ডানপিট সময় রাবারের তার কাক বসে শরীরে তার বারবার পাখি বসে বসে স্মৃতির পাপিয়া চোখ অর্কিড বল গতিতে গতিতে সামনে চলে— ধরতে গেলে ভয় আরও নিকটে গভীর হলে আরও আরও ভয় প্রানে থরথর, দূরে থাকলেও মানবিক রোগ ধরে আপন করে— ভাল লাগে না কিচ্ছু ভালো লাগে না, অন্তরের সুর শুকিয়ে যায় বারবার কাছে গেলে ভয় ভয় দূরে থাকা নয় নয় সমাজ খাঁচা হয়ে হাসে— জলাতক প্রকৃতি তবে ক্যামনে বাঁচে ক্যামনে বাঁচে এতো বিপদ সংকেত থাকলে জাহাজ ক্যামনে যাবে সেন্টমার্টিন— ভাষা ক্যাফে কিংবা ইমাম মামার টিস্টলে বসে দিনাপাত করলে কিছু কথা জমে কানে— কাজ তো চাই কাজ— বিভূতি স্বপ্নেরা খেলা করে মনে— আরও আরও প্রান চাই আরও প্রান অনেক পাতার নাচ, অনেক নাচের ভাঁজ ঝরে পড়ে মধুমাস উঠোনে— যা করবে নোভা তা করতে পারে না, যা
Month: April 2021
হারকিউলিসনীতি
বাজে কাজ করতে অভ্যস্ত আমি। যেকোনো বাজে কাজই ঘোষণা দিয়ে করতে আমার আপত্তিতে বাঁধে না। এমন নয় বাজে কাজ কেবল আমিই করি। আমার এককালীন গুরু কাজী নজরুলের সুরকথার মতো আমার ভেতরও রচিত হয় আত্মকথন— প্রভু, তুমি অন্তর স্থলের খবর জান ভেবে আমি লাজে মরি লোকচক্ষে ফাঁকি দিয়ে কি না ভাবি, কি না করি। বাজে কাজ এত শক্তিশালী যে পৃথিবী এখনো টিকে আছে বাজে কাজের জাগতিক মহিমায়। পৃথিবী শিশুময় হতে পারতো কিন্তু বাজে কাজের জন্য প্রাকৃতিক গান ফিল্টারিং হয়ে কানে আসে। ফলে আওয়াজ আর কেওয়াজ ভিন্ন পরিবারের লোক। অসংখ্য বাজে কাজের মধ্যে আমি যে বাজে কাজটি বিশেষভাবে করি তা হল ‘পড়াশোনা’। জনাব পড়াশোনার সাথে আড্ডা দেয়ার জন্য লাইব্রেরিতে যাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরীতে। লাইব্রেরিতে জনাব পড়াশোনা বেশ জনপ্রিয়। লাইব্রেরিতে সব সময় গম গম, দম দম অবস্থা।
পীরে ঘুম
মানুষের দুটি কান, দুটি চোখ, একটি মুখ। না, আমি গরুর রচনা লিখতে বসি নাই। গরুর রচনার মতো একটি হিসাব করতেই চাই। হিসাবটা অবশ্যই প্রাকৃতিক। দুটি কান এবং দুটি চোখের কাজ গ্রহণ করা, একটি মুখের কাজ প্রকাশ করা। গ্রহণ করার কাজটি মানুষের, ব্যক্ত করার কাজটি ব্যক্তির। কিন্তু চোখের এবং কানের কাজটি মানুষ কিংবা ব্যক্তি মুখ দিয়েই করে থাকে। মুখের কাজ তখন থাকে কথার সাথে ফেনা অথবা থুথু বের করা। ফলে প্রচুর আজাইরা কথার মুখোমুখি হতে হয় প্রতিদিন। কথা প্রসঙ্গে একদিন এক হুজুরকে জিজ্ঞেস করলাম আপনার পীরের [গুরু] নাম কী? হুজুর উত্তর দিলেন— পীরে কামেল, পীরে তাহাজ্জুদ হযরত মাওলানা শাহ সূফী… (নাম) … নামের আগে ও পরে বিশেষণের অভাব নেই। আমি তখন তাকে বললাম ভাই সব বিশেষণের মানে বুঝলাম কিন্তু পীরের তাহাজ্জুদ মানে কী? হুজুর তখন আমাকে বললেন,
ময়লা ও খাবার
একদিন। গ্লাসের জলে একটি মাছি পড়ে। তার পাখা ভিজে যাচ্ছে এবং সে প্রায় জলে ডুবে যাচ্ছে। তার বেঁচে থাকার তীব্র ইচ্ছা তার ছটফটানিতে দেখতে পেলাম। তার প্রান রক্ষা করলাম। মাছিটি নড়তে পারছে না। তার শরীরে এমন একটি রং দিয়ে দিলাম যাতে হাজার মাছির ভীড়েও আমি তাকে সনাক্ত করতে পারি। সেদিনের মতো মাছিটি উড়ে গেলো। তাকে আমি পোষ মানাতে চাইনি। কারন মাছিকে কেউ পোষ মানাতে চায়না। এখন প্রতিদিন খাবার টেবিলে পৃথিবীর ময়লা নিয়ে সেই মাছিটি হাজির হয়। খাবার নষ্ট করে। আমি তার প্রতি রেগে যেতে পারি কিন্তু রেগে যায় না। কারন আমার কাছে যা ময়লা মাছির কাছে তা খাবার।
অর্থগত শব্দের ভেতর
কোন মায়ায় ধরবে তুমি জীবন? আলো রেখার মতো অলাতচক্র বারবার জাল ফেলে থাকে উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম উপর নিচ আমাদের ঘর হওয়ার কথা আমাদের একটা ব্যক্তিগত নদী থাকার কথা আজ আমরা দূরাগত তারা পরিণীতা কাল আসবে তো? ভোরের আলোয় গ্রামের পথ ধরে হাঁটবে তো? কোকিলডাকা ভোর সকাল হয়ে আসা অপেক্ষা নির্জনতা ডাকে তোমায় দূরাপনা, তোমাকে অর্থগত শব্দের ভেতর খুঁজে পাই না, সরিষা ফুলের মতো হারিয়ে যাও মিশে যাও মিলিয়ে যাও শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে। এগিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী পৃথিবী ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে সাগরের দিকে পুরাতন বাড়িটা পুরাতন রয়ে গেল শ্যাওলা পড়েছে তার উপর মানুষ অসহায় হলে মেঘও আকাশহীনা দলছুট আদি মানবের ভুল এখনও মানুষ বয়ে বেড়ায় মেঘ আর বৃষ্টির দূরত্বে আমরা বৃষ্টি হলে চোখ চেয়ে থাকে কড়তাঘরে ঘুরপাক নিয়তি কোয়ারেন্টাইন সময় বজ্রপাত শিলাবৃষ্টি মানুষের মৃত্যু আমরা এখনো দূরের তারাদের দেশে গন্ধরাজ বেলীফুল কাঁঠালপাতা ডালিয়া আকাশ পরিষ্কার হলে বর্ণহীন গন্ধহীন ভালোলাগা মেঘের আশায় বসে থাকে মুর্শিদমন পৃথিবীর উপরে ছায়াবাজ পুতুল মানুষের উপরে
অনেক মিলিত শোক
এরা কী মানুষ হাত কান নখের মতো সূর্য দেখা যায় কারা এরা যারা জোয়ারে জোয়ারে নেমে আসে অভিনয় করে পানসে নদীর তীরে কুয়াশায় কতিপয় আজাইরা বকবক কুয়াশায় কতিপয় হেমলক কুয়াশায় কতিপয় মুখ শান্ত হবার কিছু নেই, ছিল আছে থাকবে এমন জাতীয় আশা লাইটের পেছন থেকে দেখানোর অভ্যাস ওফেলিয়ার মৃত্যু সহজে মানুষকে বিশ্বাস করে, আড়ালে গেলে ঠিক শব্দটি অনেকটা বেঠিক মাঝির শেষ ঠিকানা ফ্রি টিকিটে পাওয়া যেতে পারে, একেবারে ঠিক দুজন হলে, তিনজনের ভেতরে ঘোলাটে হৃদয় কারা তারা জলের গায়ে হেঁটে চলে আলোকিত হত্যার ভোরে অনেক মিলিত শোক একজনের এক মুহূর্তের বৃষ্টির সমান নহে, বর্শার মাথায় শীত নামে কালে কালে— মাটির কাছে মাটি গেলে মানুষ শব্দটি কোথায় থাকে, কোথায় থাকে— এরা কী মানুষ তবে নখের মতো যাদের হৃদয় মুখ কথা আলো শেষ হলে চোখ অপেক্ষা করে নীরবতার, দ্বীপের সবপাশে এখন গভীর অন্ধকার
মানুষ মারে মানুষ বাঁচায়
জীবনের সব স্তর শেষ হয়ে গেলে বনলতাপৃথিবী কাছে আসে, কাছে এসে বলে এতোদিন কোথায় ছিলেন? সব সুখ উড়ে যায় বাতাসে— প্রচন্ড ব্যথায় আকাশও বুক খুলে বসে, গোপন গল্পরা রাতচোখে সবুজ আনে বনঘাসে। নরম মাংসের মতো হৃদয়ের গভীরে হাঁটে চাঁদের বাজার— মানুষ মানে একটা হাইফেন একটা নিছক কাগজের মেলা। অনেক অল্প অভিধানে মাথার ভেতর খেলা করে শব্দের পিকনিক, অবস্থান ত্রিমোহনী সুরে বাতাসের পরিবারে কালভার্ট আঁকে— মানুষ মারে মানুষ বাঁচায়। ধর্মঢাল চোখের আগে চলে রোবটের মতো— রাত নাই ভোর নাই দুপুর নাই এক কথাতে সারাক্ষন। ভয়ের বাজারে একমাত্র দ্রব্য পরকীয়া পরকাল, ভয়ের বাজারে ডানাকাটা পরী উড়ে আকাশে বাতাসে কারনে অকারনে জ্বর হবে পৃথিবীর জ্বর হবে নিশ্চিত ভেসে যাবে ডানবাম বৃক্ষ পাবে যমুনার চর সবুজ হবে কালাচাঁন
যে তুমি রোদের তলে
আমি তোমারে মনে মনে ডাকি তোমার মন বলে কিছু আছে নাকি যে কাল গ্যাছে নদীর জলে যে তুমি এখন রোদের তলে যে ফুল হাসে সূর্যের তালে— তাদের সাথে চকিত হৃদয়ের কানাকানি হয় নাকি আমার আকাশে প্রতিদিন একটি পাখি আসে, একটি ঘর আসে, একটি পালতোলা নৌকা আসে, যৌবনা কামনার বর্ষা আসে, পিকনিকমাখা নদীর তীর আসে সাথে আসে উদাম এক বাউল চর… আমি আঁকতে থাকি কেবল তোমার ঘর, তোমার সাইকেল, তোমার পাঠানো ফেইসবুক ইনবক্স এমন করে দিন চলে যাবে, চোখে নেমে আসবে বুড়ো অন্ধকার, রাতকে তখন রাত মনে হবে না, জল ভাঁটফুল থাকবেনা শরীরে শরীরে, সূর্যের আলো আরও ধূসর, পরিপূর্ন চাঁদ আয়মামা সুখ হবে ডিমলাইট আলো ঘরে আমার সিসিফাস মন তখনো একটু একটু করে টেনে আনবে তোমায় প্রিয়তম সম্পর্কে, কসম জান ভাসবে ভালো আগের মতো করে
একটি লেনদেনের হিসাব
একদিন জীবনানন্দ দাশ কইলেন পৃথিবীর নাকি গভীর অসুখ। কথাটা শুনে অনেকক্ষণ আমার মন বিষন্ন ছিল। ইন্টারমিডিয়েটে যখন কাজল স্যারের অর্থনীতির ক্লাস করতাম তখন তিনি আমাদের বিশ্বাস করাতে বাধ্য করতেন বাংলাদেশের চেয়ে গরীব রাষ্ট্র আর হতে পারে না— কিছু দিনের মধ্যে বাংলাদেশ দেউলিয়া হয়ে যাবে। স্যারের ক্লাস করার পর আমার আর কোনো ক্লাস করার ইচ্ছা থাকতো না। সাইকেলের তালা খুলে সোজা বাড়ি চলে যেতাম। বাড়ি গিয়ে ফ্রেশ হয়ে লাঞ্চ করে এক ঘুম। ঘুম থেকে ওঠে সান্ধ্যকালীন হাওয়া মাথায় ঢুকার পর স্যারের ক্লাস নির্দ্বিধায় ভুলে যেতাম। কিন্তু এখন দেখি বাংলাদেশ অনেক ধনী রাষ্ট্র। ডেসটিনি হাজার হাজার কোটি টাকার আমানত নিয়ে দূরে কোথাও চলে যায়— বাংলাদেশের মানুষের কিচ্ছু হয় না। হলমার্ক কেলেঙ্কারিও হাজার কোটি টাকার হিসাব— তাও বাংলাদেশের মানুষের এক কেজি ইলিশ চার হাজার