্য প্রমান করতে গঙ্গা নদীতে যমুনার চাষ করতে হয় না— ইলিশ যাবে জনগনেরর পেটে। কথা বলতে বলতে রাত বাড়বে। তারপরও কথা শেষ হবে না। ফতোয়া খতিয়ান দেখানো বন্ধ করে চলো মানুষের বাড়ি যাই একসঙ্গে। মানুষের কোনো ঘর নেই এখন— পাতাকে পছন্দ করে পাতামানব হয়ে বাস করছে গাছের নিচে নিচে। আদিকালের কথা ভুলে বর্তমান হয়ে চলো বাচতে শিখি— খুব সহজভাবে মেঘের পালকের মতো সুর লয় তাল নিয়ে। যত কথা বলবে সহজ কথার মতো কোনো কথা নেই— যত চালাকি করবে সহজ চাওয়ার মতো কোনো চাওয়া নেই— সব কিছু নিভে যাবে— গুন্না করে নাক দিয়ে কথা বলে লাভ
ষোলো আনা চাই
পাগলী পোকাদের ছেড়ে চলে আয়, উর্বর জমি আমার বর্গা দিয়েছি আজ সাত মাস,জেনে রাখিস এই জমি তুই ছাড়া বিক্রি হবার না, ইরি বিরি গাইন্দা ধানের ফসলি মৌসুম আমার, তর জাবার পূর্ন করবে বারো মাস, তর নখের আঁচড়ে মাটি পাবে প্রান,প্রান ভাসবে আবেগের বন্যায়, এখনো বেঁচে আছে এই মাটি তর স্পর্শের কামনায়,পাগলী সব কিছু ভুলে সব পাহাড় বেয়ে চলে আয় আমার আঙিনায়,তকে আমার ষোলো আনা চাই,এক সিকি কম হলে জ্বলবে আগুন এই বাংলায়।
নারীকে মাংস ভাবিনি
কেউ যদি বলতো কী করছেন? আমি হয়তো বলতাম অলসতার কূলে শুয়ে আছি। তখন কেউ বলতো না না, একদম অলসতা করা যাবে না। এখনি স্নান সেরে দায়িত্ব সচেতন হয়ে পড়ুন। আমি বলতাম, আরেকটু অলসতা পান করি, তারপর না হয়…। আপনার রূপ-কথার রাণী সাত সমুদ্র তের নদীর পাড়ে অপেক্ষা করছে। অলস হলে দৈত্য এসে হালুম করে নিয়ে যাবে আপনার রাণীকে। তাতে কী? দৈত্যের বুঝি মাংস খাওয়ার স্বাদ জাগে না। ভীতু হরিণের মাংস খুব বেশি লাল হয়ে থাকে, লাল মাংস দৈত্যের কাছে স্বাদ আর স্বাদ, লাফালাফি প্রিয়। লজ্জা আর লজ্জা, ছি, ছি ছি কেন? কী হলো আবার নারীকে মাংস ভাবতে লজ্জা হলো না আপনার, আপনি এত নীচ। নারীকে মাংস ভাবিনি বলেই তো অলস হয়ে শুয়ে আছি হায় চিল বেদনায়, এখনো তেলোয়াত করি পদ্মঠোঁটের চুম্বন। আমার ঠোঁট আজ হিরোশিমা-নাগাসাকি যেখানে জন্মাবে না আর
নীরব অন্ধকার
তারপর আমাকে বাজারে তুলা হলো। এক টাকা দামের চকলেটের সাথে রাখা হলো আমাকে। কেউ কেউ রাখলেন দামি কোনো হিরা মনি মুক্তার সাথে। কেউ আবার মেয়াদোত্তীর্ন পন্যের সাথে রেখে দিল ডাস্টবিনের জন্য। আমার তো ভালো লাগে গ্রামের নীরব অন্ধকার। যেখানে গ্রাম শহর মানুষ বলতে কিছু নেই এমন জায়গায় যেতে পারলে আরও ভালো লাগবে বলে স্বপ্নের জাল বুনতে থাকি দিনের পর দিন। দুটি কালিম পাখিকে রেখে ছিলাম ব্যক্তিগত খাঁচায়। দেখলাম দিনের পর দিন তারা ম্লান হয়ে আসছে। ভেতরে তাদের হাজার বছরের ছটফটানি। একদিন তাদের মুক্ত করে দিলাম। তারা কোনো এক পুরাতন ডোবায় কচুরিপানার ঘরে রচনা করে তাদের প্রাকৃতিক সংসার। তারপর দুই থেকে তারা হয়ে গেলো শতাধিক, ছড়িয়ে পড়লো আড়াইসিধার প্রত্যেক ডোবায় ডোবায়। আর আমি হয়ে গেলাম তাদের পাখনার নিচের আদিম অন্ধকার।
এই কথা শেষ কথা নয়
সকালে। খুব সকালে। গ্রাম এলাকায় যারে বলে বিননালা। বিননালা মানে সূর্য দেখা যায়নি পুব আকাশে এমন সময়। দেখবেন আপনার জমি আর আপনার নাই। আপনার বাড়ি আর আপনার নাই। আপনার পরমা সুন্দরী রূপকথার মতো গুনবতী বউ আর আপনার খতিয়ানে নাই। ছাগল স্নান করতে যাবে সাগরে। পাহাড়ে আশ্রয় নিবে কবুতরের ডানা। মানুষ হয়ে পড়বে বৃষ্টির মতো পতনমুখী টুপটাপ টাপুর টুপুর ঝনঝন পনপন। এই রাত শেষ রাত এই কথা শেষ কথা নয় নিজেকে দিনে দিনে বিক্রি করে যে গাড়িটা ক্রয় করলেন, যে গাড়িটা ক্রয় করলেন মানুষের মাংস বিক্রি করে, যে রেস্তোরা ঝিকমিক করে তুললেন আপনার আপন স্ত্রীর স্তন বিক্রি করে, মানুষের রক্তের কার্পেটে আপনি যে বিলাসবহুল প্রাসাদ দালাল গড়ে তুললেন— একদিন সন্ধ্যায় দেখবেন তা আর আপনার নাই— নাই আর চেয়ারম্যানগিরি ফলানোর অতি উচ্চ জমিদারি দম্ভী দামদর—
চেনার পরেও দাওনা ধরা
চাঁদের জোছনা পৃথিবীর আলোয়
মিছিলের ভীড়ে বহু আগে হারিয়ে গেছে জমিলা লাল শাড়ি চাকরি নিয়েছে বৃদ্ধার কামনার ঘোরে বৃদ্ধের চোখে জড়িয়ে থাকে লিপস্টিক হাসি প্রেমের গন্ধম কৌনিক দাবি, উপপাদ্যের পাঠশালা মজিদ, হুসেন মিয়া আধখানা সমাজ, আধখানা তাহাদের কুর্নিশফাঁড়ি নিথুয়া এজাজত প্রতিপাদ্য স্মরণসভা, কাতারে বক্তব্য, বক্তব্যের সারি চাঁদের জোছনা পৃথিবীর আলোয় দ্বিতীয় অর্জুন সীতা বির্সজনে নারীপ্রগতি, সময়ের সাংসারিক গুণ বহুকাল হয়ে গেল সখিনা বিবির কান্দন থামেনি এখনকার জমিলা রান্না করে আবেগ– মমতার তরকারি