You are here

নরসুন্দার স্মৃতি

নরসুন্দা। নদীর নাম। জন্মস্থান হুসেন পুরের পুরাতন ব্রক্ষপুত্র। নদীটির শরীর ক্যাটরিনা কাইফ টাইপের। কিশোরগঞ্জ গ্রাম্য শহরের একমাত্র নদীপ্রাণ হলেন তিনি। করিমগঞ্জের ধনু নদীর সাথে তাঁর রক্তের সম্পর্ক। কিন্তু কবেকার সুদর্শনার মতো তিনি আজ মৃত। স্থানীয় ভাষায় মরা নদী।

এখনো মানুষদের মধ্যে সচেতন গোষ্ঠী লেখক, মরার নদীর বেদনায় মর্মাহত। তাইতো চুপিচুপি গোপন অভিযান চলে। নরসুন্দার যৌবন ফিরিয়ে আনার অভিযান। আশার কথা নরসুন্দার খনন কার্য শুরু হয়ে গেছে। আবারও নরসুন্দার পূর্ণলাবণ্যের ছল ছড়াবে সৌন্দর্যের অন্তর আত্মায়। কবি মেরাজ রাহীম তিনার নিত্যচলনে মুগ্ধ হয়ে প্রেম নিবেদন করবেন, শোনাবেন প্রেমের উৎসর্গে ভাষাবাণী,

‘তোমার বাড়িতে মালতি ফুটেছে
আমার বাড়িতে ঘ্রাণ
আমার বাড়িতে এ মরণদেহ
তোমার বাড়িতে প্রাণ’

মেরাজ রাহীমের সাথে আট বছরের পরিচয়। ইথারীয় পরিচয়। তাঁর হাসিটা জন্মমাত্র শিশুর মতো তুলতুলে। মানুষটার প্রতিটি আবেদন সারল্যের জোয়ারে টুইটুই।

সরলপ্লাবনে আবেদন করলেন যেন ছড়া উৎসবে আসি। আসলাম। তখন রাত এগারোটা ত্রিশ মিনিট। কিশোরগঞ্জ শহর ঘুমিয়ে আছে। আমাদের জন্য হোটেল রিভার ভিউতে সিট বরাদ্দ রাখা। যানবাহন নেই। হেটেই হোটেলে পৌছি। তারপর ঘুমন্ত শহরের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করি।

সকালে জাগানো হয়। নাস্তা করানো হয়। ছড়া মেলায় যেতে হয়। ছড়া উৎসবে কিছু মুখের মুখোমুখি হতে হয় যা আমাকে নতুন এক চিন্তাঘরে নিয়ে যায়। যে মেয়েটি শুধু গৃহিণী হওয়ার কথা সেইসঙ্গে উন্নত দাস সেও মুক্তির ছড়া পড়ে। আশির উর্ধ্বে আবদুছ ছাত্তার চাচাও ছড়া পড়ে জীবনের শেষ লকমা তুলতে চান মুখে। মানুষগুলো এই যান্ত্রিক যুগেও কবিতা, ছড়ার ঘোরে মাতাল। খুব বেশি প্রকৃতির কাছাকাছি। অতি অল্পসময়ে আপন করে নেয়ার অসীম ক্ষমতা তারা ধারন করে। মুগ্ধ হওয়া ব্যতীত উপায় থাকেনি।

এখন চলে যাচ্ছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া হল আমাকে ডাকছে। কিন্তু কী যেন রেখে আসলাম আমার বন্ধু তুষার, আবির, শ্রদ্ধেয় আসাদ ভাইয়ের কাছে। কী যেন!

Leave a Reply

Top