আসব > আমু যাব > যামু খাব > হামু রাঁধব > রান্দুম দেখব > দেহুম শুনব > হুনুম মারব > মুরামু ডাকব > ডাহুম [তরে মুরাইয়্যা বাফ ডাহামু] করব > কুরুম মরব > মুরুম [তরার যন্ত্রণায় আজা মুরুম] (বিশেষত মায়ের উক্তি) উচ্চারণের সময় ‘ব’ ধ্বণিটি ‘ম’ হিশেবে উচ্চারিত। কখনো মাঝের বর্ণটি উধাও; আবার প্রথম বর্ণে ‘উ’ কার চলে আসে। [ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আঞ্চলিক ভাষা]
Day: April 18, 2021
আমার সোনার বাংলা
‘ভালোবাসা’ শব্দটি প্রথম সাহসের সাথে উচ্চারন করেছিলাম প্রাইমারি স্কুলের মাঠে লাল-সবুজ পতাকার নিচে— আমার সোনার বাংলা আমি তোমায় ভালোবাসি। বাংলা মানে তখন কেবল আমার পরিচিত কয়েকটি গ্রাম। বয়স বাড়ে— বাংলার আয়তনও বাড়তে থাকে। একসময় বাংলার আয়তন মানে বাঅনবাইরা ও ঢাহা। এখন যখন লোকে বলে আমি বড় হইছি (বয়সে) তখন বাংলার ধারনাও আমার কাছে কেবল বাংলাদেশ নয়— বাংলা মানে বাংলা ভাষার প্রতি প্রীতিবোধ আন্তরিকভাবে ধারন করে এমন জনগোষ্ঠী। এখন দেখি ছোট কালে যে ‘ভালোবাসি’ শব্দটি সাহসের সাথে উচ্চারন করেছিলাম সেখানে সাহস ছিল না, ছিল অজ্ঞতা, ভন্ডামি, ভয়ভীতি। কারন আমি যে জেনে গেছি সন্তান কখনো মাকে ভাগ করতে পারে না— আর ভাষা তো আমাদের মায়েরও মা…
স্মৃতির পাপিয়া
ডানপিট সময় রাবারের তার কাক বসে শরীরে তার বারবার পাখি বসে বসে স্মৃতির পাপিয়া চোখ অর্কিড বল গতিতে গতিতে সামনে চলে— ধরতে গেলে ভয় আরও নিকটে গভীর হলে আরও আরও ভয় প্রানে থরথর, দূরে থাকলেও মানবিক রোগ ধরে আপন করে— ভাল লাগে না কিচ্ছু ভালো লাগে না, অন্তরের সুর শুকিয়ে যায় বারবার কাছে গেলে ভয় ভয় দূরে থাকা নয় নয় সমাজ খাঁচা হয়ে হাসে— জলাতক প্রকৃতি তবে ক্যামনে বাঁচে ক্যামনে বাঁচে এতো বিপদ সংকেত থাকলে জাহাজ ক্যামনে যাবে সেন্টমার্টিন— ভাষা ক্যাফে কিংবা ইমাম মামার টিস্টলে বসে দিনাপাত করলে কিছু কথা জমে কানে— কাজ তো চাই কাজ— বিভূতি স্বপ্নেরা খেলা করে মনে— আরও আরও প্রান চাই আরও প্রান অনেক পাতার নাচ, অনেক নাচের ভাঁজ ঝরে পড়ে মধুমাস উঠোনে— যা করবে নোভা তা করতে পারে না, যা
হারকিউলিসনীতি
বাজে কাজ করতে অভ্যস্ত আমি। যেকোনো বাজে কাজই ঘোষণা দিয়ে করতে আমার আপত্তিতে বাঁধে না। এমন নয় বাজে কাজ কেবল আমিই করি। আমার এককালীন গুরু কাজী নজরুলের সুরকথার মতো আমার ভেতরও রচিত হয় আত্মকথন— প্রভু, তুমি অন্তর স্থলের খবর জান ভেবে আমি লাজে মরি লোকচক্ষে ফাঁকি দিয়ে কি না ভাবি, কি না করি। বাজে কাজ এত শক্তিশালী যে পৃথিবী এখনো টিকে আছে বাজে কাজের জাগতিক মহিমায়। পৃথিবী শিশুময় হতে পারতো কিন্তু বাজে কাজের জন্য প্রাকৃতিক গান ফিল্টারিং হয়ে কানে আসে। ফলে আওয়াজ আর কেওয়াজ ভিন্ন পরিবারের লোক। অসংখ্য বাজে কাজের মধ্যে আমি যে বাজে কাজটি বিশেষভাবে করি তা হল ‘পড়াশোনা’। জনাব পড়াশোনার সাথে আড্ডা দেয়ার জন্য লাইব্রেরিতে যাই। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্ট্রাল লাইব্রেরীতে। লাইব্রেরিতে জনাব পড়াশোনা বেশ জনপ্রিয়। লাইব্রেরিতে সব সময় গম গম, দম দম অবস্থা।
পীরে ঘুম
মানুষের দুটি কান, দুটি চোখ, একটি মুখ। না, আমি গরুর রচনা লিখতে বসি নাই। গরুর রচনার মতো একটি হিসাব করতেই চাই। হিসাবটা অবশ্যই প্রাকৃতিক। দুটি কান এবং দুটি চোখের কাজ গ্রহণ করা, একটি মুখের কাজ প্রকাশ করা। গ্রহণ করার কাজটি মানুষের, ব্যক্ত করার কাজটি ব্যক্তির। কিন্তু চোখের এবং কানের কাজটি মানুষ কিংবা ব্যক্তি মুখ দিয়েই করে থাকে। মুখের কাজ তখন থাকে কথার সাথে ফেনা অথবা থুথু বের করা। ফলে প্রচুর আজাইরা কথার মুখোমুখি হতে হয় প্রতিদিন। কথা প্রসঙ্গে একদিন এক হুজুরকে জিজ্ঞেস করলাম আপনার পীরের [গুরু] নাম কী? হুজুর উত্তর দিলেন— পীরে কামেল, পীরে তাহাজ্জুদ হযরত মাওলানা শাহ সূফী… (নাম) … নামের আগে ও পরে বিশেষণের অভাব নেই। আমি তখন তাকে বললাম ভাই সব বিশেষণের মানে বুঝলাম কিন্তু পীরের তাহাজ্জুদ মানে কী? হুজুর তখন আমাকে বললেন,
ময়লা ও খাবার
একদিন। গ্লাসের জলে একটি মাছি পড়ে। তার পাখা ভিজে যাচ্ছে এবং সে প্রায় জলে ডুবে যাচ্ছে। তার বেঁচে থাকার তীব্র ইচ্ছা তার ছটফটানিতে দেখতে পেলাম। তার প্রান রক্ষা করলাম। মাছিটি নড়তে পারছে না। তার শরীরে এমন একটি রং দিয়ে দিলাম যাতে হাজার মাছির ভীড়েও আমি তাকে সনাক্ত করতে পারি। সেদিনের মতো মাছিটি উড়ে গেলো। তাকে আমি পোষ মানাতে চাইনি। কারন মাছিকে কেউ পোষ মানাতে চায়না। এখন প্রতিদিন খাবার টেবিলে পৃথিবীর ময়লা নিয়ে সেই মাছিটি হাজির হয়। খাবার নষ্ট করে। আমি তার প্রতি রেগে যেতে পারি কিন্তু রেগে যায় না। কারন আমার কাছে যা ময়লা মাছির কাছে তা খাবার।
অর্থগত শব্দের ভেতর
কোন মায়ায় ধরবে তুমি জীবন? আলো রেখার মতো অলাতচক্র বারবার জাল ফেলে থাকে উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম উপর নিচ আমাদের ঘর হওয়ার কথা আমাদের একটা ব্যক্তিগত নদী থাকার কথা আজ আমরা দূরাগত তারা পরিণীতা কাল আসবে তো? ভোরের আলোয় গ্রামের পথ ধরে হাঁটবে তো? কোকিলডাকা ভোর সকাল হয়ে আসা অপেক্ষা নির্জনতা ডাকে তোমায় দূরাপনা, তোমাকে অর্থগত শব্দের ভেতর খুঁজে পাই না, সরিষা ফুলের মতো হারিয়ে যাও মিশে যাও মিলিয়ে যাও শাড়ির ভাঁজে ভাঁজে। এগিয়ে যাচ্ছে পৃথিবী পৃথিবী ক্রমাগত এগিয়ে যাচ্ছে সাগরের দিকে পুরাতন বাড়িটা পুরাতন রয়ে গেল শ্যাওলা পড়েছে তার উপর মানুষ অসহায় হলে মেঘও আকাশহীনা দলছুট আদি মানবের ভুল এখনও মানুষ বয়ে বেড়ায় মেঘ আর বৃষ্টির দূরত্বে আমরা বৃষ্টি হলে চোখ চেয়ে থাকে কড়তাঘরে ঘুরপাক নিয়তি কোয়ারেন্টাইন সময় বজ্রপাত শিলাবৃষ্টি মানুষের মৃত্যু আমরা এখনো দূরের তারাদের দেশে গন্ধরাজ বেলীফুল কাঁঠালপাতা ডালিয়া আকাশ পরিষ্কার হলে বর্ণহীন গন্ধহীন ভালোলাগা মেঘের আশায় বসে থাকে মুর্শিদমন পৃথিবীর উপরে ছায়াবাজ পুতুল মানুষের উপরে