অনেক ব্যথার পর জন্ম নেয় একজন মানুষ তবুও তো কথা থাকে মানুষের ঘরে বিমান থেকে উড়ো আসে কতিপয় মেঘ মেঘেরও ডানা থাকে মেঘেরও থাকে কিছু আনন্দ আন্দালিব অনেক দূর থেকে যমুনার ঘরে জলের কলতান আস্তে করে দেখে নিতে হয় জলের কাছে কেবল জল, মনের কাছে কেবল মন, মাছের কাছে কেবলই মাছ— এই আমাদের চোখ, আমাদের সমাজ। গাছের শরীরে ছুরিকাঘাতে লাঞ্চিত করে প্রাকৃতিক সুখ— কারা? বহু আগে যারা গুরু নামে স্বার্থের সাথে কেটে নিয়েছিল একলব্যের বীরশ্রেষ্ঠ অনামিকা তারা… আমি তাদের সাথে বসবাস করি, খাই দাই আনন্দ করি অনেক ব্যথার পর হয়তো আমিও আমি হয়ে ওঠি!
Month: June 2021
লেবাসের জপ
চলছে ট্রেনের মোড়ক পেঁচানো পলিজিনি গাড়িখানা বাতাসলগে আজব শহর জ্বিন আলাদিনের আস্তানা ট্রেন থেকে অনেক দূরে শ্রমিকের ঘর বাড়ি মামলার সুখে আমলা এখন অপরাধমাখা গাড়ি মাঝখানে দ্বীপের মতো রোদেলা হাসি নারী ঠোঁটের ভেতর ঘর বেঁধেছে বহুগামী নদী সাগর উত্তাল পাতালে নেমেছে পাহাড় প্রিয় দিদি পাহাড়ে পাহাড়ে পাখি কলরব জমিনে মানুষ রাজা রোজ মরছে ঘামের রক্ত চেতনার বাড়ছে সাজা কলাশিশ্ন জিংলা নিয়ে বাড়ছে বিপ্লবী বাড়ছে ফলের রংকালার বাড়ছে ভংবাদী দোয়া কবুলের নামে বাড়ছে আমিন আমিন রব হুজুর খাচ্ছে মজুরের ঘাম বাড়ছে লেবাসের জপ আবহাওয়ার খবর দিচ্ছে ভাঙ্গা কলের গান ঝরাপাতার পেঁচানো রোগ ভ্যানিটি ব্যাগের প্রান বিপ্লব হয়েছে বিনোদন সিনেমা তেলাপোকা সাহস দলাদলির ঘর সংসার সুদ কাঞ্জি পাট্টা চেলি চাহস
তোমার চোখে বৃষ্টি কেমন?
তোমার চোখে বৃষ্টি কেমন ভেবেও আমি ভাবি না তোমার চোখে রোদের খেলা দেখেও আমি দেখি না একলা আমি সাগর তীরে সাগর আমি সাগরমুখী পেছন থেকে স্মৃতির খেলা গল্প আমার লুকোচুরি আকাশ বেয়ে চাঁদ উঠে মেঘও তার প্রতিবেশী পেছনে সব উড়াল পাখি সমাজ নিয়ে দারুন খুশী বয়ে চলা জীবন নিয়ে প্রশ্ন করি উত্তর লিখি বর্ষাজলে বেহুলা ভাসে স্বর্গ কোথায় স্বর্গ খুঁজি জীবন যাবে জীবন রবে আসবে তুমি আসবে আমি আবার যখন দেখা হবে বলবো তোমার প্রেমিক আমি
গ্রামের নদী হতাম যদি
গ্রামের খুব কাছে মেঘনা নদী গ্রামের নদী হতাম যদি বাষ্প হয়ে বাতাসে বাতাসে মেঘ হয়ে আকাশে আকাশে জলচোখে চিনে নিতাম বন্ধু তোমার বাড়ি তারপর কোনো এক দিন তৃষ্ণায় তুমি চিন চিন ঠিক তখন ঠিক তখন আমি তোমার একমাত্র আপন কানকথা নেই ভুলদেখা নেই নেই কোনো দর্জি মেশিন তোমার চাওয়া আমি আমার চাওয়া তুমি চাওয়া চাওয়া এক হয়ে আমরা তখন স্রোতস্বিনী নদী ঢেউয়ে ঢেউয়ে সংসার জলকেলি কালচার প্রেমে মনে গুলজার একে একে একেকার আমি যে তোমার তুমি যে আমার আমি যেন দেহ তুমি আমার আত্মা তারা যেন না বলে তারা যেন না বলে তুমি আর আমি ভিন্ন সত্তা
হৃদয় দহন কেউ দেখে না
মেঘনা নদী আমাদের বাড়ি থেকে খুব দূরে নয়। আমি প্রায় মেঘনা নদীর কিনারায় বসি— মাছের সংসার দেখি, মালামাল ভর্তি জাহাজ দেখি, লঞ্চের জানালার ফাঁকে লতাপাতার মতো বেড়ে ওঠা চোখ দেখি, আরও দেখি জলের গভীরে প্রবাহমান চুরাস্রোত। মেঘনা নদীর মাঝখানে দ্বীপের মতো একটি জায়গা আছে, এলাকাবাসী জায়গাটিকে চর বলে। চরে তরমুজ ভালো হয়। বালি মাটিতে তরমুজ ভালো হয় ছোট্ট কাল থেকে শুনে আসছি। সূর্যের তাপে বালি মাটি ভেতরে ভেতরে দগ্ধ হতে থাকে, লাল দহনের সবটুকু ব্যথা বালি তরমুজের হৃদয়ে ট্রান্সফার করে দেয়, তাইতো তরমুজের হৃদয়ে হৃদয় এতো লাল। আসলে হৃদয় দহন কেউ দেখে না— কালিমা পড়া নসিমুন বাবু কিংবা কবুল বলা জলিমা। জলিমা, বিগত দিনে কার বুকে মাথা রেখে তুমি শুনালে করবীকুঁড়ির তরল সুর, চিৎকারে চিৎকারে সাজালে রঙিন বাসর? আমি কিন্তু বালি মাটির তরমুজের মতো ভেতরে
আপনি খুব হতাশ?
আপনি খুব হতাশ। মনে হচ্ছে এখনি আত্মহত্যা করে ফেলা দরকার। আপনার মনে হওয়া মোটেও অবান্তর কিছু না। আত্মহত্যা আপনি করতেই পারেন। আপনি মরে গেলে কারো ভাবান্তর হবে না। এই দুনিয়ায় অনেক বিখ্যাত মানুষ মারা গেছেন, তাতে পৃথিবীর বিশেষ কোনো ক্ষতি হয়নি। এই দুনিয়ার অনেক কুখ্যাত মানুষ মারা গেছেন তাতেও পৃথিবীর কোনো বিশেষ উপকার হয়নি। আপনিও মারা যাবেন। তাতে পৃথিবীর বিশেষ কোনো উপকার বা ক্ষতি হবে না। এই বস্তুজগৎ প্রত্যেক বিষয়ের প্রত্যেক জিনিসের ডজন ডজন অল্টারনেটিভ নির্মান করে রেখেছে। এই বস্তুজগতে প্রত্যেক বস্তুর নেগেটিভ ও পজেটিভ রয়েছে। লবনের যেমন উপকার ও ক্ষতি রয়েছে, আপনারও তেমনি উপকারী ও ক্ষতিকর প্রভাব রয়েছে আপনার চারপাশে। তারপরও আপনি বাচবেন, তারপরও আপনি হাসবেন, তারপরও আপনি সময়মতো কাদবেন। আপনার ডিপ্রেশনকে ঘৃনা করবেন না, সে আপনারই অংশ, আপনার থট প্রসেসের অংশীদার
একটি মানুষ মানুষ হলে…
একটি আলোর কণা পেলে লক্ষ প্রদীপ জ্বলে একটি মানুষ মানুষ হলে বিশ্ব জগৎ টলে লেখাটি কার আমি জানি না, তবে লেখাটি মর্মে মর্মে উপলব্ধি করি। লেখা তো এমনই হওয়া চাই, জীবনের মতো উর্বর। লেখা মানে আমি মনে করি উন্নত কথা। যে কথা আইডিয়াবাহী, যে আইডিয়া জীবন বদলে দিতে পারে, জীবনকে নিয়ে যেতে পারে সত্য, সুন্দর, মহিমায় পৃথিবীর দিকে। একটি জীবন যদি অন্য জীবনের কাজে না আসে, তাহলে সেই জীবনের কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমি মনে করি না। জীবনের প্রয়োজন কেবলই জীবনের কাছে। লেখা তো সূর্যের কিরণোৎসব যা সূর্যের মতো লেখকের জৈবিক কাজ। তবে লেখাধরা আর মাছধরা এক কথা নয়, মাছ থাকে জলের নিচে যা ধরার জন্য জেলেমন হলেই যথেষ্ট, আর লেখা থাকে বোধের নিচে যার জন্য প্রেমআগ্রহ এবং লেখকমন থাকা আবশ্যক। বুদ্ধিকে যাঁরা জীবিকার মাধ্যম
নেগেটিভ মানসিকতা
নেগেটিভ মানসিকতা আই ডিসলাইক করি। নেগেটিভ মানসিকতা থেকে যথাসম্ভব দূরে থাকতে চাই। তার মানে চাঁদকে আমি সূর্য হিসাবে দেখতে চাই না। চাঁদ ইজ চাঁদ। সূর্য ইজ সূর্য। আশুগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশন। বলতে গেলে প্রায় জনশুন্য। বুঝলাম তিতাস ট্রেন চলে গেছে। মেশিন কন্ট্রোলারের কাছে গেলাম। এখন কোনো ট্রেন আছে? না, নাই। ভৈরব থেকে কোনো ট্রেন আছে? আছে, তবে ধরতে পারবেন না। কেন পারবো না? চট্টলা তালশহর ছেড়ে আসতেছে, লাইন দিয়ে দিছি। আসলেই কী পারবো না? অ মিয়া আফনে আসলেই বেশি বুঝেন, বলছি পারবেন না, পারবেন না। মানছি দশ মিনিটের ভেতরে ট্রেন চলে যাবে ভৈরব। দশ মিনিটের ভেতরে আশুগঞ্জ থেকে ভৈরব যাওয়া সো মাচ সো টাফ। কিন্তু অসম্ভব না। তাই একপ্রকার রেগেই গেলাম। আমি আসলেই বেশি বুঝি, তোমার দাদার দাদার চেয়েও বেশি বুঝি এই কথা শুনে লোকটি হা করে তাকিয়ে রইলো।
মৃদু বেদনার হাসপাতালে
‘মৃদু বেদনার হাসপাতালে’ একটি কাব্যময় হাসপাতাল। এখানে সরকার আমিন প্রেমের ঔষধের মার্কেটিং করেছেন। এখানে সরকার আমিন যতটা না কবি তার চেয়ে অধিক আত্মার বিজ্ঞানী। সরকার আমিন তার জীবন নিয়ে নীরিক্ষা করেন প্রতিনিয়ত। কবিতাইও। প্রেম, চুমু, মমতা, বৃষ্টি, মেঘ, মৃত্যু, জ্বর সরকার আমিনের একান্নবর্তী কবিতাপরিবারের প্রাত্যহিক সদস্য। ‘মুগ্ধতা বিনা নিষিদ্ধ হোক বিবাহের ঘর মুগ্ধতা বিনা বুঝা যায় না দেহের জ্বর’ ছন্দের আড়ালে নীতিমালা প্রেরন করছেন সরকার আমিন। সমাজের জন্যে কবির উপদেশ তো থাকতেই পারে। কবি তো মাটির মানুষ, মঙ্গলগ্রহের বালু না। সরকার আমিন বলছেন ‘সূর্যাস্তের ঘ্রাণ এসে লাগে প্রাণে’— এই যে চিত্রকল্পের নীরব ব্যবহার তা আমরা জীবনানন্দ দাশের কবিতায় ব্যাপক দেখতে পাই। উপমান উপমিত সমাস জীবনের বাইরে এসে অনুভূতি জীবনপ্রবনকে চিত্রকল্প করে তুলার প্রয়াস সরকার আমিনের ভাষাবিন্যাসে প্রবল। তার কবিতা পাঠপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে দিয়ে সহজেই
দোষ, অন্যের ঘাড়
ট্রেনে দাঁড়িয়ে আছি। কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হবে কেউ জানে না, না লোকোমাস্টার, না রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। প্রতিটি সময় উৎযাপন করার পক্ষে। তাই যেই অবস্থায় আছি শুকর আল হামদুলিল্লাহ। অসহ্যবোধ করা সহজ, কারণ তাতে চেষ্টা লাগে না। আমি তো মানুষ। চেষ্টার মধ্য দিয়ে আজকের মানুষ যুক্তিশাস্ত্রের মুক্তি দিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ছায়াতলে আশ্রয় নিয়েছে। তাই চেষ্টার দরজা-জানালা খুলে দিয়েছি। আমার পেট বরাবর ষাট বছর বয়সী এক চাচা। তিনি চিপস খাচ্ছেন। দৃশ্যটি বেশ এটাকটিভ। হঠাৎ চাচুর ফোন আসে। তিনি বসা থেকে উঠে দাঁড়ালেন। চাচু দাঁড়ানোর সাথে সাথে তাঁর বুড়ি সমেত পেট মহাশয় আমার স্লিম পেটে ধাক্কা মারে। আমার পেট অসহায়। কারণ তার পেছনে যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই। কিছুক্ষণ পেটে পেটে ঘষাঘষি খেলায় অনুভূতির নতুন মাত্রা যোগ হল অভিজ্ঞতার খাতায়। চাচুর পাশে একজন পুরুষ। বয়স চল্লিশ হবে।