আল্লা ফেরেশতা বানাইলেন। ফেরেশতার ভালো কাজ ব্যতীত অন্য কোনো প্রকার কাজ করার ক্ষমতা নেই। আল্লার সামনে শয়তান নিজের অবস্থান শক্তিশালী করে। শয়তানেরও খারাপ কাজ ব্যতীত অন্য কোনো কাজ করার ক্ষমতা নেই। আল্লা মানুষ বানাইলেন যারা সবকিছু করতে পারে— ভালো কিংবা মন্দ অথবা মন্দ ভালো। তাইতো আদম-হাওয়া পরাধীন জীবন পছন্দ করে না, পছন্দ করে না সি সি ক্যামেরা। বেহেশতে সি সি ক্যামেরা আছে— যাকে সবকিছু করার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে সে কী নিষেধ মানে! হাওয়া-আদম গভীর প্রেমে ব্যস্ত— তার পাখনায় তার পালক, তার পালকে তার রক্তের স্পন্দন। সি সি ক্যামেরায় তাদের দেহজ প্রেমবাক্য রেকর্ড হয়। আল্লা তাদের ডাকলেন এবং স্বাধীন ভূমি পৃথীবিতে পাঠাইলেন। আদম স্বাধীন মনে কান্দে কেউ তাকে সান্ত্বনা দিতে আসে না, হাওয়া চোখের জলে বুক ভাসায়— কেউ টিসু প্যাপার নিয়ে হাজির হয় না। পৃথিবী
Month: April 2021
সুন্দর প্রেমের নাম ঝগড়া
মা হোক সন্তানের প্রধান পরিচয়
সন্তান যখন পৃথিবীতে আসে মাদের রাতদিন বলে কিছু থাকে না— একটাই দিন থাকে— সন্তানদিন। সন্তান হাসলে মা হাসেন, সন্তান কাঁদলে মা কাঁদেন, সন্তান ঘুমালে মা ঘুমানোর স্বপ্ন দেখেন, সন্তান জেগে থাকলে মা জেগে থাকেন। বীর্য থেকে ব্যক্তি হওয়া পর্যন্ত যতবার সন্তানের পরিবর্তন সাধিত হয় ততবারই মায়ের পরিবর্তন সাধিত হয় দৈহিক ও মানসিকভাবে। সন্তানের পরিবর্তন চোখে পড়ে কিন্তু মায়ের পরিবর্তন সমাজের পর্দায় ঢাকা পড়ে যায়। যখন সন্তান মায়ের পেটে আসে তখন সন্তানের জন্মদিন, মায়ের পেট থেকে যখন সন্তান পৃথিবীতে আসে তখন মায়ের জন্মদিন আর সন্তানের প্রথম মৃত্যুদিন। মায়ের সাথে সন্তানের সম্পর্ক যত গভীর ততোধিক গভীর সম্পর্ক আর কারো সাথেই থাকে না। অথচ সন্তানকে পরিচিত হতে হয় বাবার পরিচয়ে। বিষয়টি কৃত্রিম ও অবৈজ্ঞানিক। দশ মাস একটা পাথরের সাথে থাকলেও পাথরের গুনাবলি ব্যক্তির মধ্যে স্থানান্তরিত হবে। আর
মুঠোফোনের স্মৃতি
এন্ড্রয়েড। আমার প্রথম এন্ড্রয়েড মোবাইলটির নাম ওয়াল্টন। কিনেছিলাম দুই হাজার চৌদ্দ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। দুই হাজার সতেরো সাল পর্যন্ত তার সাথে আমার সংসার। সংসার আমাদের ভালোই ছিল। অল্প সময়ের জন্যও সে আমাকে কোন কষ্ট দেয়নি। আমি? সে হয়তো আমাকে সুখ দিয়েছে আমি তাকে দিয়েছি প্রশান্তি। আমি তার মর্যাদা ও সম্মানে কোনো প্রকার আঘাত করিনি। তাকে তার মতো থাকতে দিয়েছি। তার স্বাতন্ত্র্যবোধে ব্যক্তিজিজ্ঞাসা চাপানোর মতো অপদার্থ ব্যক্তিত্ব ধারণ করার মতো পারিবারিক শিক্ষা আমার নেই। তাকে দিয়েছি শতভাগ নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা। তারপরও আমাদের সংসার তিন বছর টিকেছিল। খুব ভালো করেই টিকেছিল। কোনো প্রকার কথা কাটাকাটি মনোমালিন্য আমাদের সংসারে নেই। তাই তো তার দেহ আমার বেডরুমে রেখে দিয়েছি। মমি করে নয়, প্রেমি করে। মেকানিকের কাছে তাকে নিয়ে যাইনি। সার্ভিস দিয়ে সংসার ধরে রাখার মানসিকতা আমার নেই।
বিশ্বাসের ঘরে শুন্যতা
বিশ্বাসের ঘরে শুন্যতা শুন্যতা গোয়ালে, শুন্যতা নদীর ভেতরে-বাহিরে শুন্যতা ইমাম সাহেবের আসমানী ওয়াজে দেবদারু বৃক্ষের নিচের আসনটি শুন্য শুন্য প্রান্তিক রেলওয়ে স্টেশন বড় শুন্য শুন্য লাগে, বড় একা একা লাগে প্রদীপ মৃত হলে বিগলিত অন্ধকার অন্ধকারে জ্বলে জ্বলে অঙ্গার বড় একা একা লাগে, বুকের বাম পাশে কুয়াশার ধোঁয়া আগুনে পুড়ে ঠাণ্ডা হচ্ছে নাগরিক জীবন নগরের ঘুম ঝুলে থাকে বাসের ফুটপাতে শুন্যতা বিনয় ভবন থেকে অরশ্রী মার্কেট, অরশ্রী মার্কেট থেকে ফেয়ারলি স্ট্রেট শুন্যতা নাগরিক আশীর্বাদের ক্যানভাসে অসহায় শুন্যতা, বড় শুন্য শুন্য লাগে অসহায় শুন্যতা, অসহায় জীবন
শুদ্ধতার পথে আমার যাত্রা
লাভ লসের হিসাব তো এখন পর্যন্ত করতে পারিনি। লেখালেখি আমার চিন্তার আয়না, নিজেকে দেখি। মনে যে মাছ খেলা করে তাই লেখা নামক প্রতারক জাল দিয়ে পৃথিবীর খাতায় তুলে আনি। খুব পারফেকশনিস্ট যারা আছেন তাদের থেকে আমি বহুদূরে, আদর্শিক তেল হতেও আমি চাই না, আমি কেবলই আমার মনের খেলাকে বাইরের খেলার সাথে উপস্থাপন করে থ্রী ডাইমেনশনাল চোখে দেখার চেষ্টা করি। অনেকে আমাকে কবি বলেন, অনেকে লেখক, অনেকে দার্শনিক, অনেকে বাউল, অনেকে আবার মনে মনে পীর কেবলা ভাবেন, অনেকে আবার মহাব্যবস্থাপক উপাধিও দিয়ে থাকেন। অনেকে খুব ভালো মানের পাগলও বলেন। আমি কেবল তাঁদের শব্দের দিকে চেয়ে থাকি! কোথায় পাই তারা এতো শব্দ। একটি শব্দের [আমি] অর্থ আজ পর্যন্ত আবিষ্কার করতে পারিনি। আমার আমি যখন জীবন নামক সাগরে পড়ে তীর খুঁজে পাচ্ছে না তারা তখন এমসিকিউ
স্বাধীনতা যুদ্ধের মতো মানুষ
মাঝে মাঝে কবি হতে ইচ্ছে করে যে কবি কবিতা লেখে না, নাম তার কবি এমন কবি হতে ইচ্ছে করে। ইচ্ছে করে এসি রুমের চব্বিশ তলায় বসে মিনিটে মিনিটে কবিতা লিখতে। ইচ্ছে করে করোনার চেয়ে শক্তিশালী হতে। ইচ্ছে করে পৃথিবীর অর্ধেক মানুষ মেরে ফেলতে। সবার বেঁচে থাকার অধিকার নেই। সবার বেঁচে থাকার অধিকার রয়েছে। মানুষ যারা ঘাম বিক্রি করে বেঁচে থাকে। মানুষ যারা হাত-পা বিক্রি করে বেঁচে থাকে। মানুষ যারা ঘাম বিক্রি করে বেঁচে থাকে তাদেরকে আমার দরকার। তাদেরকে আমি ক্লাস ওয়ানে ভর্তি করাবো। তাদেরকে নামাতা শিখাবো। তুই একে তুই। তুই গুনে মানুষ। মানুষ নয় তারা। তারা গরীবের খাবার সংহার করে বেঁচে থাকে। হালারা গরীবের চেয়েও গরীব। যখন দেহি গরীবের মাংস বিক্রি করে আজ তারা ধনী, যখন দেহি গরীবের রক্তের উপর দিয়ে গড়ে তুলে বিলাসবহুল
ভ্রমণচারী মেঘের সাথে আমি
অনতিউচ্চ পর্বত আর উপত্যকার উপর বাতাসে ভেসে বেড়ানো একখণ্ড মেঘের ফালির মতো আমিও ভ্রমণ করেছিলাম একাকী সহসা আমার চোখে আসতে থাকল জনতার জীবনপ্রবাহ, অসংখ্য দূর্বাফুলের কাঁচা শরীর; মৃদু বাতাসভূমিতে দৃশ্যত তাদের আনন্দমিছিল আর নৃত্যাৎসব মাতাল করে তুলছিল স্বর্গের হ্রদবাসী আর মর্ত্যের জনারণ্যকে। বিরতিহীনভাবে চলছিল পুষ্পরাজির নৃত্যক্রিয়া যেমন করে নক্ষত্রতারা আলো বিলায় আর মিটমিট ছন্দে চলতে থাকে প্রশস্ত ছায়াপথে উপসাগরের কূল ছুঁয়ে সরলরেখার মতো তারা ছড়িয়ে পড়ল অন্তত সারিতে এক পলক বিনিয়োগ করেই আমার দৃষ্টি সীমায় হাজারো পুষ্প যাদের আনন্দগর্ভে জন্ম নিচ্ছিল অনিন্দ্যসুন্দর সন্তান। অনিন্দ্যসুন্দর সন্তানের পত্তন ইথারকেও নাচিয়ে ছিল তথাপি সকল আনন্দের আয়োজন তাদের আনন্দের কিরণে আমার কবিত্ব আত্মা নেচে উঠল এ রকম এক আশ্চর্য আনন্দে চোখের পাতা কপালের সাথে সেলাই করে চেয়ে থাকলাম— এবং শুধু চেয়ে রইলাম, চিন্তা বিযুক্ত মন তখনো করিনি অনুধাবন; কী ঐশ্বর্য উদ্ভাসিত হয়েছিল আমার আমির দেশে। যখন অবকাশে পালঙ্কে গা হেলিয়ে দিই স্বর্গীয় চিন্তামগ্ন মনে তারা চুমুর আবেশ ছড়িয়ে
বাওনবাইরার ভাষা [১]
আসব > আমু যাব > যামু খাব > হামু রাঁধব > রান্দুম দেখব > দেহুম শুনব > হুনুম মারব > মুরামু ডাকব > ডাহুম [তরে মুরাইয়্যা বাফ ডাহামু] করব > কুরুম মরব > মুরুম [তরার যন্ত্রণায় আজা মুরুম] (বিশেষত মায়ের উক্তি) উচ্চারণের সময় ‘ব’ ধ্বণিটি ‘ম’ হিশেবে উচ্চারিত। কখনো মাঝের বর্ণটি উধাও; আবার প্রথম বর্ণে ‘উ’ কার চলে আসে। [ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আঞ্চলিক ভাষা]
আমার সোনার বাংলা
‘ভালোবাসা’ শব্দটি প্রথম সাহসের সাথে উচ্চারন করেছিলাম প্রাইমারি স্কুলের মাঠে লাল-সবুজ পতাকার নিচে— আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। বাংলা মানে তখন কেবল আমার পরিচিত কয়েকটি গ্রাম। বয়স বাড়ে— বাংলার আয়তনও বাড়তে থাকে। একসময় বাংলার আয়তন মানে বাঅনবাইরা ও ঢাহা। এখন যখন লোকে বলে আমি বড় হইছি (বয়সে) তখন বাংলার ধারনাও আমার কাছে কেবল বাংলাদেশ নয়— বাংলা মানে বাংলা ভাষার প্রতি প্রীতিবোধ আন্তরিকভাবে ধারন করে এমন জনগোষ্ঠী। এখন দেখি ছোট কালে যে ‘ভালোবাসি’ শব্দটি সাহসের সাথে উচ্চারন করেছিলাম সেখানে সাহস ছিল না, ছিল অজ্ঞতা, ভন্ডামি, ভয়ভীতি। কারন আমি যে জেনে গেছি সন্তান কখনো মাকে ভাগ করতে পারে না— আর ভাষা তো আমাদের মায়েরও মা…