(২০১২) অন্ধচোখ যখন পৃথিবী খোঁজে না খোঁজার মানুষ তখন নিজেকে খোঁজে নর্তকীআয়নায়, তারাসন্ধ্যায়, ডুবন্তশঙ্কায় হারানোর ভান করে হাসির তামাশায়। ‡ (২০১৪) তোমাদের পথে হাঁটিনি বলে আমি খোঁড়া তোমাদের চোখে দেখিনা বলে আমি অন্ধ তোমাদের মতো শুনিনা বলে আমি কালা আমাকে থামাতে তোমার অনুপম ভাষার মেলা থেমে যাবে তুমি, তোমাদের দলবল সময় সত্যের মতো রাক্ষস
কবিতা
কাভি না কাভি…
শীতার্ত হৃদয়ে অনন্ত কালের জমানো বরফ,আস্তে আস্তে পোষা হৃদয় বরফের পাহাড় হয়ে উঠে, উষ্ণ আলিঙ্গনে গলে যেতে চায় হৃদয় চিরতরে। কাভি না কাভি, কাহি না কাহি, কোয়ি না কোয়ি তো আয়েগা আপনা মুঝে বানায়েগা দৃষ্টির কোনো চাষযোগ্য জমি নেই। আজ এখানে, কাল সেখানে, পরের দিন ঐখানে নোঙর ফেলে চলে। দৃষ্টির একনিষ্ঠ আবাসিক জমির ভেতর একটা তৃপ্তির ঢেকুর। কাভি না কাভি,কাহি না কাহি, কোয়ি না কোয়ি তো আয়েগা আপনা মুঝে বানায়েগা ভাড়াটে কথা আর ভালো লাগে না। কথা হবে ঘুমের চুলের মতো অগোছালো তবুও যেন প্রাণে প্রাণে মেশাল এক দাতব্য গজল। কাভি না কাভি, কাহি না কাহি,কোয়ি না কোয়ি তো আয়েগা আপনা মুঝে বানায়েগা এক রাতের ভেতর আরেক অন্ধকার এসে হামলা করে, ডাকাতি করে নিয়ে যায় সিন্ধুকে রাখা সরল মুক্তা। এক রাতের ভেতর বন্য এক জোছনা চাই। কাভি না কাভি,কাহি না
এখনও খোঁজ তুমি আমায়?
ওরা সন্তানের মতো ভাবে কাশফুলে বৃষ্টি পড়ে জেএল দেওয়া চুলের মতো উড়ে যায় পাখি আবার বদনাম নামে সূর্যের পথ ধরে লাল থেকে আরো লাল হয়ে উঠে প্রতিবাদ পাওয়ার ইচ্ছে কাদামাটির নিচে বাইম মাছ ফ্যামিলির কাছে কম কথা দেওয়া হয় সারাদিন পানি আর পানি জল আর জল চলো এখনি উঠি পড়ি শান্তিনৌকার খোঁজে জীবন তো একটাই জীবনের নিচে সাদা কাশফুল কারো জন্য বিষয় ও বাসনা বিসর্জন দিতে হয় না দূরে অনাথ চোখের ঠিক সীমানার কাছে কানি বক একই চাঁদ একই আকাশ ছিন্ন দুটি আশাগল্প যাতনা জোৎস্না খেলা করে মনে নোনা বর্ষায় দুটি চোখ খুঁজে খুঁজে হয়রান এখনও খোঁজ তুমি আমায় শীতল হাওয়ায় কলমি ফুলের ধ্যানতৃপ্ত পাখায় একটি পাখি একা একা উড়ে আসে ছায়াপথ ধরে নদীর কিনারে ছাদ লাগবে না প্রিয় নৌকায় ছায়ায় চড়ুইভাতি আচ্ছা আমরা যাই আমরা যাচ্ছি অজানা পথে লোকালয়ে একটি পাখি একা একা উড়ে গান গায় নদীর কিনারে মেঘ আসে তোমার দেখাপথে অন্ধকার নামে তুমি ডুবে যাও আমি ডুবে যাই মিথ্যা পৃথিবীর মিথ্যা ছলনায় ছনচালে বাগানমাখানো
শান্তি হচ্ছে গুম
প্রাচীন নীরবতা
এক প্রাচীন নীরবতা জানালা দিয়ে বাতাসের মতো তানহা তানহা ডাক তুলে অন্ধকারে আসন রেখেছে। বিতনু প্রিয়ার মুখ মনের ঘরে শব্দ করে ডাকে। আকাশ নেই আজ— নেই আকাশের ছাদ। কম্পিউটার খুলে বসে আছে রেজা। মনিটর থেকে ভেসে আসছে হাসির বাথান— দেবী মনসা ছদ্মবেশাসন। রেজা কেনো হাসে— তাও মাঝরাতে!? তার চোখে কেনো লাল রঙের বাতিঘর-সুখ!? সকাল ঘুমাতে যাবে— রাত জেগে উঠবে— একটা চাঁদ একাই জীবনভর— ব্যাজোক্তি কালে মানুষের মৃত্যু অনিবার্য— মৃত্যু যেনো মৃত্যু নয় ঠিক যেনো শীতের চাদর— উষ্ণ আরাম শরীরের জীবন। গাছের পাতা অটো নৃত্য করে। মাঝরাতে। বাতাসের সাথে। অতিথি অতীত সুদূরমগ্ন বিষন্ন বিকাল পাখি হয়ে বর্তমানের মাঠে রাখালি বিতান কন্যা। এই মিষ্টি বাতাস এই মিষ্টি আলো-চাঁদ-খেলা গোল গোল শব্দের স্বপ্নমায়া ছায়া মাল্টিপ্লাগে জমে থাকা সতর্ক লাল চোখ— ডাকে অবিরাম প্রতিদিন প্রতিনিয়ত প্রতিক্ষেত্রে প্রতিক্ষণ— এই মাঝরাতে ট্রেনের শব্দ কানের কাছে
মানুষের জন্মদিন কবে মা?
ঢেউয়ের তালে যে পা ছুটে আসবার কথা সে পা ছুটে গেছে সাগরের পরপারে এক উদাস দুপুর পুকুর পাড়ে দাঁড়িয়ে নদী ও হাঁসের খেলা দেখে পুঁটি মাছের মিছিল শ্যাওলার কোলাহল চোখে এক বিভ্রম স্মৃতি স্মৃতির জাদুঘর সময়ের মহাজন অস্ত্র দিবে— খাদ্য দিবে না ক্ষুধার্ত আবেদন জাগ্রত করে রাগের নিউক্লিয়াস মেমব্রেন চোখে গত শতাব্দীর লিটলবয় ফ্যাটম্যানরাগ মানুষের জন্মদিন কবে মা তোমার ছেলে পশুদের কার্নিবাল দেখে উজ্জীবিত হয়েছে ঢেউয়ের এ্যারিনায় মানুষের মৃত্যু তারিখ লিখবে হার্ডলাইনে বাজবে ভরতের গীতবিতান কয়েক প্যাক ইথানলে সজ্জিত হবে মনের বাগান মানুষের জন্মতারিখ আছে কী মা মানুষের ধর্মতলায় মানুষ তো পশুর শিরোনাম পড়ে প্রাণির মৃত্যু হলে হয়তো মানুষ পেতো মৃত্যুর ইতিহাস ইতিহাস নয়— ভুলের সংগ্রাম
সময়ের ঘর
প্রচলিত নেশার ঘোর
আমার চাওয়া-পাওয়া একটি স্বপ্নের ফ্রেমে বাধা থাকে তুমি তখন নৃত্য করো, তুমুল নৃত্য গাছের পাতা ঝরে যাওয়ার নৃত্য কাল সারা রাত মুষলধারে বৃষ্টি হতো যদি নায়ক হতো তোমার চিরচেনা মুখটি আমি হতাম সিনেমার ভিলেন ভিলেন হওয়া ভালো সারাটা সময় আধিপত্য, শেষে পরাজয় পরাজয় যে জয়ের মাসতুতো ভাই এটা কেবল ভিলেনই জানে নায়ক হতে গেলেও ভিলেনকে স্বীকার করতে হয় শয়তান কেন শয়তান কারণ শয়তান দাস হতে পারেনি ভিলেনও সময়ের দাস নয়, মাইকেলের রাবণ এ্যালকোহলকে রঙিন পানি না ভেবে ওষুধ ভাবো দেখবে হ্যাং ওভার ইফেক্ট বলে কিচ্ছু নেই কেটে যাবে প্রচলিত নেশার ঘোর ভাবতে শিখো হিমানী, ভাবনাতেই গলদ অন্য কোথাও গলদ কিংবা ময়লা নেই চোখের সামনে ধারনার উল্লম্ফনের কারিশমা বস্তুত শিশুর হাততালিই এসথেটিক সঠিক আবেগ- বিবেগ মিথ্যার অহমিকা চোখ যত বড় হবে আসমান ততই অসীম তাই চোখ বড় করে লাভ নেই আসমানী আসমান তোমার চোখে আসবে না আমার চাওয়া-পাওয়া বিশ্বাসের কাবিনে কেনা
ব্যস্ততা এক ঔষধের নাম
হঠাৎ বুকের ভেতর যখন শুরু হয়ে যায় এক কোয়া কান্না, এক সোয়া নদী আসে চোখের ধারায়, নিথর এক শব্দ নেমে আসে নদীর চেনাজানা আলপথ ধরে। কতটুকু পেছনে গেলে অনেক দূরের অচেনা পথটা তবুও চেনা হয়ে যায় মন তখন জানে না। পাগল মনেরও একটি বাড়ি আছে, খুব গোছালো এক বাড়ি, সেখানে সে বাজার করে, রান্না করে, রোজ নিয়ম করে ঘুমায়, আবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল করে। কতটুকু পাগল হলে সেই পাগল মনের দেখা পাওয়া যায় এ অবুঝ মন তা জানে না। আমাদের সবার একদিন সব কিছু ছেড়ে পথে বসতে হবে। কেউ হয়তো দালান বানায়, কেউ বানাবে পাহাড়। বানানোর কাজে ব্যস্ত থাকা কেবল। ব্যস্ততা এক ঔষধের নাম। কত ঔষধ খেলে হৃদয় ভুলে যায় হৃদরোগ হৃদয় তা জানে না।
আসনের লোভ
এখন বর্ষাকাল। রোজ রাত নেমে আসে আমাদের চোখে মুখে নাকে। আমাদের ঘুমেরা আর জ্বালাতন করে না। আমাদের স্বপ্নরা আর আমদানি করে না রাতজাগাপাখি। বস্তা বস্তা দুঃখ ট্রাকভর্তি করে নিয়ে যাওয়া হয় দূরে, অনেক দূরে। শাহবাগ চুপচাপ শ্রীরামচন্দ্রের ধ্যানী আসনের মতো। আমাকে যদি এখনই পৃথিবীর প্রধান করে দেয়া হয় তাহলে আমি এখনই পদত্যাগ করবো, নতুবা সন্ত্রাস দমন করবো নিজ হাতে বাঁচি কিংবা মরি। আসন পাবার পর হয়তো আমার মানসিকতাও বদল হয়ে যেতে পারে— সন্ত্রাস দমনের পরিবর্তে আমার চেয়ারের নিচে থাকবে কতিপয় পোষা সন্ত্রাস। নিজে পদত্যাগের পরিবর্তে আমার বিরুদ্ধে যারা কথা বলবে তাদের কপালে লেখা হবে পদত্যাগের শাব্দিক হিসাব। আসনের লোভ আসলেই কপালের লাল টিপের মতো, কেবলই নিজেকে দেখায়।