পুটিয়া বাজার। এখানে গরু পাওয়া যায়, ঘোড়াও পাওয়া যায়। পান পাওয়া যায় আবার ধানও পাওয়া যায়। কল পাওয়া যায় আবার বলও পাওয়া যায়। পুটি মাছ থেকে পুটিয়া। শনিবার বড় হাট, বুধবার তার চেয়ে ছোট হাট বসে। বাজারের পাশ দিয়ে লেকলেকে হাড়িধোয়া নদী বয়ে চলেছে। আশেপাশের বিশ ত্রিশ গ্রামের প্রধান ভরসার জায়গা এই বাজার। গ্রামের মানুষের প্রায় সব প্রয়োজন নিয়ে বসে আছে এই বাজার। এই বাজারেই এক সময় ডাকাতি হতো। জয়নাল ডাকাতের নাম এখনো মুরুব্বিদের মুখে শুনতে পাওয়া যায়। এখন আর এখানে ডাকাত আসে না। তবে কয়েকটি ব্যাংক বাজারের আশেপাশে খুব শক্তিশালী উপায়ে অবস্থান নিয়েছে। পুটিয়া বাজারকে কুফি বাজারও বলা হয়। কারন আছে। মাগরিবের পর প্রায় সব দোকানে মোটা সলতের কুফি জ্বলে ওঠতো। এখনো জ্বলে ওঠে। তবে আগের তুলনায় খুবই কম। আধুনিক বাল্ব এসে কুফিকে
Year: 2021
প্রচলিত নেশার ঘোর
আমার চাওয়া-পাওয়া একটি স্বপ্নের ফ্রেমে বাধা থাকে তুমি তখন নৃত্য করো, তুমুল নৃত্য গাছের পাতা ঝরে যাওয়ার নৃত্য কাল সারা রাত মুষলধারে বৃষ্টি হতো যদি নায়ক হতো তোমার চিরচেনা মুখটি আমি হতাম সিনেমার ভিলেন ভিলেন হওয়া ভালো সারাটা সময় আধিপত্য, শেষে পরাজয় পরাজয় যে জয়ের মাসতুতো ভাই এটা কেবল ভিলেনই জানে নায়ক হতে গেলেও ভিলেনকে স্বীকার করতে হয় শয়তান কেন শয়তান কারণ শয়তান দাস হতে পারেনি ভিলেনও সময়ের দাস নয়, মাইকেলের রাবণ এ্যালকোহলকে রঙিন পানি না ভেবে ওষুধ ভাবো দেখবে হ্যাং ওভার ইফেক্ট বলে কিচ্ছু নেই কেটে যাবে প্রচলিত নেশার ঘোর ভাবতে শিখো হিমানী, ভাবনাতেই গলদ অন্য কোথাও গলদ কিংবা ময়লা নেই চোখের সামনে ধারনার উল্লম্ফনের কারিশমা বস্তুত শিশুর হাততালিই এসথেটিক সঠিক আবেগ- বিবেগ মিথ্যার অহমিকা চোখ যত বড় হবে আসমান ততই অসীম তাই চোখ বড় করে লাভ নেই আসমানী আসমান তোমার চোখে আসবে না আমার চাওয়া-পাওয়া বিশ্বাসের কাবিনে কেনা
ব্যস্ততা এক ঔষধের নাম
হঠাৎ বুকের ভেতর যখন শুরু হয়ে যায় এক কোয়া কান্না, এক সোয়া নদী আসে চোখের ধারায়, নিথর এক শব্দ নেমে আসে নদীর চেনাজানা আলপথ ধরে। কতটুকু পেছনে গেলে অনেক দূরের অচেনা পথটা তবুও চেনা হয়ে যায় মন তখন জানে না। পাগল মনেরও একটি বাড়ি আছে, খুব গোছালো এক বাড়ি, সেখানে সে বাজার করে, রান্না করে, রোজ নিয়ম করে ঘুমায়, আবার যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমফিল করে। কতটুকু পাগল হলে সেই পাগল মনের দেখা পাওয়া যায় এ অবুঝ মন তা জানে না। আমাদের সবার একদিন সব কিছু ছেড়ে পথে বসতে হবে। কেউ হয়তো দালান বানায়, কেউ বানাবে পাহাড়। বানানোর কাজে ব্যস্ত থাকা কেবল। ব্যস্ততা এক ঔষধের নাম। কত ঔষধ খেলে হৃদয় ভুলে যায় হৃদরোগ হৃদয় তা জানে না।
আসনের লোভ
এখন বর্ষাকাল। রোজ রাত নেমে আসে আমাদের চোখে মুখে নাকে। আমাদের ঘুমেরা আর জ্বালাতন করে না। আমাদের স্বপ্নরা আর আমদানি করে না রাতজাগাপাখি। বস্তা বস্তা দুঃখ ট্রাকভর্তি করে নিয়ে যাওয়া হয় দূরে, অনেক দূরে। শাহবাগ চুপচাপ শ্রীরামচন্দ্রের ধ্যানী আসনের মতো। আমাকে যদি এখনই পৃথিবীর প্রধান করে দেয়া হয় তাহলে আমি এখনই পদত্যাগ করবো, নতুবা সন্ত্রাস দমন করবো নিজ হাতে বাঁচি কিংবা মরি। আসন পাবার পর হয়তো আমার মানসিকতাও বদল হয়ে যেতে পারে— সন্ত্রাস দমনের পরিবর্তে আমার চেয়ারের নিচে থাকবে কতিপয় পোষা সন্ত্রাস। নিজে পদত্যাগের পরিবর্তে আমার বিরুদ্ধে যারা কথা বলবে তাদের কপালে লেখা হবে পদত্যাগের শাব্দিক হিসাব। আসনের লোভ আসলেই কপালের লাল টিপের মতো, কেবলই নিজেকে দেখায়।
বিবাহিত আয়না
বিবাহিত নিসঙ্গতা আমার ফেনায়িত গোধূলিতে ঘুরেফিরে বার বার দেখা পাই হিজল বনের ক্লান্ত শরীরে বিষাদের ঝাঁকুনি হেলেন ধবংস করে মনের সাজানো নগর চলে যাওয়ার গুপ্ত বায়নায় অভিযোগের কাহিনি প্রেম তো কৃষ্ণগর্ত ভেতরে টানে রাগ, অনুরাগ, অভিযোগ, বিরাগ পুরোটা জীবন যতখানি একবিংশ শতাব্দী মাংস চিনে চিনে আরামদায়ক বসবাস দর্জির চাণক্য সেলাই প্রেম তাই সুখে থাকা আন্তরিক প্রলেপ কৃত্রিম মনে বাঁধাই হচ্ছে বারংবার সিড়িপথে সিড়ি কেবল উপরে উঠা নয় নিচে নামারও প্রস্থত পথ কাউকে অভিযোগ দিচ্ছি না, অভিযোগ দেয়া যায়না আজকের স্তব্ধ আকাশ আমারই বিবাহিত আয়না
বাওনবাইরার ভাষা [ ৭ ]
শব্দের মাঝে কিংবা শেষে ‘হ’ বর্ণ থাকলে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় প্রায় ‘হ’ বর্ণটি বিলুপ্ত হয়ে উচ্চারিত হয় ভেহেস্ত > ভেস্ত; আল্লাহ্ > আল্লা; গোনাহ > গোনা; সোবাহান > সোবান; যশোহর > যশোর; তাহসান > তাসান; শাহবাগ > শাবাগ; বাদশাহ > বাদশা; ( আরও পড়ুন ) ♥ বাওনবাইরার ভাষা [ ৬ ] ♥ বাওনবাইরার ভাষা [ ৫ ] ♥ বাওনবাইরার ভাষা [ ৪ ] ♥ বাওনবাইরার ভাষা [ ৩ ] ♥ বাওনবাইরার ভাষা [ ২ ] ♥ বাওনবাইরার ভাষা [ ১ ]
একটা পাগলকে খুঁজে বেড়াই
শান্তিনিকেতন আসলে একটা পাগলকে খুঁজে বেড়াই রোজ যে গর্ত খুঁড়ে নিজের জন্য, অনেক স্বপ্নের ভীড়ে যার হলুদিয়া মন। শান্তিনিকেতনে আসলে একটা পাগলকে খুঁজতে থাকি রোজ যে গল্প করতে করতে খাবারের কথা ভুলে যায়, যে গান গাইতে গাইতে ভুলে যায় বানানো সমাজের আদব কায়দা, যে রাতের পর রাত অন্ধকারের ভেতর হেঁটে বেড়ায়। একটা পাগলকে খুঁজি যার গলায় মানুষের মালা, যার মুখে প্রেমের কালাম, যার চোখ থেকে রোদ কান্না একসঙ্গে নেমে আসে, যে হাসতে জানে, হাসাতে জানে, যার কাছে জীবন মানে মানুষ। বীজগনিত, পাটিগনিত, ত্রিকোনমিতির হিসাব জানবে না সে, বোকা ট্রেনের মতো সে কেবল জীবন নিয়ে চলবে চলবে, ভেদিয়া গ্রামের মতো চুপচাপ সবুজ বিলাবে, অজয়ের ব্রিজে বিকাল বেলা বাতাস খেতে আসবে। সূর্য নিভে গেলে আদিম ঘরে রাখবে সে কিছু স্বপ্নের নিশান, নিশান বাতাসে উড়বে ঘুরবে
প্রয়োজনে দূরেও যাওয়া
দুই হাজার এগারো সালে আমি একখান কম্পিউটার কিনি। দুই হাজার তের সাল পর্যন্ত তার সাথে আমার সম্পর্ক ভালোই ছিল। দুই হাজার তের সালের পর তার সাথে আমার সম্পর্ক অনিয়মিত হয়ে পড়ে। যেহেতু আমি ব্রেকআপ নীতিতে বিশ্বাসী না সেহেতু বলতে পারছি না তার সাথে আমার ব্রেকআপ হয়েছিল কিংবা বলতে পারছি না পিরিতি ভাঙিয়া গেলে নাহি লাগে জুড়া। আমার প্রিয়তমা কম্পিউটার আরামসে ঘুমে ব্যস্ত, আমিও তাকে কোনো প্রকার বিরক্ত করতাম না। সে যেখানে ঘুমিয়ে থাকতো সেখানেই আমি আমার দৈনন্দিন ব্যবহার্য জিনিসপত্র রাখতাম। তার কানের কাছ দিয়ে আমার হাত চলাফেরা করত কিন্তু কখনো তার শরীরে হাতের স্পর্শ সজাগ করেনি। কিন্তু আমার বিশ্বাস ছিল আমি ডাক দেয়া মাত্র আমার প্রিয়তমা কম্পিউটার কাজ করতে আরম্ভ করবে। অনেক কম্পিউটার বিশারদ আমাকে অনেকভাবে ভয় দেখানোর চেষ্টা করেছে। আমি ভয়
মানুষকে ভালোবাসা শেখাতে হয়
আমি প্রতিদিন রাতে একগ্লাস জুস খাই। পেঁপের বা আমের বা কলার জুস। একটি দোকান থেকেই খাই। পকেটে যেহেতু টাকা এবং মনভর্তি স্বাধীনতা আছে সেহেতু যে কোনো দোকান থেকেই খেতে পারি। কিন্তু খাই না। যেখানেই থাকি জুস খাওয়ার জন্য আমি সেই দোকানে চলে আসি (ঢাকা থাকলে)। লেনদেন আমি একজায়গা থেকে করতে পছন্দ করি। আমার মোবাইল কোনো কারনে অন্য চার্জজার দিয়ে চার্জ দিলে মোবাইল গুসসা করে অনেকটা বাংলা সিনেমার এককালীন চমৎকার অভিনেত্রী শাবানার মতো। সে তখন ভালোভাবে কাজ করতে চায় না। তাই যেকোনো লেনদেনে আমি বহুগামীতা পছন্দ করি না। একবছর যাবৎ আমি সেই দোকান থেকে জুস খাচ্ছি। কিন্তু দোকানদার আমার সাথে অন্য কাস্টমারের মতোই আচরন করে। প্রতিদিন দোকানে গিয়ে আমাকে বলতে হয়, ভাই প্রয়োজনে টাকা বেশি নেন কিন্তু আমার জুস যেন ভালো হয়। সে
সুখবাসী মানুষের ভাষা
১৬১০ সাল। সুবেদার। বাংলার সুবেদার ইসলাম খান চিশতি ঢাকায় আসন পাতেন। সুবেদার সাহেবের সাথে অসংখ্য পশ্চিম ভারতীয়, আফগান, ইরান-আরবি তথা বহিরাগত মুসলমান-সনাতনী ঢাকায় আসেন। এই আগমন ধারা আরও প্রায় ২৫০ বছর চলমান থাকে বুড়িগঙ্গা নদীর তীর ধরে। সুবেদার ইসলাম খান চিশতিকে মেন্টর মনে করে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে গড়ে উঠা এই বিশাল জনস্রোতের ধারাই আজকের পুরান ঢাকা। তবে আলো ব্যবসা জুতা ব্যবসা আলু ব্যবসা মাছ ব্যবসাকে কেদ্র করে প্রচুর মিশ্রিত জনস্রোত এই পুরান ঢাকায় পাওয়া যায় যা সুবেদার সাহেবের রচিত জনস্রোতের বাইরে। পুরান ঢাকার মানুষ যে ভাষায় কথা বলে তা মূলত সোব্বাসী ভাষা। সুখে বাস করা বা সুখবাস থেকে সোব্বাস। সোব্বাস ঢাকাইয়ারা সুখকে বলে সোখ। সুখ থেকে সোখ, ফলে সুখবাস থেকে সোব্বাস। পুরান ঢাকার মানুষ যে সুখে বসবাস করতে পছন্দ করে তার অনেক