গ্রামের খুব কাছে মেঘনা নদী গ্রামের নদী হতাম যদি বাষ্প হয়ে বাতাসে বাতাসে মেঘ হয়ে আকাশে আকাশে জলচোখে চিনে নিতাম বন্ধু তোমার বাড়ি তারপর কোনো এক দিন তৃষ্ণায় তুমি চিন চিন ঠিক তখন ঠিক তখন আমি তোমার একমাত্র আপন কানকথা নেই ভুলদেখা নেই নেই কোনো দর্জি মেশিন তোমার চাওয়া আমি আমার চাওয়া তুমি চাওয়া চাওয়া এক হয়ে আমরা তখন স্রোতস্বিনী নদী ঢেউয়ে ঢেউয়ে সংসার জলকেলি কালচার প্রেমে মনে গুলজার একে একে একেকার আমি যে তোমার তুমি যে আমার আমি যেন দেহ তুমি আমার আত্মা তারা যেন না বলে তারা যেন না বলে তুমি আর আমি ভিন্ন সত্তা
কবিতা
হৃদয় দহন কেউ দেখে না
মেঘনা নদী আমাদের বাড়ি থেকে খুব দূরে নয়। আমি প্রায় মেঘনা নদীর কিনারায় বসি— মাছের সংসার দেখি, মালামাল ভর্তি জাহাজ দেখি, লঞ্চের জানালার ফাঁকে লতাপাতার মতো বেড়ে ওঠা চোখ দেখি, আরও দেখি জলের গভীরে প্রবাহমান চুরাস্রোত। মেঘনা নদীর মাঝখানে দ্বীপের মতো একটি জায়গা আছে, এলাকাবাসী জায়গাটিকে চর বলে। চরে তরমুজ ভালো হয়। বালি মাটিতে তরমুজ ভালো হয় ছোট্ট কাল থেকে শুনে আসছি। সূর্যের তাপে বালি মাটি ভেতরে ভেতরে দগ্ধ হতে থাকে, লাল দহনের সবটুকু ব্যথা বালি তরমুজের হৃদয়ে ট্রান্সফার করে দেয়, তাইতো তরমুজের হৃদয়ে হৃদয় এতো লাল। আসলে হৃদয় দহন কেউ দেখে না— কালিমা পড়া নসিমুন বাবু কিংবা কবুল বলা জলিমা। জলিমা, বিগত দিনে কার বুকে মাথা রেখে তুমি শুনালে করবীকুঁড়ির তরল সুর, চিৎকারে চিৎকারে সাজালে রঙিন বাসর? আমি কিন্তু বালি মাটির তরমুজের মতো ভেতরে
প্রেমকিস্তি
যখন থেকে তোমাকে মনে হলো নদী তখন থেকে নৌকা বানাতে শুরু করি কাঠাল কাঠের নৌকা শামুকভাঙা পেরেক আলতা রঙের আলকাতরা নুহ নবীর নৌকার কথা মনে আছে আমার অভিশপ্ত সবাই ডুবে গেলো জলের ত্রাসে আমার নৌকার নাম রেখেছি ‘প্রেমকিস্তি’ একদিন প্রেমকিস্তির দিকে খুব করে তাকাই দেখি বসন্ত ফুল পাতার আড়ালে লুক্রেতিউস দেখি জাম্বুরা ফুলের ঘ্রান অনিন্দ্য সুনির্মল বন্দনা অকাতরে প্রানফুল আলুর ডগার মতো বয়ে যাচ্ছে বয়ে যাচ্ছে আমার হৃদয় থেকে দেহানুভূতির পরাগরেনু প্রান্ত থেকে কেন্দ্রে প্রেমকিস্তি থেকে ঝরে গেলো অনেকগুলো বছর আশ্বিন মাসের ঝড়ও থেমে গেলো শহরের পুরাতন ইটটি কয়েকদিন আগে মারা গেলো স্বপ্নদেশ দখল করলো পরদেশী আকাশ নীল পাতলা ঠেঙি ভুলে গেলো সাতার নদীতমা তোমার জলেও আজ ঢেউ নেই কোয়ারেন্টাইন তুমি বহু বছর আগ থেকে তোমার লাশের উপর বড় বড় বিল্ডিং সোপার শপ নাইট ক্লাব নদীতমা আমার প্রেমকিস্তিও নিয়ে যাবে তারা তোমার লাশের উপর যে ফাইবস্টার দৈত্য বসানো হয়েছে তার জন্য তার লিপস্টিকের মতো চকচকে
তোমরা তোমরা মহান
তোমাদের ঘরে থাকে বিলাসবহুল দামি গাড়ি আমাদের ঘরে থাকে গরম বাতাস শুন্য হাড়ি শ্রমিক ঝরায় ঘাম পায় নাকো তার দাম বছর বছর ধরে তাদের রক্ত খেয়ে তোমরা তোমরা মহান।। তোমাদের ঘরে থাকে বৃষ্টি বিলাস এসি বাতাস আমাদের ঘরে থাকে ঘামাচি আর কান্না প্রলাপ শ্রমিক ঝরায় ঘাম পায় নাকো তার দাম বছর বছর ধরে তাদের রক্ত খেয়ে তোমরা তোমরা মহান।। তোমাদের ঘরে থাকে দামি সোফা রঙিন টিভি আমাদের ঘরে আমরা রোদে পুড়ি বৃষ্টি ভিজি শ্রমিক ঝরায় ঘাম পায় নাকো তার দাম বছর বছর ধরে তাদের রক্ত খেয়ে তোমরা তোমরা মহান।।
আশ্বাস, কেবল আশ্বাস
এইদিনে এইদেশে নদীর কোনো ভবিষ্যৎ নেই মানুষের নেই আবাসিক সুখ লাল টুপি সাদা টুপি কেবল আদর্শের কথা বলে ঘরে নেই বাইরে নেই খাবারের সুখ ডানা থাকলে আকাশে ওড়া যায় না প্রিয়তমা আমার, ডানার ভেতরে খুব ভেতরে একটা মধ্যাকর্ষনভেদী শক্তি থাকা লাগে— শক্তি নাই শক্তি নাই পাখির ডানায় শক্তি নাই। যে পাখির ডানা ওড়ে সেই পাখির মুখ বলে না ত কথা, যে পাখি উড়তে পারে না তার কথামিছিলে মুখরিত সবপাশ। আজকাল কথার স্বপ্নজাল আজকাল আদর্শের ভুংভাং গান নয় আজকাল আওয়াজের টুংটাং ম্যাকাপের ওজনে ভারী হয় সুন্দরীর মুখ বিলাসীতার রঙ্গে রঙিন হয় যুবকের কার্পেট। একটু পরে ঠান্ডা নামবে বলে আশ্বাস দেয় আবহাওয়াবিদ অনেকদিন অনেক বছর পরেও গরমের কাল হাত পেতে থাকে বুক পেতে থাকে গরমের কাল শেষ হয় না ত আর কেবল আশ্বাস কেবল আশ্বাস আমার মাথা থেকে ঘাম পায়ে গিয়ে পড়ে, পায়ের ঘাম পায়েই শুকায়, মানুষের জীবন মানুষে খায়, মানুষের মাংস
প্রিয়তমা উপলব্ধি
প্রতিদিন কোটি কোটি নক্ষত্র জন্মগ্রহন করে আবার কোটি কোটি নক্ষত্র মারা যায়। কোটি নক্ষত্রের মাঝে একটি নক্ষত্র আমার চেনা। একটি নক্ষত্রের সাথে আমার দেখা হয় রোজ বৈঠকে খাবার টেবিলে, ধ্যানে জ্ঞানে চিন্তায়। তাকে আমি হাত দিয়ে স্পর্শ করতে পারি না, তার স্পর্শ অনুভব করি। তার নাম নেই, সে এক উপলব্ধির নাম, আমার সেই প্রিয়তমা উপলব্ধি জলিমা। জলিমা, পৃথিবী থেকে আরেকটি সপ্তাহ চলে গেলো, আরেকটি ধাপ এগিয়ে গেলাম মৃত্যুর পথে। মৃত্যু কোনো সাধারন সমীকরন নয়, মৃত্যু একটি পূর্নাঙ্গ জীবন বিধান। আজও আমার অগোছালো চুলে তোমার হাতনিড়ানি এগিয়ে আসেনি প্রিয়তমা শিহরনের কোনো আমাজিং এলাকায়। কিন্তু আমি তো তোমার অধরা হাতের ছায়াশিহরন অনুভব করি দেহের প্রত্যেক নালায়। উপলব্ধি আর স্পর্শের মাঝে যতটুকু শুন্যতা ততটুকু অস্থিরতা এই হৃদয়কে সহ্য করতে হয় অসীম সীমানার অব্যক্ত সন্ধ্যার কোনো এক
পথে থেকো প্রাণ
আজ তুমি দূরে, অনেক দূরে, যতটুকু দূরে গেলে দিগন্তেরও একটা অর্থ দাঁড়ায়। আজ তুমি অনেক দূরে যতটুকু দূরে গেলে আমার কান্নাও কাব্যতে মানায়। সোনালু ফুলের মতো আমি হয়ত মাকাল, হয়ত রজনীগন্ধা চোখের ভেতর, মনের ভেতর, আড়ালের ভেতর আড়াল। তোমাদের চেনা পৃথিবী ডাকে না আমাকে। তারপরও পৃথিবীতে জন্ম আমার। ঝিনুকের খোলসের মতো আমি প্রতিদিন খুলে খুলে পড়ি তোমাদের চিরচেনা গন্ধ অনিন্দ্য নিন্দা। কেমন আছে তোমাদের পৃথিবী যেখানে আমার সামাজিক হওয়ার কথা? অসামাজিক অভ্যাসে আজ তুমি দূরে বহুদূরে যেখানে মেঘ আবেগ হয়ে ঝরে। আমি ছোট হতে হতে ছোট্ট হয়ে যাই, হয়ে যাই দুর্বাঘাসের সবুজ যেখানে তুমি নগ্ন পায়ে হাঁটো। আরও কত ছোট হলে মাননীয়া তোমার মন নগ্ন ফুল হয়ে উঠবে আমার ঘ্রাণের কাছে, প্রাণের কাছে? আঁধার থেকে আধারের দূরত্ব জেনেও মানুষ হতে চাই, মানুষের কানাকড়ি
তোমার চলন দেখে…
চলন্ত ট্রেন কখনো জানে না তার গতি কতটুকু তোমার চলন দেখে আমাকে থামতে হয় ভাবতে থাকি নাপা কিংবা প্যারাসিটামলে চলবে কিনা কিন্তু না তুমি হালুবালু পথচারী, ক্রনিক রোগীর মতো হাউসে চলো মিউটেশনে জন্ম দাও অগোছালো মেঘ আমি তো পাহাড় নই, ছোঁয়ে যাবো তোমার শরীর তাই দূর্বাফুলে চোখ রেখে আয়ুর ইতি টানার সিদ্ধান্তে অটল ভাসমান মেঘ কিংবা কম্পনজনিত আবেগে নয় উপসংহার: তোমার মনের হাসপাতালে অনেক রোগী আমার দেশে ডাক্তারের ক্রাইসিস
হৃদয় মারা যায় হৃদয়ের অনিত্য ভুলে
বাতাসের শব্দ কানের কাছে এসে ঘরের কথা বলে মানুষের গান চড়ুই পাখির মতো একলব্য সত্যাগ্রহ লাল আলো সামনে সবুজ বাতি আরেকটু সামনে পেছনের সিটে প্রজন্মের ডাক সূর্য থেকে আজকের পৃথিবী, ধার্মিক বলবে অন্য কথা রূপকথার মতো তবু কানের কাছে ঘেনঘেন সবুজ পাতার নিচে দোয়েলের দাম্পত্য প্রজাপতি মারা গেলে কবর দিও ফুলে হৃদয় মারা যায় হৃদয়ের অনিত্য ভুলে সামনে ফুল তার যথারীতি পেছনে হৃদয়ের ভুল তার একটু সামনে সমবায় ডাহুক কামুক ডাহুকের যৌবন জল গলাবাহিত স্রোত একদিন একদিন করে জন্ম দেয় পানাফুলদল— ধার্মিক বলবে অন্য কথা কদমফুল ধরতেই পারি না প্রিয়তমা হাসতেই পারে না ভোগের ইবাদত বসে ঘরে বাইরে মার্কেটে কিংবা প্রেমিকার একান্ত মনের ইচ্ছারুমে মন ন বুঝে তুমি মন ন বুঝায় আমি আমাদের এখন ন বুঝার সমবায় কাল তবু কানে যেন বাজে দানে দানে পে লেখা হে খানেওয়ালাকা নাম ট্রেন লেইট করে ট্রেন লেইট করলেও স্টেশনে থাকা যাত্রীবাহী কাম