যা সহজ তা যখন আমরা সহজভাবে মেনে নিতে পারি না তখনই আমরা নিজের কাছে নিজে বিরক্তিকর হয়ে উঠি। প্রথমে সকাল দুপুর রাত নিজের মানসিক স্বাস্থ্যে চলে অবিরত অত্যাচার। তারপর আশেপাশের মানুষের উপর তার প্রভাব পড়তে আরম্ভ করে। যে মানুষ নিজের কাছে নিজে বিরক্তিকর তাকে অসীম ভালোবেসে দেখুন সে আপনার ভালোবাসা বমি করে দিবে, আপনাকে হেনস্তা করবে ঠিক আপনার ভালোবাসার সামনে। ভালোবেসে দেখুন একটি কুকুরকে, দেখবেন আপনাকে ভালোবাসাময় করে তুলার জন্য বৃষ্টির রাতেও ঠিক আপনার ছায়ার পাশে কায়া হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে। কেউ কেউ আপনার সাথে মিশবে শতসহস্র আন্তরিকতা নিয়ে এবং গোপনে সিসি ক্যামেরা ওপেন করে রাখবে, হঠাৎ করে একদিন আপনি জানতে পারবেন আপনি যার সাথে আন্তরিকভাবে মেলামেশা করছেন সে আসলে মানুষ নয়, আধুনিক সিসি ক্যামেরা যে আপনার গতিবিধি নোট করছে। এইসব সিসি ক্যামেরাকে প্রোগ্রামভেবে পরিবর্তন
Month: June 2021
প্রেমকিস্তি
যখন থেকে তোমাকে মনে হলো নদী তখন থেকে নৌকা বানাতে শুরু করি কাঠাল কাঠের নৌকা শামুকভাঙা পেরেক আলতা রঙের আলকাতরা নুহ নবীর নৌকার কথা মনে আছে আমার অভিশপ্ত সবাই ডুবে গেলো জলের ত্রাসে আমার নৌকার নাম রেখেছি ‘প্রেমকিস্তি’ একদিন প্রেমকিস্তির দিকে খুব করে তাকাই দেখি বসন্ত ফুল পাতার আড়ালে লুক্রেতিউস দেখি জাম্বুরা ফুলের ঘ্রান অনিন্দ্য সুনির্মল বন্দনা অকাতরে প্রানফুল আলুর ডগার মতো বয়ে যাচ্ছে বয়ে যাচ্ছে আমার হৃদয় থেকে দেহানুভূতির পরাগরেনু প্রান্ত থেকে কেন্দ্রে প্রেমকিস্তি থেকে ঝরে গেলো অনেকগুলো বছর আশ্বিন মাসের ঝড়ও থেমে গেলো শহরের পুরাতন ইটটি কয়েকদিন আগে মারা গেলো স্বপ্নদেশ দখল করলো পরদেশী আকাশ নীল পাতলা ঠেঙি ভুলে গেলো সাতার নদীতমা তোমার জলেও আজ ঢেউ নেই কোয়ারেন্টাইন তুমি বহু বছর আগ থেকে তোমার লাশের উপর বড় বড় বিল্ডিং সোপার শপ নাইট ক্লাব নদীতমা আমার প্রেমকিস্তিও নিয়ে যাবে তারা তোমার লাশের উপর যে ফাইবস্টার দৈত্য বসানো হয়েছে তার জন্য তার লিপস্টিকের মতো চকচকে
আফালের মাছ [ ৪ ]
সাধারন এমন অসাধারন যে চোরকে মারে কিন্তু সন্ত্রাসকে ভয় পায় সাপের বিষদাঁত তুলে নিতে হয় সাপকে মারার জন্য নয় সাপ যাতে মারতে না পারে সেইজন্যে ফুল, ফুল হওয়ার জন্য গন্ধ ও সৌন্দর্য বিলায় না, গন্ধ ও সৌন্দর্য বিলায় বলে তার নাম ফুল ফেরেশতা স্বাধীনতা চাইলে শয়তান হয়ে যায় বলাকা একটি ব্লেডের নাম দীর্ঘশ্বাসের পৃথিবী হয় নীল নয় লাল The world of high exhale either blue or red জুতা নির্বাচনে আর সঙ্গ নির্বাচনে খুব বেশ চোজি হতে হয়। দুটাই চলার মিহি গতিতে থামিয়ে দিতে পারে কিংবা জীবনের গতিতে করতে পারে মসৃণ বেগবান ইবাদত করে আল্লাকে যদি পাওয়া যেতো রিক্সাচালক হতো পৃথিবীর একমাত্র টাকাওয়ালা। টাকা দিয়ে যদি আল্লাকে পাওয়া যেতো রিক্সাচালক হতো পৃথিবীর একমাত্র গরীব। কেউ যখন কোনো বিষয়ে ভালো জানে তখন
ক রো না বি ন তে কো ভি ড উ নি শ [দ্বিতীয় পর্ব]
...ধরেন, কারো নাম চান মিয়া। লোকে তাকে ডাকবে চান্দু। টাকা পয়সার মালিক হওয়ার পর তার নাম হবে চান মিয়া সাহেব। টাকা ব্যয় করে মক্কা শরীফ ঘুরে আসার পর তার নাম হবে হাজী চান মিয়া সাহেব। এমনভাবে আরও লেজের ব্যবস্থা টাকা ব্যয় করে দানবীর হাজী চান মিয়া সাহেব করতেই পারেন। আর যার অর্থতেলের ব্যবস্থা নেই তার নাম হবে টোকাই,তার নাম হবে ধোপা,তার নাম হবে কামলা। তবে আবুল খায়েরের বউ কিন্তু কোনোদিন তার নাম ধরে ডাকে না। স্বামীর নাম ধরে ডাকা পাপ। অনিন্দিতা খানম স্বামীকে স্বামী বলেই ডাকে। আবুল খায়ের তার বউয়ের কাছে জানতে চায় যদি সে গাছ থেকে পড়ে মারা যেতো তাহলে তার বউ বাকী জীবনটা কীভাবে কাটাতো। তার বউ উত্তর দেয়, ‘আমি পাগল হয়ে যেতাম।’ আবুল খায়ের আরও স্পষ্টভাবে জানতে চায়, সে
ভাবিলেও পৃথিবী চলিবে, না ভাবিলেও চলিবে
থাকি জিয়া হলে। জিয়া হলে থাকি বলে আপনারা ভাববেন না এখানে জিয়া সৈনিকদের বাড়িঘর। বাংলাদেশ তো। তাই পুরাই উল্টা। জিয়া হলে বঙ্গবন্ধু সৈনিকের একচেটিয়া আস্তানা। মজা পাবেন একটি কথা শুনলে— আমাদের হলের যিনি প্রভোস্ট তার নামও জিয়া। আমার রুমের পাশেই মহাসড়ক। মহাসড়কে চব্বিশ ঘন্টা গাড়ি চলে! আর আমাদের মাথার ভেতর চলতে থাকে পু পা বে বো। গরুর নতুন শিং ওঠলে যেমন সবারে গুতা দিতে চায় তেমনি বাংলাদেশী ড্রাইভাররা সারাজীবন শিংধারী নতুন গরু থাকিয়া যায়। সাবেক বছর এমন দিনে আমার ঠান্ডা লাগে। আমার স্মৃতিশক্তি বলে নাই, বলিয়াছে ফেইসবুকের on this day appsটি। ইতিহাসের কী মহান কুদরত এমন দিনে আবারও আমার শরীর ঠান্ডার কবলে পড়িল। সামনে বিশাল কাজ। শরীরে ঠান্ডা থাকিলে হইবে না। তাই ঠান্ডার কৃষ্ণলীলা দূর করিবার মিশন হাতে নিলাম। এক ডাক্তার ভাইকে ফোন
সহজিয়া বানান জীবন
‘ণ’ বর্নটি অনেকের কাছে গুরুত্বপূর্ন মনে হতে পারে। আমার কাছে তার কোনো গুরুত্ব নেই। আমি ভাই ‘ন’কে নিয়ে বেশ ভালো আছি। আপন অর্থ নিজ আবার আপণ অর্থ দোকান, এতো সব দরজা আর তালা চাবি আমার ভালো লাগে না। আমি আপনে যাই = দোকানে যাই আপন কাজে মন দাও = নিজ কাজে মন দাও কারো কাছে আমার বক্তব্য পরিষ্কার করার জন্য ‘ণ’ ব্যবহার করতে হয়নি। তাই সহজিয়া বানান জীবনে আমি সংসার করি
তোমরা তোমরা মহান
তোমাদের ঘরে থাকে বিলাসবহুল দামি গাড়ি আমাদের ঘরে থাকে গরম বাতাস শুন্য হাড়ি শ্রমিক ঝরায় ঘাম পায় নাকো তার দাম বছর বছর ধরে তাদের রক্ত খেয়ে তোমরা তোমরা মহান।। তোমাদের ঘরে থাকে বৃষ্টি বিলাস এসি বাতাস আমাদের ঘরে থাকে ঘামাচি আর কান্না প্রলাপ শ্রমিক ঝরায় ঘাম পায় নাকো তার দাম বছর বছর ধরে তাদের রক্ত খেয়ে তোমরা তোমরা মহান।। তোমাদের ঘরে থাকে দামি সোফা রঙিন টিভি আমাদের ঘরে আমরা রোদে পুড়ি বৃষ্টি ভিজি শ্রমিক ঝরায় ঘাম পায় নাকো তার দাম বছর বছর ধরে তাদের রক্ত খেয়ে তোমরা তোমরা মহান।।
দরিদ্রতার বিরুদ্ধে যুদ্ধ
প্যান্ডোরার বক্স দুঃখের জন্মভূমি। এই বক্স খোলা হলে পৃথিবী প্রথমবারের মতো দুঃখের সাথে পরিচিত হয়। আজ পর্যন্ত দুঃখের শাষণ চলছে, শোষণ মেনে নিচ্ছি আমরা। মেনে নেয়াতে আনুগত্য থাকে, মুক্তি থাকে না। অনেকে হয়তো গোপনে তার সাথে টেবিলের নিচের কাজটি সম্পূর্ণ করেছেন। নতুবা এতদিন জনাব দুঃখ টিকে থাকেন কীভাবে? আমরা এর প্রমাণও পাই— হে দারিদ্র, তুমি মোরে করেছ মহান। তুমি মোরে দানিয়াছ খ্রীস্টের সন্মান কণ্ঠ-মুকুট শোভা দিয়াছ, তাপস, অসঙ্কোচ প্রকাশের দুরন্ত সাহস আহারে! দরিদ্রতা নিয়ে কী রোমান্স। বিকশিত হওয়ার অনেক মাধ্যম বিদ্যমান। দরিদ্রতা প্রধান মাধ্যমে কেন? বরং দরিদ্রতা মানসিক বিকাশের পথে প্রধান অন্তরায়। যাদের নুন আনতে মজুদকৃত পান্তা ফুরিয়ে যায় তারা জানে না সাগরের ইলিশের স্বাদ কেমন। আর আকাশের তারা, শেকড়বিহীন বটবৃক্ষ, সাপ প্রভৃতি তো তাদের দেবী, দেবতা, যাকিনা অনেকের কাছে গ্রহ-উপগ্রহটির, বৃক্ষ, প্রাণি। অর্থনৈতিক
তেইশ নম্বর তৈলচিত্র
‘তেইশ নম্বর তৈলচিত্র’ আলাউদ্দিন আল আজাদের প্রথম উপন্যাস। জাহেদ নায়ক চরিত্র যার মাঝে আত্মবিলুপ্তি ঘটেছে। জহু একটি নারী চরিত্র যে আত্মহত্যা করেছিল। আত্মহত্যার কারণ বিয়ে। জহুকে পঞ্চাশ বছর বুড়োর সঙ্গে বিয়ে দিয়েছিল তার অবিভাবক। বুড়োকে স্বামী হিসাবে মেনে নিতে পারে নি জহু। তখন হয়তো নিন্ম-মধ্যবিত্ত সমাজে চা খাওয়ার প্রচলন শুরু হয়নি। হলে হয়তো আত্মহত্যার পরিবর্তে এক কাপ চা খেতে পারতো জহু। আমাদের রেলমন্ত্রীর (মুজিবুল হক) বিয়ে করার প্রচার-প্রচারণাও জহুর বেঁচে থাকার কারণ হতে পারতো। ‘তেইশ নম্বর তৈল চিত্রে’র নায়িকা ছবি। তার সৌন্দর্য কবিতাসুলভ। বাঙ্গালি নারীর যে ললিত মানসিকতা তা আমরা ছবির কথা, কাজে, আচরণে প্রত্যক্ষ করি। জাহেদ আর ছবির সম্পর্কের নির্মাণ চমৎকার। জলনীতি সম্পর্ক নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে। পরিচয় থেকে প্রেম, প্রেম থেকে গভীর আলাপন, গভীর আলাপন থেকে বিয়ে, দাম্পত্য জীবনে সুখ আর সুখ।
পথ চেয়ে রবো হে নবী
আর কতকাল পথ চেয়ে রবো হে নবী রহমতের দরজা খুলে দেন আলো আসুক অন্তরে বয়ে যাক কল্যানের ধ্যান গরীবদের চোখে ধরা দেন গরীবদের মনে হয়ে আসুন তৃষ্ণা নিবারন প্রেম। হে তুলনাহীন অতুলনীয় রূপের মহাকাব্য আশরাফ আপনি শান্তি মহিমার গদ্য তুলে নেন আপনার নৌকায় আমাদের আপনি মহান মানুষের পথে সহজ সুন্দর সত্য। জান্নাতের সুগন্ধি আপনি সকলের প্রশংসা আপনার সেবায় রয়েছে লাখো লাখো ফেরেশতা আপনার দরবার মহান অসীম রয়েছে উদার মহানুভবতা তুলে নেন আমাদের আপনার প্রেমের নৌকায়। দুনিয়ার কষ্টকে জানার শক্তি দেন আমাদের শুকনো হৃদয়ে সবুজ ছায়ার মায়া দেন আপনি ছাড়া আমরা তৃষ্ণাদগ্ধ আপনি ছাড়া আমরা উদভ্রান্ত উদভ্রান্ত মনে আপনি পথের ছায়া হয়ে দিশা দেন বিষাদের সাগর থেকে প্রেমের ডাঙার আমাদের তুলে নেন। (উর্দু কবিতা থেকে অনূদিত)