সব নদীই কেমন যেন পুরাতন হয়ে যায় সব ঘাসেই কেমন যেন ময়লা জমে আমাদের বাড়ির সামনে অনেক সুন্দর একটি বাড়ি গড়ে ওঠেছিল— নির্জন মাঠ, সবুজ পোশাক, দক্ষিনা বাতাস— প্রকৃতির সুন্দর আয়োজনে ছিল বাড়িটি। আজ বাড়িটি শুধুই বাড়ি। তামাটে বর্নের নদীকন্যা ছিল চোখের সামনে, তার দেহে ছিল বাঁক, বাঁকে ছিল অজস্র জোয়ার, তাও আজ খরচ হয়ে গ্যাছে সময়ের নিহাদ ফ্যাশনে ওয়াল্ডে। যারা কালো চশমা পরে আমার চোখের সামনে দিয়ে হিরোবেশে পত পত করে হেঁটে যেতো তারা এখনো তেমনই আছে, তেমন নেই আর তাদের সম্পর্কে আমার ভাবনা, আমি এখন জেনে গেছি মাকাল ফল কেন এতো রূপ নিয়ে চেয়ে থাকে অহর্নিশ। মাকালের ঘর নেই, মাকালের নিজস্ব কোনো আকাশ নেই। সৎ হলে বলা যায় পাখি আকাশে উড়ে সৎ হলে বলা চলে মানুষের ঘর আছে আমাদের ঘর আছে সাগরে রয়েছে পৃথিবী, পৃথিবীর রয়েছে মাসিকস্রাব— জোয়ার। জোয়ারের
Year: 2021
লিলিথকাব্য
রাধাস্নাত প্রকৃতি আমার ঝরা একখান মায়া আধখান প্যাঁচানো মারীচকায়া, আধখান ফানুসপায়া প্রকৃতিমানব শূন্য হয়েছে কৃষ্ণশূন্যতায় হংসমৈথুন আস্তানা গড়েনা দাহ্যমথুরায় লীলাপদ্ম কেন পেতেছে আসন আয়ুনঘোষ কাতরায় লিলিথকাব্য আকাশ হয়েছে ভাঙামেঘ উড়ে যায় বড়ায়ি তোমার ইচ্ছাপাখা মেলে ধর রাধাপৃথিবী বাতাস হয়েছে অনলে আনলে কৃষ্ণপাতা হেলিয়ে পড়ে লিলিথকমলে
বেহুলা ভাসান আমাদের নদী
ভুলে যেও আমাকে ভুলে যেও জলে স্থলে আকাশে বাতাসে ভুলে যেও ভুলে যেও আমাকে শব্দ হয়ে জীবিত থাকো মুখ থেকে মুখে বৈশাখ থেকে চৈত্রে জীবিত থাকো মাসের পর মাস জীবিত থাকো ব্রা প্যান্টি আন্ডারওয়্যারের মতো শতভাগ প্রায়োগিক দূরে ভাসতে ভাসতে অচেনা দ্বীপ আমি অচেনা গ্রহ কোনো পৃথিবীর দামি বিজ্ঞানীর কালকেতু ফুল্লরা তোমাদের ইতিহাস চকেট সংকট আমাদের কালের রাজহাস চকলেটলোভা গরীব অসহায় শিশুর মতো আমাকে ডাকবে না আর ভুলে যেও বারান্দায় ঝুলে থাকা শুকনো কাপড়ের মতো বাতাস আর সূর্যকে ভুলে যেও ঘুম আমার চোখেও নামে রাত আমার দেহেও বহে বসন্তগান আমিও গাইতে চাই আমিও চিনি উত্তর চিনি দক্ষিনের হাওয়া বর্ষার নবোপলীয় জল আমিও রক্ত মাংসের মানুষ একা ভুলে যেও সমস্ত কিছু নিয়ে একটা আকাশ একটা দুঃখ একটা সাইকেল রিংকেল একটা সকাল বেলার রজনীগন্ধা একটা সৃজনী শিল্পগ্রাম একটা প্রান্তিক রেলওয়ে স্টেশন একটা হুগলী নদী নীরব সুনসান ভুলে যেও ঝগড়াসমগ্র ভুলে গেলেই বেচে যাবে তুমি বেহুলা ভাসান আমাদের নদী
সময়ের ঢেউয়ের তালে
আমি মানে নিরাকার। যত গভীরে যাই ততই ছোট হয়ে আসে আমার চোখ কান নাক গলা মুখ। মুখের গল্প যেন সময়ের ফেনা— সময়ের ঢেউয়ের তালে ফেনাদের জীবন। একদিন একদিন করে মানুষ মরে যায় মানুষ মরে যেতে যেতে আশার বীজ রেখে যায় । আশার বীজ থেমে গেলে হৃদয়ের ঘাটে পানাফুল ফুটে— থেমে যাওয়ার নাম গতি, পরাজিত জীবন জয়ের বাতাস। নিরাকার আমির নাম নেই কোনো, কত নামে ডাকে লোকে আমাকে তোমাকে, আমাকে দেখা যায় না তবুও দীর্ঘজীবী কার্বন কপি আসে সময়ের ফ্লেপে। বাস্তব এমনই যা দেখে না তাকে দৃশ্য বলে যা শুনে না তাকে কথা বলে যা বুঝে না তাকে বোধ বলে এক চমৎকার অদৃশ্যের ভেতর কেটে যায় রাধাফুল জীবন, হরতাল, হাতিয়ার— আমার ঘরে আমিই নিরাকার।
ঝাউখোলাচোখ
গোলাপের যৌবন গন্ধে বাড়ে চাদের বয়স কমে জোছনায় জলের ছন্দে বাড়ে শাপলার বুক লোভে বাড়ে আকাঙ্খা বেদনা শোক রাত না দিন বুঝে উঠা কঠিন ঝাউখোলাচোখ মাছধরাঘুম স্বাধীন স্বাধীন কাপে বাড়ে চায়ের বয়স— জন্ম-মৃত্যু তার কাপের পৃথিবী চোখে বাড়ে চিরচেনা আকাশ— সাদা নীলের চলক ধ্রুবক অপেক্ষায় বাড়ে প্রেমিকের সাজ— চোখের নয় মনোমাদক কান্নায় কমে রোগের বয়স— বিনা নোটিশে অতি উত্তম নগদ কথায় কমে কাজের বহর— উদাস উচাটন গম্ভীর সর্বগত
গড় হিসাব আর বোরখার গল্প
বোরখা বিক্রি বাজারে বেড়েছে। মুসলিম মুমিনার সংখ্যা বাজারে বেড়েছে। এখন প্রত্যেক ঘরে ঘরে জন্ম নিবে আল্লার অলী। কারন মা যদি হয় মরিয়ম সন্তান হবে ইশা রুহুল্লাহ, মা যদি হন আমেনা ছেলে হবেন হযরত মোহাম্মদ ()। যেহেতু পর্দা নারীর হাতপায়ের মতো আরেকটি গুরুত্বপূর্ন অঙ্গ সেহেতু পর্দানশীল নারী ব্যতীত ফরহেজগার সন্তান আশা করা যায় না। জান্নাতের প্রত্যেক বিভাগে পর্দানশীল আমার বান্ধবীরা থাকবেই থাকবে ইনশাল্লাহ। এতক্ষন একটি গড় হিসাব হাজির করলাম। গড় হিসাব, মাথাপিছু আয়, জাতীয় আয় প্রভৃতি হিসাব অনেক সময় হাস্যকর। ধরেন একটি দেশে দশজন মানুষ। দুইজন মানুষের কাছে আছে দশ হাজার টাকা, ছয়জনের কাছে দুই হাজার, একজনের কাছে একশ টাকা, এক জনের কাছে কোনো টাকাই নাই। গড় হিসাব করলে যার কাছে টাকা নেই তার মাথায়ও একটি বিশাল অর্থপরিমান চলে আসবে, অথচ লোকটির
অচিন গন্ধ চেনা সুরে গান ধরে
সকাল বেলা দেখা হয়েছে কোন এক শুক্রবারের লগে। লাল শুক্রবার বলতে একখান কথা আছে। মা হিসাব করতেন শুক্করে শুক্করে আসট। কত লাল কিংবা আসট শুক্রবার জীবন থেকে চলে গেল দূরের কোনো এক অচেনা গ্রামে যেখানে সূর্য আসে না— থাকে শুধু অন্ধকার থাকে না বনলতা সেন থাকে না হাঁটাবাবা থাকে শুধু বন্ধ্যাকাল সময় এক নিষ্ঠুর ধারনা যা মানুষ বানিয়েছে বারবার। কাগজে ফুল গন্ধে মাতাল হাওয়া ভুলানো চোখের ভেতর। ভেতর ভেতর ভাই ভাই হলেও দ্বীপ একটা আছেই জলের চারিধারে। ভেতরে ভেতরে গন্ধ রোপন করলে আলো এসে কিলবিল করে জলপাই বনের গহীন প্রানে— তীব্র প্রান চাই আরও আরও তীব্র বিরাট এক ব্যথা প্রানে এসে থেমে যাবে কম্পনে কম্পনে। সরিষা ফুলের গাছে পাখির মতো পোকা বসে দিনরাত। কোথাও কোন আলো নেই— অন্ধকার। বিরাট এক অন্ধকারে মানুষ আরও মানুষ হয়ে পথ চলে সমবায়
মানুষ, পাপ আর শয়তানের প্ররোচনা
মানুষ পাপ কাজ করে। লোকে বলে শয়তানের প্ররোচনা। শয়তান কার প্ররোচনায় করেছিল পাপ— অমান্য করেছিল পরম দয়াল? মানুষের পায়ে চুমু দিয়ে দেখি মানুষ মহান। মানুষের হাতে হাত রেখে দেখি মানুষ অসামান্য ধনবান। ফুল ফল ঘাসময় মানুষের ইতিকথা। মানুষ হাসলে সূর্যজোয়ার নামে পৃথিবীর পাতায়— কাঁদলে নদীজল দেখায় তীরঘেষা জোয়ার। জোয়ার ভাটায় পড়ে আয়ুরেখা খেলা করে— চোখে বালুপড়া কথা নিয়ে মাস্টার সাজে কতশত ধর্মরূপকথা। ভুলফল ভুলকল ভুলদল নাপাক থেকে পাক পাক থেকে নাপাক শুরু থেকে শেষ শেষ থেকে শুরু গুরু থেকে জুরু আদার ব্যাপারী— জাহাজের খবর প্রথম সত্য আজও মিথ্যা আজও সত্য নয় প্রদর্শিত ধর্মপর্দা অর্থের শখ বালুতে মিশে যায় অর্থের যশ কথাসুখ দোতরায় ঢিল দিলে দেখা যায় জলের নাচন মিথ্যা সুখে প্রাসাদ বানায় কুরুক্ষেত্র আশ্বিনের মাস ফাল্গুনে সবুজ পাতায় ব্যর্থ সংসার যা দেখো যা দেখাও ব্যর্থ সবই সন্ধ্যা বেলায় কাগজের নৌকায় জলে নেমে জলে ডুবে যাওয়া এতো শূন্যতার ভেতর কাকে
বৈষম্যের স্রোতে সমতার স্লোগান
বস্তু মাত্রই অসংখ্য অণু বা কণার সমষ্টি। প্রতিটি কণা স্বতন্ত্র ওজন নিয়ে পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে আকর্ষিত হচ্ছে। ভূ-কেন্দ্র হতে প্রত্যেক কণার দূরত্ব অধিক হলে পাশাপাশি অবস্থিত কণাগুলোর ওপর পৃথিবীর আকর্ষণ বল পরস্পর সমান্তরাল ও সমমুখী। বস্তুটিকে যেভাবেই রাখা হোকনা কেন এ সমস্ত সমান্তরাল বলগুলোর লদ্ধিবল একটি বিন্দুতে ক্রিয়াশীল থাকে। এই বিন্দুই হলো বস্তুর অভিকর্ষ কেন্দ্র বা ভার কেন্দ্র। ভার কেন্দ্রের আচরণ, গতিবিধি বস্তুর অন্য কেন্দ্র থেকে আলাদা। সেন্ট্রাল অব গ্রেভেটির কারনে বস্তুর মধ্য থেকে কিছু অংশ আলাদা হয়ে যায়। সুতরাং ল অব নেচারের কারনে বৃহত্তর পরিসীমায় বৈষম্যে থাকবে তাইতো স্বাভাবিক। শীতকালে সূর্য পৃথিবী থেকে অনেক দূরে অবস্থান করে। পৃথিবীর তাপমাত্রা কমে যায়। সূর্যের অবস্থানের কারনে পৃথিবীর কোথাও তাপমাত্রা হিমাংকের নিচে নেমে আসে। অল্প তাপমাত্রায় আর অধিক তাপমাত্রায় উৎপাদিত ফসল কখনো এক নয়।
উল্টোরথ
তিনি উপোস থাকবেন, মাঝে মাঝে ইফতার করবেন, তাও আবার ধার করা টাকা দিয়ে। কারন তিনি লেখক। উপোস না থাকলে তো লেখক হওয়া যায় না, মানুষের কষ্ট অনুধাবন করা যায় না। তাঁর বউ এক শাড়ি দিয়ে বছর শেষ করে দিবে। কারন তার স্বামী লেখক। তাঁর সন্তান টাকার অভাবে ফাইনাল পরীক্ষা দিতে পারবে না। কারন একটাই তার বাবা লেখক। তাঁর বাবা ভালো একটি পাঞ্জাবি কিনতে পারবে না, ভালো পোশাকের অভাবে নামাযের শেষ কাতারে তাঁর জায়গা। কারন তিনি লেখকের বাবা। আর তিনি মাঠ দিবেন, মাঠে মঞ্চ তৈরি করে দিবেন, মঞ্চে কিছু লোক বক্তৃতা দিয়ে খ্যাতি অর্জন করবে, কিছু লোক মঞ্চে ওঠতে না পারার ব্যর্থতায় লেখার খাতাটিকে বক্তব্যের মঞ্চ বানাবে। তাহলে তিনি কে? তিনি আমাদের সবার হুজুর, হুজুরে আযম বিত্তবান, অর্থবান ভদ্রলোক। তিনি পালঙ্কে আরাম করে বসবেন, জর্দা দিয়ে