মেঘনা নদী আমাদের বাড়ি থেকে খুব দূরে নয়। আমি প্রায় মেঘনা নদীর কিনারায় বসি— মাছের সংসার দেখি, মালামাল ভর্তি জাহাজ দেখি, লঞ্চের জানালার ফাঁকে লতাপাতার মতো বেড়ে ওঠা চোখ দেখি, আরও দেখি জলের গভীরে প্রবাহমান চুরাস্রোত। মেঘনা নদীর মাঝখানে দ্বীপের মতো একটি জায়গা আছে, এলাকাবাসী জায়গাটিকে চর বলে। চরে তরমুজ ভালো হয়। বালি মাটিতে তরমুজ ভালো হয় ছোট্ট কাল থেকে শুনে আসছি। সূর্যের তাপে বালি মাটি ভেতরে ভেতরে দগ্ধ হতে থাকে, লাল দহনের সবটুকু ব্যথা বালি তরমুজের হৃদয়ে ট্রান্সফার করে দেয়, তাইতো তরমুজের হৃদয়ে হৃদয় এতো লাল। আসলে হৃদয় দহন কেউ দেখে না— কালিমা পড়া নসিমুন বাবু কিংবা কবুল বলা জলিমা। জলিমা, বিগত দিনে কার বুকে মাথা রেখে তুমি শুনালে করবীকুঁড়ির তরল সুর, চিৎকারে চিৎকারে সাজালে রঙিন বাসর? আমি কিন্তু বালি মাটির তরমুজের মতো ভেতরে
Author: emranor reja
আপনি খুব হতাশ?
আপনি খুব হতাশ। মনে হচ্ছে এখনি আত্মহত্যা করে ফেলা দরকার। আপনার মনে হওয়া মোটেও অবান্তর কিছু না। আত্মহত্যা আপনি করতেই পারেন। আপনি মরে গেলে কারো ভাবান্তর হবে না। এই দুনিয়ায় অনেক বিখ্যাত মানুষ মারা গেছেন, তাতে পৃথিবীর বিশেষ কোনো ক্ষতি হয়নি। এই দুনিয়ার অনেক কুখ্যাত মানুষ মারা গেছেন তাতেও পৃথিবীর কোনো বিশেষ উপকার হয়নি। আপনিও মারা যাবেন। তাতে পৃথিবীর বিশেষ কোনো উপকার বা ক্ষতি হবে না। এই বস্তুজগৎ প্রত্যেক বিষয়ের প্রত্যেক জিনিসের ডজন ডজন অল্টারনেটিভ নির্মান করে রেখেছে। এই বস্তুজগতে প্রত্যেক বস্তুর নেগেটিভ ও পজেটিভ রয়েছে। লবনের যেমন উপকার ও ক্ষতি রয়েছে, আপনারও তেমনি উপকারী ও ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে আপনার চারপাশে। তারপরও আপনি বাচবেন, তারপরও আপনি হাসবেন, তারপরও আপনি সময়মতো কাদবেন। আপনার ডিপ্রেশনকে ঘৃনা করবেন না, সে আপনারই অংশ, আপনার থট প্রসেসের অংশীদার
একটি মানুষ মানুষ হলে…
একটি আলোর কণা পেলে লক্ষ প্রদীপ জ্বলে একটি মানুষ মানুষ হলে বিশ্ব জগৎ টলে লেখাটি কার আমি জানি না, তবে লেখাটি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করি। লেখা তো এমনই হওয়া চাই, জীবনের মতো উর্বর। লেখা মানে আমি মনে করি উন্নত কথা। যে কথা আইডিয়াবাহী, যে আইডিয়া জীবন বদলে দিতে পারে, জীবনকে নিয়ে যেতে পারে সত্য, সুন্দর, মহিমায় পৃথিবীর দিকে। একটি জীবন যদি অন্য জীবনের কাজে না আসে, তাহলে সেই জীবনের কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। জীবনের প্রয়োজন কেবলই জীবনের কাছে। লেখা তো সূর্যের কিরণোৎসব যা সূর্যের মতো লেখকের জৈবিক কাজ। তবে লেখাধরা আর মাছধরা এক কথা নয়, মাছ থাকে জলের নিচে যা ধরার জন্য জেলেমন হলেই যথেষ্ট, আর লেখা থাকে বোধের নিচে যার জন্য প্রেমআগ্রহ এবং লেখকমন থাকা আবশ্যক। বুদ্ধিকে যাঁরা জীবিকার মাধ্যম
নেগেটিভ মানসিকতা
নেগেটিভ মানসিকতা আই ডিসলাইক করি। নেগেটিভ মানসিকতা থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকতে চাই। তার মানে চাঁদকে আমি সূর্য হিসাবে দেখতে চাই না। চাঁদ ইজ চাঁদ। সূর্য ইজ সূর্য। আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন। বলতে গেলে প্রায় জনশুন্য। বুঝলাম তিতাস ট্রেন চলে গেছে। মেশিন কন্ট্রোলারের কাছে গেলাম। এখন কোনো ট্রেন আছে? না, নাই। ভৈরব থেকে কোনো ট্রেন আছে? আছে, তবে ধরতে পারবেন না। কেন পারবো না? চট্টলা তালশহর ছেড়ে আসতেছে, লাইন দিয়ে দিছি। আসলেই কী পারবো না? অ মিয়া আফনে আসলেই বেশি বুঝেন, বলছি পারবেন না, পারবেন না। মানছি দশ মিনিটের ভেতরে ট্রেন চলে যাবে ভৈরব। দশ মিনিটের ভেতরে আশুগঞ্জ থেকে ভৈরব যাওয়া সো মাচ সো টাফ। কিন্তু অসম্ভব না। তাই একপ্রকার রেগেই গেলাম। আমি আসলেই বেশি বুঝি, তোমার দাদার দাদার চেয়েও বেশি বুঝি এই কথা শুনে লোকটি হা করে তাকিয়ে রইলো।
মৃদু বেদনার হাসপাতালে
‘মৃদু বেদনার হাসপাতালে’ একটি কাব্যময় হাসপাতাল। এখানে সরকার আমিন প্রেমের ঔষধের মার্কেটিং করেছেন। এখানে সরকার আমিন যতটা না কবি তার চেয়ে অধিক আত্মার বিজ্ঞানী। সরকার আমিন তার জীবন নিয়ে নীরিক্ষা করেন প্রতিনিয়ত। কবিতাইও। প্রেম, চুমু, মমতা, বৃষ্টি, মেঘ, মৃত্যু, জ্বর সরকার আমিনের একান্নবর্তী কবিতাপরিবারের প্রাত্যহিক সদস্য। ‘মুগ্ধতা বিনা নিষিদ্ধ হোক বিবাহের ঘর মুগ্ধতা বিনা বুঝা যায় না দেহের জ্বর’ ছন্দের আড়ালে নীতিমালা প্রেরন করছেন সরকার আমিন। সমাজের জন্যে কবির উপদেশ তো থাকতেই পারে। কবি তো মাটির মানুষ, মঙ্গলগ্রহের বালু না। সরকার আমিন বলছেন ‘সূর্যাস্তের ঘ্রাণ এসে লাগে প্রাণে’— এই যে চিত্রকল্পের নীরব ব্যবহার তা আমরা জীবনানন্দ দাশের কবিতায় ব্যাপক দেখতে পাই। উপমান উপমিত সমাস জীবনের বাইরে এসে অনুভূতি জীবনপ্রবনকে চিত্রকল্প করে তুলার প্রয়াস সরকার আমিনের ভাষাবিন্যাসে প্রবল। তার কবিতা পাঠপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে সহজেই
দোষ, অন্যের ঘাড়
ট্রেনে দাঁড়িয়ে আছি। কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হবে কেউ জানে না, না লোকোমাস্টার, না রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। প্রতিটি সময় উৎযাপন করার পক্ষে। তাই যেই অবস্থায় আছি শুকর আল হামদুলিল্লাহ। অসহ্যবোধ করা সহজ, কারণ তাতে চেষ্টা লাগে না। আমি তো মানুষ। চেষ্টার মধ্য দিয়ে আজকের মানুষ যুক্তিশাস্ত্রের মুক্তি দিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে। তাই চেষ্টার দরজা-জানালা খুলে দিয়েছি। আমার পেট বরাবর ষাট বছর বয়সী এক চাচা। তিনি চিপস খাচ্ছেন। দৃশ্যটি বেশ এটাকটিভ। হঠাৎ চাচুর ফোন আসে। তিনি বসা থেকে উঠে দাঁড়ালেন। চাচু দাঁড়ানোর সাথে সাথে তাঁর বুড়ি সমেত পেট মহাশয় আমার স্লিম পেটে ধাক্কা মারে। আমার পেট অসহায়। কারণ তার পেছনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কিছুক্ষণ পেটে পেটে ঘষাঘষি খেলায় অনুভূতির নতুন মাত্রা যোগ হল অভিজ্ঞতার খাতায়। চাচুর পাশে একজন পুরুষ। বয়স চল্লিশ হবে।
একটি কুকরকে ভালোবেসে দেখুন
যা সহজ তা যখন আমরা সহজভাবে মেনে নিতে পারি না তখনই আমরা নিজের কাছে নিজে বিরক্তিকর হয়ে উঠি। প্রথমে সকাল দুপুর রাত নিজের মানসিক স্বাস্থ্যে চলে অবিরত অত্যাচার। তারপর আশেপাশের মানুষের উপর তার প্রভাব পড়তে আরম্ভ করে। যে মানুষ নিজের কাছে নিজে বিরক্তিকর তাকে অসীম ভালোবেসে দেখুন সে আপনার ভালোবাসা বমি করে দিবে, আপনাকে হেনস্তা করবে ঠিক আপনার ভালোবাসার সামনে। ভালোবেসে দেখুন একটি কুকুরকে, দেখবেন আপনাকে ভালোবাসাময় করে তুলার জন্য বৃষ্টির রাতেও ঠিক আপনার ছায়ার পাশে কায়া হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। কেউ কেউ আপনার সাথে মিশবে শতসহস্র আন্তরিকতা নিয়ে এবং গোপনে সিসি ক্যামেরা ওপেন করে রাখবে, হঠাৎ করে একদিন আপনি জানতে পারবেন আপনি যার সাথে আন্তরিকভাবে মেলামেশা করছেন সে আসলে মানুষ নয়, আধুনিক সিসি ক্যামেরা যে আপনার গতিবিধি নোট করছে। এইসব সিসি ক্যামেরাকে প্রোগ্রামভেবে পরিবর্তন
প্রেমকিস্তি
যখন থেকে তোমাকে মনে হলো নদী তখন থেকে নৌকা বানাতে শুরু করি কাঠাল কাঠের নৌকা শামুকভাঙা পেরেক আলতা রঙের আলকাতরা নুহ নবীর নৌকার কথা মনে আছে আমার অভিশপ্ত সবাই ডুবে গেলো জলের ত্রাসে আমার নৌকার নাম রেখেছি ‘প্রেমকিস্তি’ একদিন প্রেমকিস্তির দিকে খুব করে তাকাই দেখি বসন্ত ফুল পাতার আড়ালে লুক্রেতিউস দেখি জাম্বুরা ফুলের ঘ্রান অনিন্দ্য সুনির্মল বন্দনা অকাতরে প্রানফুল আলুর ডগার মতো বয়ে যাচ্ছে বয়ে যাচ্ছে আমার হৃদয় থেকে দেহানুভূতির পরাগরেনু প্রান্ত থেকে কেন্দ্রে প্রেমকিস্তি থেকে ঝরে গেলো অনেকগুলো বছর আশ্বিন মাসের ঝড়ও থেমে গেলো শহরের পুরাতন ইটটি কয়েকদিন আগে মারা গেলো স্বপ্নদেশ দখল করলো পরদেশী আকাশ নীল পাতলা ঠেঙি ভুলে গেলো সাতার নদীতমা তোমার জলেও আজ ঢেউ নেই কোয়ারেন্টাইন তুমি বহু বছর আগ থেকে তোমার লাশের উপর বড় বড় বিল্ডিং সোপার শপ নাইট ক্লাব নদীতমা আমার প্রেমকিস্তিও নিয়ে যাবে তারা তোমার লাশের উপর যে ফাইবস্টার দৈত্য বসানো হয়েছে তার জন্য তার লিপস্টিকের মতো চকচকে
আফালের মাছ [ ৪ ]
সাধারন এমন অসাধারন যে চোরকে মারে কিন্তু সন্ত্রাসকে ভয় পায় সাপের বিষদাঁত তুলে নিতে হয় সাপকে মারার জন্য নয় সাপ যাতে মারতে না পারে সেইজন্যে ফুল, ফুল হওয়ার জন্য গন্ধ ও সৌন্দর্য বিলায় না, গন্ধ ও সৌন্দর্য বিলায় বলে তার নাম ফুল ফেরেশতা স্বাধীনতা চাইলে শয়তান হয়ে যায় বলাকা একটি ব্লেডের নাম দীর্ঘশ্বাসের পৃথিবী হয় নীল নয় লাল The world of high exhale either blue or red জুতা নির্বাচনে আর সঙ্গ নির্বাচনে খুব বেশ চোজি হতে হয়। দুটাই চলার মিহি গতিতে থামিয়ে দিতে পারে কিংবা জীবনের গতিতে করতে পারে মসৃণ বেগবান ইবাদত করে আল্লাকে যদি পাওয়া যেতো রিক্সাচালক হতো পৃথিবীর একমাত্র টাকাওয়ালা। টাকা দিয়ে যদি আল্লাকে পাওয়া যেতো রিক্সাচালক হতো পৃথিবীর একমাত্র গরীব। কেউ যখন কোনো বিষয়ে ভালো জানে তখন
ক রো না বি ন তে কো ভি ড উ নি শ [দ্বিতীয় পর্ব]
...ধরেন, কারো নাম চান মিয়া। লোকে তাকে ডাকবে চান্দু। টাকা পয়সার মালিক হওয়ার পর তার নাম হবে চান মিয়া সাহেব। টাকা ব্যয় করে মক্কা শরীফ ঘুরে আসার পর তার নাম হবে হাজী চান মিয়া সাহেব। এমনভাবে আরও লেজের ব্যবস্থা টাকা ব্যয় করে দানবীর হাজী চান মিয়া সাহেব করতেই পারেন। আর যার অর্থতেলের ব্যবস্থা নেই তার নাম হবে টোকাই,তার নাম হবে ধোপা,তার নাম হবে কামলা। তবে আবুল খায়েরের বউ কিন্তু কোনোদিন তার নাম ধরে ডাকে না। স্বামীর নাম ধরে ডাকা পাপ। অনিন্দিতা খানম স্বামীকে স্বামী বলেই ডাকে। আবুল খায়ের তার বউয়ের কাছে জানতে চায় যদি সে গাছ থেকে পড়ে মারা যেতো তাহলে তার বউ বাকী জীবনটা কীভাবে কাটাতো। তার বউ উত্তর দেয়, ‘আমি পাগল হয়ে যেতাম।’ আবুল খায়ের আরও স্পষ্টভাবে জানতে চায়, সে