You are here

ক রো না বি ন তে কো ভি ড উ নি শ [দ্বিতীয় পর্ব]

…ধরেন, কারো নাম চান মিয়া। লোকে তাকে ডাকবে চান্দু। টাকা পয়সার মালিক হওয়ার পর তার নাম হবে চান মিয়া সাহেব। টাকা ব্যয় করে মক্কা শরীফ ঘুরে আসার পর তার নাম হবে হাজী চান মিয়া সাহেব। এমনভাবে আরও লেজের ব্যবস্থা টাকা ব্যয় করে দানবীর হাজী চান মিয়া সাহেব করতেই পারেন। আর যার অর্থতেলের ব্যবস্থা নেই তার নাম হবে টোকাই,তার নাম হবে ধোপা,তার নাম হবে কামলা।

তবে আবুল খায়েরের বউ কিন্তু কোনোদিন তার নাম ধরে ডাকে না। স্বামীর নাম ধরে ডাকা পাপ। অনিন্দিতা খানম স্বামীকে স্বামী বলেই ডাকে।

আবুল খায়ের তার বউয়ের কাছে জানতে চায় যদি সে গাছ থেকে পড়ে মারা যেতো তাহলে তার বউ বাকী জীবনটা কীভাবে কাটাতো। তার বউ উত্তর দেয়, ‘আমি পাগল হয়ে যেতাম।’ আবুল খায়ের আরও স্পষ্টভাবে জানতে চায়, সে জানতে চায় অনিন্দিতা খানম আবার বিয়ে করতো কিনা। অনিন্দিতা খানম উত্তর দেয়, ‘পাগলে কিনা করে।’

আসলেই পাগলে কিনা করে! করোনার কঠিন পরিস্থিতি ট্রাম্পকে পাগল করে দিলো কিনা, নাকি একটা পাগলকে আমেরিকা তাদের সিংহাসন ঠাই দিয়েছে। নতুবা সে কেমন করে বলে সূর্যের অতিবেগুনী রশ্মি সংগ্রহ করে করোনা রোগীর ফুসফুসে ইনজেকশনের মাধ্যমে পোস করলে রোগী ভালো হয়ে যেতে পারে। আবার তার মতামত তুলেও নেয় এই বলে যে সে ফান করেছে। ইয়ার্কি, তাই না!? লাখ লাখ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হচ্ছে, হাজার হাজার রোগী মারা যাচ্ছে আর তিনি ইয়ার্কি করছেন। সাব্বাস ডোনাল্ড ট্রাম্প, সাব্বাস তোমার ইয়ার্কি।

মিডিয়া আমাদের সাথে ইয়ার্কি করছে কিনা? zee২৪ ঘন্টায় দেখতে পেলুম একখান বিশাল আশার খবর। ফ্যামোটিডিন গ্রুপের এন্টাসিট যার প্রাইজ মাত্র চল্লিশ পয়সা তা নাকি করোনার ঔষধ হতে যাচ্ছে। ঔষধের দাম কম বা বেশি বড় কথা নয়, বড় কথা হচ্ছে অযথা আশার কথা বলে, আপডেট নিউজের নামে জনগনের বিশ্বাসের সাথে ধোকাবাজি খেলায় আবার না মিডিয়ার সম্মান জুতার নিচে নেমে যায় (বিটিভি বলছে, দেশে করোনা পরিস্থিতে স্বাভাবিক ও নিয়ন্ত্রণে আছে!)

বেসরকারি টিভিগুলো বলছে, বিটিভি মহাপরিচালক সস্ত্রীক করোনা আক্রান্ত!! 😇🤔 ভয় পাচ্ছি আমি। কারন বিশ্বাস করার, আস্থা রাখার মাধ্যম খুজে না পেলে জীবন জটিল থেকে জটিলতর হয়ে যায়। মিডিয়ার কথা শুনে অতি চালক হয়ে মাথা মোটা এই জাতি যদি ফ্যামোটিডিন মজুত করা আরম্ভ করে তাহলে পেট রোগা এই বাঙালি এন্টিহিস্টামিন পাবে কোথায়!?

মিডিয়ার উপর এতো আশাবাদী হওয়ারও কিছু নাই। মিডিয়া কর্মীরা হায়ার এন্ড ফায়ার পদ্ধতিতে মিডিয়া শ্রমিক। তারা সেই ইট ভাঙতে পারে যেই ইট ভাঙার কথা মালিকপক্ষ তাদের বলেন।

বিয়ে শেষ। এবার জামাই বউকে নিয়ে বাড়ি যাবে। বিদায়-নিয়ম-কানুন সেরে জামাই-বউ বাড়ির পথে যাত্রা করে। পথে ডাকাত আক্রমন করে। সুন্দরভাবে ডাকাতি করে ডাকাতপক্ষ বিদায় নেয়।

কনের ভাই তার মাকে বলে যে জামাইয়ের ভাত খাওয়াবে না মাত্রাকে। মাত্রা কনের নাম। কেন কেন? বিয়েতে বরপক্ষ কনেকে যে স্বর্নঅলঙ্কার দিয়েছে তা নকল। রুস্তম কীভাবে জানলো যে অলঙ্কার নকল? রুস্তম মাত্রার ভাইয়ের নাম।

‘তুই কীভাবে জানলে স্বর্নঅলঙ্কার নকল? অলঙ্কার ত ডাকাতি হয়ে গেছে!’
‘মা, ডাকাতি ত আমিই করেছি!’

রুস্তম ডাকাতি করেছে এটা অপরাধ না, অপরাধ বরপক্ষ রুস্তমের বোনকে খাটি সোনা দেয়নি, দিয়েছে নকল সোনা।

আমাদের মিডিয়া, পৃথিবীর মিডিয়া হলো পোশাক, আর সেই পোশাকের ভেতরের যে শরীর রয়েছে তা প্রত্যেকে এক একটি রুস্তম। রুস্তমরা যা চায় তাই হয়। রুস্তমরা ভদ্র ভাষায় বিজনেস ম্যাগনেট নামে সমাদৃত। এই ম্যাগনেটরা চেয়েছে গার্মেন্টস শ্রমিক ঢাকায় আসবে— শ্রমিকরা ঢাকায় এসেছে। তারা সাথে সাথে জনরোষের তাপে পড়ে মত বদল করেছে, শ্রমিকরা সাথে সাথে ফিরে গেছে, তারা চেয়েছে লকডাউন উঠে যাবে, লকডাউন শীতল হয়ে গেছে মানে উঠার পথে।

বাংলাদেশের পীর আমেরিকায় যখন করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা দশ হাজার তখন তারা কঠিন লকডাউনে চলে যায়, জার্মানি, ইতালি, স্পেনেও তাই। আর বাংলাদেশে যখন করোনায় আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অফিসিয়ালভাবে দশ হাজার তখন লকডাউন শীতল হয়ে যায়।

আমি বলছিনা করোনার বিরুদ্ধে ফাইট করার জন্যে লকডাউনই একমাত্র এবং বিশেষ পন্থা। আমি বলছি বাঙালি বীরের জাতি— সিনেমা শুরু হওয়ার আগেই সিনেমা শেষ করে দিতে পারে তারা।

আমরা দেখেছি দুই হাজার আঠারো সালের এশিয়া ক্রিকেট কাপে এক হাতে মাঠে নামা তামিম ইকবালকে। অবিশ্বাস্য। দুর্দান্ত। আমরা পারি, আমরা সব পারি। ১৯৬৫ সালের যুদ্ধে নিজের প্রান দিয়ে পাকিস্তানের হয়ে ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করি, এই আমরাই আবার ইন্ডিয়াকে সাথে নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে করে বাংলাদেশ স্বাধীন করি। আমরা ইজ আমরা। আমাদেরকে করোনা কাবু করতে আরও ট্রেনিং নিয়ে আসতে হবে। এতো অল্প ট্রেনিংয়ের বিনিময়ে করোনা আমাদের জাহাজের তেল শেষ করতে পারবে না। জাহাজের তেল শেষ হলেও করোনা বিনতে কোভিড উনিশ বুঝতেও পারবে না যে আমাদের জাহাজের তেল শেষ। কারন জলকে তেল হিসাবে চালিয়ে দেওয়ার ট্রেনিং করোনার জন্মের বহু আগে থেকে আমাদের নেয়া।

করোনা ভাইরাস জীবন্ত প্রাণী নয়। এটি প্রোটিনের অণু (ডিএনএ) যা লিপিডের (চর্বি) মোড়কে মোড়ানো। এটা আমাদের নাক-চোখ-মুখের মাধ্যমে শরীরে ঢুকে গেলে নিজের জেনেটিক কোড বদলে ফেলে শক্তিশালী ও আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে। ভাইরাস যেহেতু কেবলই একটি প্রোটিন অণু এবং জীবন্ত নয় তাই এটাকে মেরেও ফেলা যায় না। তবে সে নিজে থেকে ধ্বংস হতে পারে।

যে ভাইরাস নিজে নিজে জন্ম হতে পারে আবার নিজে নিজে মৃত্যুবরন করতে পারে অর্থাৎ যাকে মারা যায় না, সে তো নিজের একটি পৃথিবী বানাবে স্বাভাবিক কথা। এই সহজ ব্যাপারটা অনুধাবন করার জন্য গৌতম বুদ্ধ হওয়ার দরকার পড়ে না।

তবে একটি ব্যাপার কিন্তু নোটিশ করার মতো। তিন ধর্মের সমাহার বা তিন বাদের সমাহার ভিয়েতনাম কিন্তু কোভিড উনিশের ব্যাপারে ম্যাজিক দেখাতে পেরেছে। আমরা জানি বুদ্ধের মতবাদ, কনফুসিয়াস থিউরি, তাও তে চিংয়ের হাজার বছরের সহজিয়া দর্শন ভাতপ্রিয় ভিয়েতনামের জীবানাচারে চর্চার বিষয়। তবে এই কথা সত্য যে চীনের ব্রার নিচে ভিয়েতনাম। ব্রা বললে নারীবাদীরা আবার রেগে যেতে পারে। চীনের আন্ডারপ্যান্ডের নিচে ভিয়েতনাম। চীনেও কনফুসিয়াস থিউরি, মাও সেতুঙ, তাও তে চিং অত্যন্ত আলোকোজ্জ্বল চর্চিত টপিক অথবা চীনই এমন মতবাদের ধারক। থাইল্যান্ড, লাওস, কম্বোডিয়ার ব্যাপারে আলোচনাটা কিছু সময়ের জন্য ফ্লাইট মোডেই রেখে দিলাম।

কনফুসিয়ানরা সর্বদা সর্বোচ্চভাবে সিনিয়রের কথা মেনে চলে। আর লকডাউনের ক্ষেত্রে আদেশমান্যনীতি শতভাগ কার্যকর হওয়া লাগে। একমুখে দুই কথা বললে লকডাউন কার্যকর করা যায় না। দক্ষিণ কুরিয়া যেখানে প্রতিদিন হাজার হাজার লোক আক্রান্ত হচ্ছিল সেখানকার নীতিপ্রবাহ কেমন করে পরিস্থিতি নিজেদের কন্ট্রোলে নিয়ে আসলো? এরা মোবাইল ট্রেসিং করে পনেরো লক্ষ লোককে ঘরবন্দী করতে সক্ষম হয়। এরাও কিন্তু মহান কনফুসিয়াসের মতবাদে ইমান এনে প্রতিদিন নিজেদের সূর্যকে ব্যবহার করতে যায়।

আর বাংলাদেশ?

বাংলাদেশে ধর্ম আছে। এখানে ধর্মের চেয়ে দল, গোষ্ঠী, সম্প্রদায় বড়। কে সুন্নি কে ওয়াহাবি তা নিয়ে আলোচনা করতে করতে রাত শেষ হয়ে যায়। সকালে ঘুম থেকে উঠে অন্যের জমি দখল করতে যায়।

করোনা বিনতে কোভিড উনিশ যখন বাংলাদেশে মাত্র আঙুল ফেলতে শুরু করে দিয়েছে এখানকার একশ্রেনির আলেম শরীরের সমস্ত রক্ত মুখে এনে বলে ‘প্রয়োজনে রক্ত দিবো তবু মাসজিদে যাওয়া থেকে কেউ আমাদের রুখতে পারবে না’, করোনা যখন ফুসফুসের মধ্য দিয়ে রক্তের বাহাদুরি শেষ করতে আরম্ভ করে তখন তারাই বলে ভিন্ন কথা। তাই এক মুখে দুই কথা নয়— এক মুখে চার অথবা ষোল কথার বলা ক্ষমতা বাংলাদেশ রাখে।

বাংলাদেশের মানুষের কিন্তু মুখে একটা অন্তরে আরেকটা না। এমন হলেও ভালো হতো। মুখে একটা অন্তরে আরেকটা রেখে যারা সহজে কাজ হাসিল করে নিতে পারে উন্নত বর্তমান আধুনিক বিশ্বে তারাই ডিপ্লোমেটিক ম্যান, যাদের কদর আধুনিক অস্ত্রের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়।

বাংলাদেশ এক কথাতে বেশিদিন থাকতে পারে না। এখানে শিক্ষার চেয়ে জনসংখ্যা বেশি। ফলে ডারউইনের বানরের মতো তাদের গাছে উঠতেও সময় লাগে না, আবার নামতেও সময় লাগে না।

ডারউইনের বানর ইভালোশন এন্ড জেনেটিক প্রক্রিয়ায় নিজেদের ক্ষমতা প্রদর্শন করতে সক্ষম হয়েছে। তাই আজকে সে মানুষ। ডারউইনের বানর থেকে শিক্ষা নিয়ে পেলে নেইমার রোনালদো রিবালদোর দেশ ব্রাজিল করোনা ভাইরাসের এই দিনে কোনো প্রকার লকডাউননীতি গ্রহন করেনি। ফলে মারা যাচ্ছে হাজার হাজার লোক। ব্রাজিলের পরে ব্রাজিলের পতাকা যে দেশের আকাশে সবচেয়ে বেশি উত্তোলিত হয়েছে সেই দেশটির নাম বাংলাদেশ। ব্রাজিল আয়তনে অনেক বড় রাষ্ট্র হলেও ব্রাজিলও বাংলাদেশের মতো বস্তিঘেষা জাতি। ফলে বাংলাদেশে হাজার হাজার লোক মারা গেলে আমরা অবাক হবো না। তাছাড়া বাংলাদেশের রাস্তা বহুদিন ধরে উপোস। রক্ত বাংলাদেশের রাস্তার প্রধান খাবার। খাবার না পেয়ে বাংলাদেশের রাস্তা প্রায় মারা যাচ্ছে। সরকার নিশ্চয়ই রাস্তার এই মরনময় দিনের অবসান কল্পে কোনো সিদ্ধান্ত নিবেন।

তবে এই ভারতবর্ষের মানুষ ‘সরকার’ বিষয়টা এখনো বুঝে উঠতে পারে নাই। তাদের কাছে সরকার মানে সরকার প্রধান। ভালো মানে সরকার প্রধান ভালো, খারাপ মানে সরকার প্রধান খারাপ। এতে বিরাট সমস্যা। কারন মুরগী যখন চিলের কথা মাথার রেখে আকাশের দিকে চেয়ে থাকে কেবল, শিয়াল এসে অথবা বিজি এসে মুরগির বাচ্চা নিয়ে যায়। করোনা ভাইরাস আমাদেরকে কোথায় নিয়ে যাবে এখনো আমরা জানি না। নাকি আমাদের জানতে দেওয়া হচ্ছে না!?

সংশয় সন্দেহ অবিশ্বাস অস্থিরতা বিলাসী মানসিকতার ব্যাপক আয়োজনে ক্যালেন্ডারের পাতায় জায়গা করে নেয় একবিংশ শতাব্দী। একবিংশ শতাব্দী এমন এক শতাব্দী যে শতাব্দী তার আসন্ন প্রজন্মের খাবার সংহার করে বেচে আছে। প্রয়োজনীয় জীবনের চেয়ে বিলাসী জীবন খুব গুরুত্বপূর্ণ তাদের কাছে। ঘরে খাবার থাকলেও ফাস্টফুড খেতে হবে তাদের। ঘরে টিভি থাকলেও ডিজিটাল টিভি কিনতে হবে তাদের। অর্থাৎ অভাবটা মনে নয়, চোখে। ক্ষুধাটা পেটে নয়, জিহবায়।

একসময় পাখি খাচায় বন্দী করে রাখার স্বভাবটা সো কল্ড এলিট শ্রেনির মাঝে ছিল। এখন মিডিয়া, ইন্টারেক্টিভ মিডিয়ার কল্যানে সবাই মোটামুটি এলিট ট্যাংক।

স্টুডেন্টদের মধ্যে দেখা যায় পাখিদের খাচায় বন্দী করে রাখার প্রবনতা। হোস্টেলে থাকে, নিজের টয়লেট নিজে পরিষ্কার করে না, মশা ডিম পাড়ে বিছানার নিচে, টয়লেট থেকে এসে হাতও ভালো করে পরিষ্কার করে না কিন্তু পাখিকে খাচায় বন্দী করে বিছানার পাশে রেখে দেন মহান স্টুডেন্ট। কাউকে বন্দী করে রাখার মধ্যে এক ধরনের প্রভুগিরি ফলানো যায়। ইনফিরিউর প্রবনতা প্রভু হতে পারলে শান্তি পায় বেশ, হাগু করতে কুতানি দেয়া লাগে না তখন।

এখন খাচায় বন্দী পাখির মতো আপনি বন্দী। মাইনাস প্লাস করা ছাড়া আপনার আর এখন কোনো কাজ নাই। পারলে একদিনে, দুঃখিত, এক ঘন্টায় কোটিপতি হয়ে যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর ছিলেন। টিভিতে এতো মুখ দেখানোর জন্য ব্যস্ত ছিলেন যে নিজেই টিভি হয়ে যাবেন যেনো। হয়ে যানও বটে।

এখন?

এখন চিড়িয়াখানার পশুদের মতো আপনিও বন্দী। গুটি বসন্তে পৃথিবীর প্রায় ত্রিশ কোটি মানুষ মারা যায় এখন পর্যন্ত। পৃথিবী গুটি বসন্তের বাক্যে দাড়ি বসাতে সক্ষম হয়েছে। করোনা কবে যাবে পৃথিবী থেকে? হার্ড ইমিউনিটি আসলে। হার্ড ইমিউনিটি এতো সহজ কথা?

হার্ড ইমিউনিটি (herd immunity)। হার্ড মানে পাল। ইমিউনিটি মানে বিমুক্তি। হার্ড ইমিউনিটি দুইভাবে অর্জন করা যায়। ভ্যাকসিনের মাধ্যমে। প্রাকৃতিক উপায়ে।

প্রাকৃতিক উপায়ে হার্ড ইমিউনিটি অর্জনের জন্য কোনো জনগোষ্ঠীর ৬০ থেকে ৮০ পার্সেন্ট আলোচ্য বা পেন্ডামিক ভাইরাস দ্বারা আক্রান্ত হতে হবে। ধরি, বাংলাদেশে জনসংখ্যা বাইশ কোটি। বাইশ কোটির ৮০ পার্সেন্ট সতেরো কোটি ৭৬ লক্ষ। সতেরো কোটি ৭৬ লক্ষ লোক করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হলে বাংলাদেশ অথবা ব্রাজিল হার্ড ইমিউনিটি অর্জন করবে।

আমরা জানি ব্রাজিল আয়তনে বাংলাদেশের চেয়ে অনেক অনেক বড় হলেও জনসংখ্যায় প্রায় কাছাকাছি। জাইর মেসিয়াস বলসোনারো সামরিক বাহিনীর লোক। ডো অর ডায় নীতিতে আস্থা রেখে মানসিক বিকাশ এই পর্তুগিজের। সাও পাউলোর শৈশবজল পান করে বেড়ে উঠা এই বলসোনারো যখন একজন কংগ্রেসম্যাম আইনপ্রনেতা মহিলাকে বলতে পারে ‘আমি তোমাকে ধর্ষণ করবো না, কারন এটার যোগ্য তুমি নও’ তখন হাজার হাজার লোক করোনায় মারা গেলে তিনি বারবিকিউ পার্টির আয়োজন করতেই পারেন।

বাংলাদেশের সরকার প্রধান অবশ্যই বার বার বলছেন আশাহত না হওয়ার জন্যে। করোনার বিরুদ্ধে ফাইট করার জন্যে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা বাংলাদেশের রয়েছে এমন কথা আকাশে বাতাসে শুনতে পাই। গার্মেন্টস কর্মীরা বলে অন্য কথা ‘ঘরে খাবার নাই, কাজ না করলে খামু কী?’ করোনা আক্রমন করলে তিন বেলার বদলে ছয় বেলা খাবার খেয়েও কী তারা বাচতে পারবে? শুনেছিলাম দিনে একবেলা খেয়েও বেচে থাকা যায়।

খাবার দোহাই দিয়ে আপনি যখন চৌকাঠ পার হয়ে যাচ্ছেন তখন আপনি না মরলেও অন্যের মৃত্যুর কারন হচ্ছেন। ধরেন, মিস্টার আতর আলী করোনায় আক্রান্ত। আতর আলী থেকে জব্বার করোনায় আক্রান্ত হলো। জব্বার ভাবলো ঘরে বসে বসে আর কত কাল, এবার বউরে লইয়া শ্বশুর বাড়ি থেকে কয়েকদিনের জন্যে ঘুরে আসি।

প্রথম পর্ব – ক রো না বি ন তে কো ভি ড উ নি শ

Leave a Reply

Top