ভুলে যেও আমাকে ভুলে যেও জলে স্থলে আকাশে বাতাসে ভুলে যেও ভুলে যেও আমাকে শব্দ হয়ে জীবিত থাকো মুখ থেকে মুখে বৈশাখ থেকে চৈত্রে জীবিত থাকো মাসের পর মাস জীবিত থাকো ব্রা প্যান্টি আন্ডারওয়্যারের মতো শতভাগ প্রায়োগিক দূরে ভাসতে ভাসতে অচেনা দ্বীপ আমি অচেনা গ্রহ কোনো পৃথিবীর দামি বিজ্ঞানীর কালকেতু ফুল্লরা তোমাদের ইতিহাস চকেট সংকট আমাদের কালের রাজহাস চকলেটলোভা গরীব অসহায় শিশুর মতো আমাকে ডাকবে না আর ভুলে যেও বারান্দায় ঝুলে থাকা শুকনো কাপড়ের মতো বাতাস আর সূর্যকে ভুলে যেও ঘুম আমার চোখেও নামে রাত আমার দেহেও বহে বসন্তগান আমিও গাইতে চাই আমিও চিনি উত্তর চিনি দক্ষিনের হাওয়া বর্ষার নবোপলীয় জল আমিও রক্ত মাংসের মানুষ একা ভুলে যেও সমস্ত কিছু নিয়ে একটা আকাশ একটা দুঃখ একটা সাইকেল রিংকেল একটা সকাল বেলার রজনীগন্ধা একটা সৃজনী শিল্পগ্রাম একটা প্রান্তিক রেলওয়ে স্টেশন একটা হুগলী নদী নীরব সুনসান ভুলে যেও ঝগড়াসমগ্র ভুলে গেলেই বেচে যাবে তুমি বেহুলা ভাসান আমাদের নদী
কবিতা
সময়ের ঢেউয়ের তালে
আমি মানে নিরাকার। যত গভীরে যাই ততই ছোট হয়ে আসে আমার চোখ কান নাক গলা মুখ। মুখের গল্প যেন সময়ের ফেনা— সময়ের ঢেউয়ের তালে ফেনাদের জীবন। একদিন একদিন করে মানুষ মরে যায় মানুষ মরে যেতে যেতে আশার বীজ রেখে যায় । আশার বীজ থেমে গেলে হৃদয়ের ঘাটে পানাফুল ফুটে— থেমে যাওয়ার নাম গতি, পরাজিত জীবন জয়ের বাতাস। নিরাকার আমির নাম নেই কোনো, কত নামে ডাকে লোকে আমাকে তোমাকে, আমাকে দেখা যায় না তবুও দীর্ঘজীবী কার্বন কপি আসে সময়ের ফ্লেপে। বাস্তব এমনই যা দেখে না তাকে দৃশ্য বলে যা শুনে না তাকে কথা বলে যা বুঝে না তাকে বোধ বলে এক চমৎকার অদৃশ্যের ভেতর কেটে যায় রাধাফুল জীবন, হরতাল, হাতিয়ার— আমার ঘরে আমিই নিরাকার।
ঝাউখোলাচোখ
গোলাপের যৌবন গন্ধে বাড়ে চাদের বয়স কমে জোছনায় জলের ছন্দে বাড়ে শাপলার বুক লোভে বাড়ে আকাঙ্খা বেদনা শোক রাত না দিন বুঝে উঠা কঠিন ঝাউখোলাচোখ মাছধরাঘুম স্বাধীন স্বাধীন কাপে বাড়ে চায়ের বয়স— জন্ম-মৃত্যু তার কাপের পৃথিবী চোখে বাড়ে চিরচেনা আকাশ— সাদা নীলের চলক ধ্রুবক অপেক্ষায় বাড়ে প্রেমিকের সাজ— চোখের নয় মনোমাদক কান্নায় কমে রোগের বয়স— বিনা নোটিশে অতি উত্তম নগদ কথায় কমে কাজের বহর— উদাস উচাটন গম্ভীর সর্বগত
অচিন গন্ধ চেনা সুরে গান ধরে
সকাল বেলা দেখা হয়েছে কোন এক শুক্রবারের লগে। লাল শুক্রবার বলতে একখান কথা আছে। মা হিসাব করতেন শুক্করে শুক্করে আসট। কত লাল কিংবা আসট শুক্রবার জীবন থেকে চলে গেল দূরের কোনো এক অচেনা গ্রামে যেখানে সূর্য আসে না— থাকে শুধু অন্ধকার থাকে না বনলতা সেন থাকে না হাঁটাবাবা থাকে শুধু বন্ধ্যাকাল সময় এক নিষ্ঠুর ধারনা যা মানুষ বানিয়েছে বারবার। কাগজে ফুল গন্ধে মাতাল হাওয়া ভুলানো চোখের ভেতর। ভেতর ভেতর ভাই ভাই হলেও দ্বীপ একটা আছেই জলের চারিধারে। ভেতরে ভেতরে গন্ধ রোপন করলে আলো এসে কিলবিল করে জলপাই বনের গহীন প্রানে— তীব্র প্রান চাই আরও আরও তীব্র বিরাট এক ব্যথা প্রানে এসে থেমে যাবে কম্পনে কম্পনে। সরিষা ফুলের গাছে পাখির মতো পোকা বসে দিনরাত। কোথাও কোন আলো নেই— অন্ধকার। বিরাট এক অন্ধকারে মানুষ আরও মানুষ হয়ে পথ চলে সমবায়
মানুষ, পাপ আর শয়তানের প্ররোচনা
মানুষ পাপ কাজ করে। লোকে বলে শয়তানের প্ররোচনা। শয়তান কার প্ররোচনায় করেছিল পাপ— অমান্য করেছিল পরম দয়াল? মানুষের পায়ে চুমু দিয়ে দেখি মানুষ মহান। মানুষের হাতে হাত রেখে দেখি মানুষ অসামান্য ধনবান। ফুল ফল ঘাসময় মানুষের ইতিকথা। মানুষ হাসলে সূর্যজোয়ার নামে পৃথিবীর পাতায়— কাঁদলে নদীজল দেখায় তীরঘেষা জোয়ার। জোয়ার ভাটায় পড়ে আয়ুরেখা খেলা করে— চোখে বালুপড়া কথা নিয়ে মাস্টার সাজে কতশত ধর্মরূপকথা। ভুলফল ভুলকল ভুলদল নাপাক থেকে পাক পাক থেকে নাপাক শুরু থেকে শেষ শেষ থেকে শুরু গুরু থেকে জুরু আদার ব্যাপারী— জাহাজের খবর প্রথম সত্য আজও মিথ্যা আজও সত্য নয় প্রদর্শিত ধর্মপর্দা অর্থের শখ বালুতে মিশে যায় অর্থের যশ কথাসুখ দোতরায় ঢিল দিলে দেখা যায় জলের নাচন মিথ্যা সুখে প্রাসাদ বানায় কুরুক্ষেত্র আশ্বিনের মাস ফাল্গুনে সবুজ পাতায় ব্যর্থ সংসার যা দেখো যা দেখাও ব্যর্থ সবই সন্ধ্যা বেলায় কাগজের নৌকায় জলে নেমে জলে ডুবে যাওয়া এতো শূন্যতার ভেতর কাকে
আরো গভীরে তার মাটি
কলসি কাঁখে সখি জলস্নানে যাও জলের আয়নায় আচার্য আপনারে দেখাও কোলাহলে কলরব ঠোঁটের ক্যাম্পাস পতিত অধরে রক্তের ইতিহাস মা তোমার হয়েছে ব্যাকুল রক্তের জন্মে-- হোঁচট খেয়েচি। তাই ঠোঁট ফেটে রক্ত আসে। তবে কলসি ভাঙেনি কেন? কলসি পেয়েছে জলের স্পর্শ। ঠোঁট পেয়েছে পাথরের স্পর্শ!! কণ্ঠে কেমন যেন মাটির ঘ্রাণ রসে রসাতল মেয়ে আমার জীবের প্রাণ ২৭,০৮,২০১৩, রাত ১.৩০, জিয়া হল
রোদের অপেক্ষায় বৃষ্টিতে বসে থাকা
আছি লালবান দীঘির মাছরাঙা জলে মানুষের দেখা নেই দেখা যায় আমাকে সূর্যের লাল চোখে লাল কাপড় লেফ রাইট লেফ রাইট করতে করতে উত্তর দিক থেকে দক্ষিনে মন বাড়ায়, অনেক কথা নগ্ন হলে হিজল পাতার ছায়ায় যৌবনের সুড়সুড়ি লাগে আছি তো লালবান দীঘির ছোট ছোট ঢেউয়ের পুরাতন সুরে নামহীনা পাতা জলে ভাসছে, পুরাতন ঘরটা আরও পুরাতন হয়ে চেপে গেছে একদম চেপে গেছে বাতাস আসে সুখ আসে শান্তি আসে আসে না কেবল মাছরাঙার মাছ, মাছের আশায় করুন সুরে সে ডাকে, ডাকতে থাকে একটু পর পর। কিশোর বিজয় ছিপ নিয়ে বসে আছে ইটের রেলিং ধরে মাছ ধরবে বলে। বিজয় মাছ চায় মাছরাঙাও মাছ চায় মাছ তাহলে কাকে চায়? মাছও হয়তো কাউকে চায়। চাওয়া চাওয়ির এই দুনিয়ায় আমি তবে কাকে চাই জিজ্ঞেস করি মনকে বারবার। মন আমার কালো চশমা পরে বেদনা ঢাকে, অতীত কোনো প্রিয়তমা সুখ জলের ধারায়
প্রয়োজন কিন্তু প্রয়োজন
পালাতে হবে নতুবা জেগে উঠবে যতসব বিপ্লবের আগুন
মানুষের সাথে আমার আন্ডারগ্রাউন্ড সম্পর্ক কে আছো সম্পাদক কে আছো প্রোডিওসার পালাও পালাও অফিস ঘেরাও হবে জ্বলবে আগুন দাউ দাউ। শিল্পের নামে চলছে যৌনতার ব্যবসা বিজ্ঞাপনের ফাঁকে ফাঁকে প্রোগ্রাম এই মাটি এই শিল্প তোমার আব্বার না, জনগনের গ্রাম। এই গ্রামে ফুলের চাষ হবে, মৌমাছি আবার আকাশে উড়বে, মাছের বাজারে মাছি করবে ভনভন। যে কৃষক ফসল তুলতে গিয়ে ঘাম ঝড়ায়, যে নদীকন্যা পৃথিবীর ভার বুকে নিয়ে সংসারপথে গতি হারায়, যে লেখক স্রোতকে ধাক্কা দিয়ে বিপ্লব বানায়-- তাঁদের কাছে মাথা নত করে নদীর জোয়ারের মতো চিনে নিবো আশালতা ফল, সমাহিত মন, হৃদয়ের জন, জীবের আগের জল ভুলে যাবো নেমে আসা যতসব ভয়ার্ত কনকন। তোমাদের কাছে খুচরো পয়সার মতো গরীবের জীবন গরীব মরে আইনের ফাঁদে, তোমাদের আদালত রোজ চলে এসিরুমে তোমাদের মানবিক বৈঠক টেবিলের নিচে কাজ চালায় আমাদের সম্পাদক মানুষের সাথে আমার আন্ডারগ্রাউন্ড জীবন নো টক নো টক!
আকাশের উপরে আকাশ
যখন বৃষ্টির মতো বিপ্লব নামে তখন আমি চুপ থাকি। বিপ্লবের সাথে আমার দেখা হয়ে যায় রাস্তার মোড়ে চায়ের কাপে রেস্তোরাঁয়। বিপ্লব এক সামরিক ট্রেনিং চুপ করে বসে থাকার নাম, কেমন করে মানুষ হাঁটতে হাঁটতে চোখ ফিরিয়ে তাকায় এবং অন্ধকারে মিলিয়ে যায় তা নোটবুকে লিখে রাখার নাম বিপ্লব। মানুষ মানুষকে ভুলে গেলে শান্তি আসবে, মানুষ মানুষকে পরাজিত করলে শান্তি আসবে, মানুষ মানুষকে হত্যা করলে শান্তি আসবে। অনেক ক্লান্তি এসে জমা হয় শার্টের বোতামে, বোতামফুল তখন সাইকেল চালাতে পারে না, হাঁটতে থাকে। হাঁটা একমাত্র অসুখ যার কোনো বৃষ্টিরোগ নেই। অনেক নদী বুকে নিয়েও আমি রোদমানুষ হতে পারি প্রিয়তমা, ছোট হতে হতে তোমার পায়ের আঙুলের অনেক নিচ দিয়ে চলে যাবো তবুও বলব না ভালোবাসি। ভালোবাসা কোনো দেশ নয় যার স্বাধীনতার দরকার হয়, ভালোবাসা এক আকাশের