প্যান্ডোরার বক্স দুঃখের জন্মভূমি। এই বক্স খোলা হলে পৃথিবী প্রথমবারের মতো দুঃখের সাথে পরিচিত হয়। আজ পর্যন্ত দুঃখের শাষণ চলছে, শোষণ মেনে নিচ্ছি আমরা। মেনে নেয়াতে আনুগত্য থাকে, মুক্তি থাকে না। অনেকে হয়তো গোপনে তার সাথে টেবিলের নিচের কাজটি সম্পূর্ণ করেছেন। নতুবা এতদিন জনাব দুঃখ টিকে থাকেন কীভাবে? আমরা এর প্রমাণও পাই— হে দারিদ্র, তুমি মোরে করেছ মহান। তুমি মোরে দানিয়াছ খ্রীস্টের সন্মান কণ্ঠ-মুকুট শোভা দিয়াছ, তাপস, অসঙ্কোচ প্রকাশের দুরন্ত সাহস আহারে! দরিদ্রতা নিয়ে কী রোমান্স। বিকশিত হওয়ার অনেক মাধ্যম বিদ্যমান। দরিদ্রতা প্রধান মাধ্যমে কেন? বরং দরিদ্রতা মানসিক বিকাশের পথে প্রধান অন্তরায়। যাদের নুন আনতে মজুদকৃত পান্তা ফুরিয়ে যায় তারা জানে না সাগরের ইলিশের স্বাদ কেমন। আর আকাশের তারা, শেকড়বিহীন বটবৃক্ষ, সাপ প্রভৃতি তো তাদের দেবী, দেবতা, যাকিনা অনেকের কাছে গ্রহ-উপগ্রহটির, বৃক্ষ, প্রাণি। অর্থনৈতিক
Year: 2021
তেইশ নম্বর তৈলচিত্র
‘তেইশ নম্বর তৈলচিত্র’ আলাউদ্দিন আল আজাদের প্রথম উপন্যাস। জাহেদ নায়ক চরিত্র যার মাঝে আত্মবিলুপ্তি ঘটেছে। জহু একটি নারী চরিত্র যে আত্মহত্যা করেছিল। আত্মহত্যার কারণ বিয়ে। জহুকে পঞ্চাশ বছর বুড়োর সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিল তার অবিভাবক। বুড়োকে স্বামী হিসাবে মেনে নিতে পারে নি জহু। তখন হয়তো নিন্ম-মধ্যবিত্ত সমাজে চা খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়নি। হলে হয়তো আত্মহত্যার পরিবর্তে এক কাপ চা খেতে পারতো জহু। আমাদের রেলমন্ত্রীর (মুজিবুল হক) বিয়ে করার প্রচার-প্রচারণাও জহুর বেঁচে থাকার কারণ হতে পারতো। ‘তেইশ নম্বর তৈল চিত্রে’র নায়িকা ছবি। তার সৌন্দর্য কবিতাসুলভ। বাঙ্গালি নারীর যে ললিত মানসিকতা তা আমরা ছবির কথা, কাজে, আচরণে প্রত্যক্ষ করি। জাহেদ আর ছবির সম্পর্কের নির্মাণ চমৎকার। জলনীতি সম্পর্ক নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে। পরিচয় থেকে প্রেম, প্রেম থেকে গভীর আলাপন, গভীর আলাপন থেকে বিয়ে, দাম্পত্য জীবনে সুখ আর সুখ।
পথ চেয়ে রবো হে নবী
আর কতকাল পথ চেয়ে রবো হে নবী রহমতের দরজা খুলে দেন আলো আসুক অন্তরে বয়ে যাক কল্যানের ধ্যান গরীবদের চোখে ধরা দেন গরীবদের মনে হয়ে আসুন তৃষ্ণা নিবারন প্রেম। হে তুলনাহীন অতুলনীয় রূপের মহাকাব্য আশরাফ আপনি শান্তি মহিমার গদ্য তুলে নেন আপনার নৌকায় আমাদের আপনি মহান মানুষের পথে সহজ সুন্দর সত্য। জান্নাতের সুগন্ধি আপনি সকলের প্রশংসা আপনার সেবায় রয়েছে লাখো লাখো ফেরেশতা আপনার দরবার মহান অসীম রয়েছে উদার মহানুভবতা তুলে নেন আমাদের আপনার প্রেমের নৌকায়। দুনিয়ার কষ্টকে জানার শক্তি দেন আমাদের শুকনো হৃদয়ে সবুজ ছায়ার মায়া দেন আপনি ছাড়া আমরা তৃষ্ণাদগ্ধ আপনি ছাড়া আমরা উদভ্রান্ত উদভ্রান্ত মনে আপনি পথের ছায়া হয়ে দিশা দেন বিষাদের সাগর থেকে প্রেমের ডাঙার আমাদের তুলে নেন। (উর্দু কবিতা থেকে অনূদিত)
হাওড় নয়, হাওড়ের মতো
নবীনগর উপজেলার পূর্বাংশে নাটঘর ইউনিয়নের অবস্থান। নাটঘর ইউনিয়নের আয়তন ৬,৪৭৬ একর (২৬.২১ বর্গ কিলোমিটার)। জনসংখ্যা প্রায় তিরিশ হাজারের মতো। এই নাটঘর ইউনিয়নের একটি গ্রাম রসুলপুর। মাত্র একটি ব্রিজকে কেন্দ্র করে এটি ইদানিং হয়ে উঠেছে মানুষের বিনোদন কেন্দ্র। বর্ষাকালে প্রচুর মানুষ একটু শ্বাস ফেলার ইচ্ছায় চলে আসে এই রসুলপুর গ্রামে। এই গ্রামের এক পাশে তিতাস নদী। বর্ষার জলে তিতাস নদী যখন টইটুম্বুর হয়ে ওঠে তখন চাষের জমি হয়ে ওঠে তরতাজা জলল প্রাণ। বাংলাদেশের মানুষ জল পছন্দ করে পছন্দ করে জলগোষ্ঠী জলের স্বাভাবিক ধারা-উপধারা প্রবাহ। রসুলপুর ব্রিজ থেকে একটি রাস্তা সোজা চলে গেছে বিদ্যাকুটের দিকে। বর্ষাকালে এই রাস্তার দুই ধারের ধানি জমিতে কেবল জল আর জল। হাওড় নয় তবে হাওড়ের মতো (গ্রীষ্মকালে হাওরকে সাধারণত বিশাল মাঠের মতো মনে হয়, তবে মাঝে মাঝে বিলে পানি
আশ্বাস, কেবল আশ্বাস
এইদিনে এইদেশে নদীর কোনো ভবিষ্যৎ নেই মানুষের নেই আবাসিক সুখ লাল টুপি সাদা টুপি কেবল আদর্শের কথা বলে ঘরে নেই বাইরে নেই খাবারের সুখ ডানা থাকলে আকাশে ওড়া যায় না প্রিয়তমা আমার, ডানার ভেতরে খুব ভেতরে একটা মধ্যাকর্ষনভেদী শক্তি থাকা লাগে— শক্তি নাই শক্তি নাই পাখির ডানায় শক্তি নাই। যে পাখির ডানা ওড়ে সেই পাখির মুখ বলে না ত কথা, যে পাখি উড়তে পারে না তার কথামিছিলে মুখরিত সবপাশ। আজকাল কথার স্বপ্নজাল আজকাল আদর্শের ভুংভাং গান নয় আজকাল আওয়াজের টুংটাং ম্যাকাপের ওজনে ভারী হয় সুন্দরীর মুখ বিলাসীতার রঙ্গে রঙিন হয় যুবকের কার্পেট। একটু পরে ঠান্ডা নামবে বলে আশ্বাস দেয় আবহাওয়াবিদ অনেকদিন অনেক বছর পরেও গরমের কাল হাত পেতে থাকে বুক পেতে থাকে গরমের কাল শেষ হয় না ত আর কেবল আশ্বাস কেবল আশ্বাস আমার মাথা থেকে ঘাম পায়ে গিয়ে পড়ে, পায়ের ঘাম পায়েই শুকায়, মানুষের জীবন মানুষে খায়, মানুষের মাংস
প্রিয়তমা উপলব্ধি
প্রতিদিন কোটি কোটি নক্ষত্র জন্মগ্রহন করে আবার কোটি কোটি নক্ষত্র মারা যায়। কোটি নক্ষত্রের মাঝে একটি নক্ষত্র আমার চেনা। একটি নক্ষত্রের সাথে আমার দেখা হয় রোজ বৈঠকে খাবার টেবিলে, ধ্যানে জ্ঞানে চিন্তায়। তাকে আমি হাত দিয়ে স্পর্শ করতে পারি না, তার স্পর্শ অনুভব করি। তার নাম নেই, সে এক উপলব্ধির নাম, আমার সেই প্রিয়তমা উপলব্ধি জলিমা। জলিমা, পৃথিবী থেকে আরেকটি সপ্তাহ চলে গেলো, আরেকটি ধাপ এগিয়ে গেলাম মৃত্যুর পথে। মৃত্যু কোনো সাধারন সমীকরন নয়, মৃত্যু একটি পূর্নাঙ্গ জীবন বিধান। আজও আমার অগোছালো চুলে তোমার হাতনিড়ানি এগিয়ে আসেনি প্রিয়তমা শিহরনের কোনো আমাজিং এলাকায়। কিন্তু আমি তো তোমার অধরা হাতের ছায়াশিহরন অনুভব করি দেহের প্রত্যেক নালায়। উপলব্ধি আর স্পর্শের মাঝে যতটুকু শুন্যতা ততটুকু অস্থিরতা এই হৃদয়কে সহ্য করতে হয় অসীম সীমানার অব্যক্ত সন্ধ্যার কোনো এক
পথে থেকো প্রাণ
আজ তুমি দূরে, অনেক দূরে, যতটুকু দূরে গেলে দিগন্তেরও একটা অর্থ দাঁড়ায়। আজ তুমি অনেক দূরে যতটুকু দূরে গেলে আমার কান্নাও কাব্যতে মানায়। সোনালু ফুলের মতো আমি হয়ত মাকাল, হয়ত রজনীগন্ধা চোখের ভেতর, মনের ভেতর, আড়ালের ভেতর আড়াল। তোমাদের চেনা পৃথিবী ডাকে না আমাকে। তারপরও পৃথিবীতে জন্ম আমার। ঝিনুকের খোলসের মতো আমি প্রতিদিন খুলে খুলে পড়ি তোমাদের চিরচেনা গন্ধ অনিন্দ্য নিন্দা। কেমন আছে তোমাদের পৃথিবী যেখানে আমার সামাজিক হওয়ার কথা? অসামাজিক অভ্যাসে আজ তুমি দূরে বহুদূরে যেখানে মেঘ আবেগ হয়ে ঝরে। আমি ছোট হতে হতে ছোট্ট হয়ে যাই, হয়ে যাই দুর্বাঘাসের সবুজ যেখানে তুমি নগ্ন পায়ে হাঁটো। আরও কত ছোট হলে মাননীয়া তোমার মন নগ্ন ফুল হয়ে উঠবে আমার ঘ্রাণের কাছে, প্রাণের কাছে? আঁধার থেকে আধারের দূরত্ব জেনেও মানুষ হতে চাই, মানুষের কানাকড়ি
তোমার চলন দেখে…
চলন্ত ট্রেন কখনো জানে না তার গতি কতটুকু তোমার চলন দেখে আমাকে থামতে হয় ভাবতে থাকি নাপা কিংবা প্যারাসিটামলে চলবে কিনা কিন্তু না তুমি হালুবালু পথচারী, ক্রনিক রোগীর মতো হাউসে চলো মিউটেশনে জন্ম দাও অগোছালো মেঘ আমি তো পাহাড় নই, ছোঁয়ে যাবো তোমার শরীর তাই দূর্বাফুলে চোখ রেখে আয়ুর ইতি টানার সিদ্ধান্তে অটল ভাসমান মেঘ কিংবা কম্পনজনিত আবেগে নয় উপসংহার: তোমার মনের হাসপাতালে অনেক রোগী আমার দেশে ডাক্তারের ক্রাইসিস
হৃদয় মারা যায় হৃদয়ের অনিত্য ভুলে
বাতাসের শব্দ কানের কাছে এসে ঘরের কথা বলে মানুষের গান চড়ুই পাখির মতো একলব্য সত্যাগ্রহ লাল আলো সামনে সবুজ বাতি আরেকটু সামনে পেছনের সিটে প্রজন্মের ডাক সূর্য থেকে আজকের পৃথিবী, ধার্মিক বলবে অন্য কথা রূপকথার মতো তবু কানের কাছে ঘেনঘেন সবুজ পাতার নিচে দোয়েলের দাম্পত্য প্রজাপতি মারা গেলে কবর দিও ফুলে হৃদয় মারা যায় হৃদয়ের অনিত্য ভুলে সামনে ফুল তার যথারীতি পেছনে হৃদয়ের ভুল তার একটু সামনে সমবায় ডাহুক কামুক ডাহুকের যৌবন জল গলাবাহিত স্রোত একদিন একদিন করে জন্ম দেয় পানাফুলদল— ধার্মিক বলবে অন্য কথা কদমফুল ধরতেই পারি না প্রিয়তমা হাসতেই পারে না ভোগের ইবাদত বসে ঘরে বাইরে মার্কেটে কিংবা প্রেমিকার একান্ত মনের ইচ্ছারুমে মন ন বুঝে তুমি মন ন বুঝায় আমি আমাদের এখন ন বুঝার সমবায় কাল তবু কানে যেন বাজে দানে দানে পে লেখা হে খানেওয়ালাকা নাম ট্রেন লেইট করে ট্রেন লেইট করলেও স্টেশনে থাকা যাত্রীবাহী কাম
পেটুক বাবাজী, অভুক্ত ভক্ত
সবাই বলে বাবাজী অল্প খায়। আমিও তাই দেখি। কিন্তু বাবাজী না খেয়ে স্বাস্থ্য এতো ভালো রাখেন কীভাবে? সারা শরীরে শুধু মাংস আর মাংস। টুল মাংস মিনিমাম আশি কেজি তো হবেই। অনেক ভক্তপ্রাণ মুরিদও বলে বাবাজীর খেতে হয় না। বেশি খেলে আত্মা মারা যায় এমন ওয়াজ বাবাজীও করেন। ধরেই নিয়েছি জান্নাতের সাথে বাবাজীর সরাসরি যোগাযোগ আছে। জান্নাতী খাবার অল্প হলেও হাই প্রোটিন সমৃদ্ধ। আল্লার ফেরেশতা নিশ্চয় খাদ্যদ্রব্যে ফরমালিন মেশায় না। আমারও ফরমালিনমুক্ত খাবার খেতে তীব্র ইচ্ছা। তাই বাবাজীর শিষ্যত্ব গ্রহণ করলাম। তাঁর সাথে সাতদিন ছিলাম। আমার শরীরের মাংস দুই কেজি বেড়েছে। তাহলে কী বাবাজী আমার জন্যও জান্নাতের রেস্টুরেন্টে খাবারের বিশেষ ব্যবস্থা করেছিলেন? অবশ্য, কেন নয়! দয়াল বাবা কেবলা কাবা! তবে দয়াল বাবার জান্নাতের নাম সাধারণ মানুষের বিশ্বাস। দয়াল বাবা সরল মানুষের বিশ্বাসকে পুঁজি করে শরীরের মাংস