হাত বাড়িয়ে দিলে আসবে? চলে যাবো কোনো এক দিগন্তে পাখিদের ঘর হবে ফুলদের সংসার তো থাকবেই ঘুঘু প্রিয়া বাঁধবে বাসা সুন্দর করে তুমি হাসো সুন্দর করে হাঁটো ঝগড়াটা করো বেশ— বিএসএফ বিজিপি বিজিবি বিএসএফ আমাদের ঘরে বাতাস বর্ষাপাতার মতো উড়বে তোমার লাভলক বাঁশির সুরে পথ হারাবে পথ পাবে আমারই পথে কাঁঠাল পাতায় জমবে নরম রঙের অভিমান লাজুক প্রিয়া জলকেলি বন্য সুখ আদিম গতর আঁচলে জমা করবে বৈশাখী মিছিল সারাটা বছর বেহুলার উঠোনে বারোমাস বেঁচে ওঠবে লখিন্দর ভালো কথা হলো ভালো কথার দরকার হয় না সেখানে সব নৌকা মাঝি চায়, কলম তো নাম কালির সাথে তুমিআমি বেঁচে যায় মুঠো মুঠো প্রেমে নেমে আসে যতসব অন্ধকারের মতো লাজুক ব্যথা রোপিত হবো তোমার ভেতর এই তো কথা রাধাদেহ আসওয়াদ আমার তাই গ্যাপহীন চুম্বন প্রার্থনা চুম্বনে চুম্বনে ঝরে যায় দেহাতীত ছায়া ঝরে যায় যাবৎ সব ভ্রমপ্রায় কালিমা নিহত বিয়ে আর থাকে না আর রবে না কামনায় কামনায় পুরাতন বছর চলো
Month: April 2021
একটি ফুলের দুটি কথা
পাখির একটা গল্প ছিল শুনেনি কোনো নৌকা পাতার একটা কথা ছিল শুনেনি কোনো বাতাস আমাদের ঘর ভরে যায় গন্ধরাজ আমাদের ঘর পেয়ে যায় হাসনাহেনা একটি ফুলের দুটি কথা জীবন দিয়ে আঁটা জোছনা রাতে বৃষ্টিমাখা আকাশগঙ্গা ঢাকা কলকাতা কলকাতা কলকাতা শুনেনি কোনো কথা শুনেনি আমার কথা নদীর একটা গল্প ছিল শুনেনি রাতের চাঁদ পাহাড়ের একটা কথা ছিল শুনেনি সোনালি রাত আমাদের ঘরে থেকে যায় নীরবতা আমাদের ঘরে নামে উদাস পাতা
জীবনকে মেঘনা নদীর জেলেও মনে হয়
জীবনকে কখনো কখনো ডমেস্টিক ট্রেন মনে হয়। চলছি তো চলছি। তবে চালানো হচ্ছে। স্টেশনে স্টেশনে নোঙর রাখি। মানুষ দেখি, পাখি দেখি, দেখি ক্লান্ত মেয়ের ঘুম। যে মেয়েটি সারা রাত দেহ বিক্রি করে ঘুমের ভারে ভারাক্রান্ত। তারপর অভিজ্ঞতাগুলো বগিতে তুলে যাত্রা শুরু করি অন্য কোনো স্টেশনের উদ্দেশ্য। মাঝে মাঝে জীবনকে মেঘনা নদীর জেলেও মনে হয়। সারাদিন জেলে ঘুমায়। রাতকে দিন বানায়, মাছ শিকার করে। লাইটার সার্চ খেয়ে শক্তি জমা করে শক্তিঘরে। কারণ সে-ই তো জেলের রাতের সূর্য। সকালে ব্যাগভর্তি মাছ। জীবনের মাছ। মাছ দেখে বউটার তার আকাশের মতো হাসি দেয়। যে হাসিকে পুঁজি করে জেলে প্রতিটি দিন ঘুমে ঘুমে কাটিয়ে দেয়। এইভাবেই ভাবনার চলাফেরায় জীবনে দাড়ি আসতে পারতো। কিন্তু আসলো না। ভাবনাগুলো পৃথিবীতে বেচেঁ থাকার ইচ্ছা পোষন করে। আমিও কেন যেন তাদের সাথে
বৃষ্টির খেলা হৃদয়ের কথা বলে
জেগেই দেখি সকালটা নরম নরম। নরম নরম সকালে গরম পায়ে ক্লাসের দিকে গেলাম। আটটায় ক্লাস। ঘুম থেকে উঠলাম আটটায়। দুই-তিন মিনিটের মধ্যেই প্রাথমিক ফ্রেশ হওয়ার কাজটি শেষ। গিয়ে দেখি ক্লাস চলছে। তবে সামনের দরজা খোলা। অনুমতি না নিয়ে ঢুকে পরলাম। অনুমতি নেয়নি। অনুমতি নেওয়াও একপ্রকার বিরক্তিকর কাজ। তবে টিচার ক্লাসে অনুমতি নিয়ে প্রবেশ করতে পারে, অনুমতি সাপেক্ষে প্রবেশ করলেই বিষয়টি নান্দনিক। টিচার ক্লাস নেয়ার আগে আমাদের হাজিরা নেন। প্রতি হাজিরার জন্য টিচার ০.১৭ মার্কস বরাদ্দ রাখেন। আমরা তো মুনির জাত, তাই হাজিরা পেলেই সন্তুষ্ট। হাজিরা কি পরিমাণ দেওয়া হচ্ছে, কেন দেওয়া হচ্ছে, কী উপায়ে দেওয়া হচ্ছে— এই বিষয়গুলো ভাবনার সময় আমাদের নেই। ভাগ্যের সুযোগে একবার কয়েদি হয়েছিলাম। কয়েদ মানে একটি জায়গা যেখানে থাকতে বাধ্য করা হয়; সকাল-সন্ধ্যা হাজিরা ডাকা হয়। তবে সেখানে হাজিরার জন্য
শিলার মতো কিছু একটা পড়ছিল
শিলার মতো কিছু একটা পড়ছিল যখন একমুষ্টি বৃষ্টি আমি চেয়েছিলাম উল্টো কথা শুনিয়ে আমায় ঘুম পাতালে পাতালে আমি বৃষ্টির জন্য কেঁদেছিলাম সব আকাশের নীল রঙ নেই নীল ঘুড়ি আকাশে উড়ে তবু উড়ে একমুঠো বৃষ্টি আমি চেয়েছিলাম তুমি সাগর দেখিয়ে শান্ত হলে আমি নদী পেলেই খুশি ছিলাম ঘরের ভেতর ঝরনা একটা দরকার ছিল বিদায় ঘন্টা শুনিয়ে দিলে শান্ত সুরে খুব অজানা আদিম বাড়ির অলস পুরে এক পশলা বৃষ্টি আমি চেয়েছিলাম তুফান এলে চোখের পাতায় ভর দুপুরে বাঁশপাতার সবুজ আমায় স্বপ্ন দেখায় হলুদ খামের তোমার কথা মনে করে এক পৃথিবী বৃষ্টি আমি চেয়েছিলাম
সংসারটা কার সাথে হবে?
অকারণে প্রেম হয়ে যেতে পারে। প্রেম দৃশ্যমানভাবে অকারণেই হয়। অকারণে হয়ে যাওয়া প্রেমকে কারণ করে তুলতে ভাবতে হয় বারবার ভাবতে হয় তারপর ভাবতে হয় অতঃপর ভাবতে হয় এবং ভাবতে হয় তারপর ভাবতে হয় আবার ভাবতে হয়। প্রেমে পড়ে কবিতা লেখা আর কবিতাকে নিয়ে সংসার করা এক কথা না। যাদের অনেক সম্পদ যারা পোশাক পরিবর্তনের মতো প্রেমিক প্রেমিকা পরিবর্তন করে তাদের হিসাব আলাদা। আমরা যারা গরীব ঘরের সন্তান। আমরা যারা একটা পোশাক ক্রয় করার আগে অনেকবার ভাবি মানে ক্রয়কৃত পোশাকটা দিয়ে ইদের নামাজ পড়তে পারব তো বা কোন বিশেষ অনুষ্ঠানে যেতে পারব তো, তাদের ভাবতে হয় বাধ্য হয়ে ভাবতে হয় সংসারটা কার সাথে হবে আর কার সাথে হবে না। প্রেম করার এখনই সময়, নতুবা আয়ু কমে যাচ্ছে বয়স বেড়ে যাচ্ছে!? বিয়ে বয়স আটকে ফেলে? মানে
মল্লিকপুর
আজকে শুক্রবার। ছোটকালে মনে করতাম পৃথিবীর সব কিছু বন্ধ থাকে শুক্রবারে। এখন জানি কোনো বারেই কোনো কিছু বন্ধ থাকে না। ‘বিরতি, বন্ধ’ মানুষের বানানো শব্দ। মানুষের বানানো শব্দ থেকে দূরে থাকতে পারলে পৃথিবীর কাছাকাছি থাকা যায়। পৃথিবীর কাছে থাকা মানে কসমিক সিস্টেমের খুব কাছে যাওয়া। অনেক শব্দের ভেতর দিয়ে আমরা নিজের অবস্থান জানতে চেষ্টা করি বলেই আমাদের কাছে আমরা আগন্তুক। আগন্তুক রেজা আজকে যায় নরসিংদী জেলার রায়পুরা উপজেলার হাঁটুভাঙ্গা রেলওয়ে স্টেশনের নিকটবর্তী গ্রাম মল্লিকপুরে। শুধু রেজা যায়নি, রেজাসহ দশজনের একটি টিম আজকে গিয়েছে মল্লিকপুর গ্রামে। এমরানুর রেজার কাছ থেকে জানতে পারি গ্রামটি মনের মতো মনোরম। গ্রামের চেয়ে গ্রামের মানুষের আচরন আরও বেশি অমায়িক সুন্দর। গ্রামের ঠিক উঠোনে মেঘনা নদী। মূল মেঘনা নয়, মেঘনার শাখা। বাউলদের জীবন এখানে মেঘনার মতোই সতত প্রবাহমান। মেঘনা আর
মানুষ আসে না, আসে বয়স
পৃথিবীতে মানুষ আসে না, আসে মানুষের বয়স। বয়স কথা বলে, বয়স খেলাধূলা করে, বয়স চাকরি করে, বয়স বিয়ে করে, বয়স হিজরতে যায়, বয়স বিপ্লব করে, বয়স বাবা হয়, বয়স ঠাকুরমা হয়, বয়স দাদা হয়, বয়স প্রেম করে, বয়স কথা দিয়ে কথা রাখে না, বয়স বৃন্দাবনে যায়, বয়স রাধা হয়, বয়স রাজা হয়, বয়স কান্না করে, বয়স মারা যায়। পৃথিবীতে মানুষ আসে না, আসে বয়স
প্রত্যেককে বাড়ি যেতে হয়
সুজলা-সুফলা, শস্য-শ্যামলা প্রকৃতির অপার মহিমায় লালিত নরসিংদী জেলার বেলাব উপজেলার প্রায় ত্রিশ হাজার লোকের আবাস ভূমি সল্লাবাদ ইউনিয়ন পরিষদ। পরিবার সংখ্যা ৫ হাজার ১৭০ টি। গ্রামের সংখ্যা ৩টি। মৌজার সংখ্যা ৪টি। হাট-বাজার সংখ্যা ৪টি। ইব্রাহিমপুর মুক্তিযোদ্ধের বধ্যভূমি, ইব্রাহিমপুর সৈয়দ মো. আ. খালেক শাহ (রা.) এর মাজার শরীফ এই ইউনিয়ন পরিষদের যেনো মোমবাতি রেখা। আমরা সল্লাবাদ গিয়েছি। উদ্দেশ্য সামাদ শা’র মাজার পরিদর্শন। নেংটার মাজার হিসাবেও সল্লাবাদের এই মাজারটি পরিচিতি লাভ করেছে। আভিধানিকভাবে এটি সররাবাদ দক্ষীণ পাড়া আ. ছমেদ লেংটার মাজার শরিফ নামে বেশ জনপ্রিয়। নেংটা মানে উলঙ্গ। অর্থাৎ ছামাদ সাহেব কাপড় পরিধান করতেন না। তার পীর জলিল শাহ। জলিল শা’র বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কালিগুচ্ছ। নেংটা কাউকে মুরিদ করতেন না। যারা তার কাছে আসতেন সবাই তার ভক্ত। নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, গাজীপুর, ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ, সিলেটসহ বাংলাদেশের
আমি এক এমরানুর রেজাকে চিনি
আমি এক এমরানুর রেজাকে চিনি যার বাড়ি মেঘনা নদীর তীরে। সে কত কিছু করে, সব কিছুই ডেমো। তার ডেমোকে ট্রেন মনে কইরা অনেকে ওঠে বসে। সময় ফুরিয়ে যায়, মাগার ট্রেন তো চলে না। একসঙ্গে যাত্রী সকল গালি দিয়া নাইম্মা পড়ে এক সময়। এমরানুর রেজা তখন মাথায় গামছা বেঁধে মেঘনা নদীতে নৌকা চালাইতে যায়, গুদারা ঘাট থেইক্কা ডাক আহে— এই মাঝি নিয়া যাও, নিয়া যাও। নারী কণ্ঠের ডাক। এমরানুর রেজা তখন হালুবালু কইরা গুদারা ঘাটের দিকে যায়। নারী নৌকায় ওঠে— হিলহিল কইরা হাসতে থাকে মাঝির বইটা। বইটা চালাইতে চালাইতে মাঝি ক্লান্ত হয়ে যায়, দূরে কিনারা দেখা যায়, কিনারার লাগাল পাইনা মাঝি। নদীর মাইদদে নৌকা থেমে যায়। আতকা আচানক এক বাতাস আহে, ঘূর্ণি বাতাস— এমরানুর রেজা, তার নৌকা আর সেই নারী কোথায় যেন হারিয়ে