
অসুস্থ। আমি অসুস্থ। অসুস্থ বলতে লোজ মোশন। অসুস্থ অবস্থায় জানতে পারি (০৪/০৩/২০২০) বাংলাদেশ ম্যারাথন আয়োজন করতে যাচ্ছে ‘Uttara 10k’ নামে একটি দৌড় ইভেন্ট।
রেজিস্ট্রেশনের সময় শেষ। এখন কী হবে!? ছয় তলার এন্টম আমার নিরাশার বালুচরে আশা জাগায়। তার মাধ্যমে জানতে পারি স্পট রেজিস্ট্রেশনের সুযোগ রয়েছে। বাহ! খুবই ভালো সংবাদ। কিন্তু কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার কোনো মাধ্যম খুজে পাচ্ছি না।
০৫/০৩/২০২০ সন্ধ্যা চারটার দিকে গাজীপুরের আরিফ ভাইকে ম্যাসেজ করি। ভাই দিয়ে দিলেন কর্তৃপক্ষের নাম্বার। পার্থ দাকে ফোন দিলাম। দাদা গ্রিন সিগন্যাল দিলেন। শ্যামলি থেকে স্পটে আসতে আসতে পাচটা বিশ। পেটের গুরুর গুরুর ডাক বর্তমান রয়েছে। রাতে ঘুম হয়েছে এক থেকে দেড় ঘন্টার মতো। মনে সাহস ছিল বর্তমান।
জাস্ট ছয়টায় ম্যারাথন শুরু হলো। দৌড় দেয়ার সাথে সাথে মনে হচ্ছে পা চলবে না। মনে সাহস আনলাম। যা হবার তা হবে। ধীরে ধীরে স্বাভাবিক হতে লাগলো। কোথা থেকে যেন পাওয়ার আসতে লাগলো। যখনই পাওয়ার চলে আসলো ঠিক তখনই আমার দৌড় পার্টনার হয় মারিয়া। মারিয়া সুইডেন থেকে আগত। চমৎকার দৌড়ায়। দুজন সমানতালে দৌড়াতে থাকি। দৌড় আর গল্প। দৌড় আর গল্প আমার পুরাতন স্টাইল। শরীরের ক্লান্তি আকাশে চলে গেলো। আটচল্লিশ মিনিটে কমপ্লিট করি 10k ম্যারাথন। মারিয়ার সময় লেগেছে ৫১ মিনিটের মতো। তারপরও মারিয়া জিতে নেয় দ্বিতীয় প্রাইজ। মেয়েদের মধ্যে দ্বিতীয়। শেষের দিকে মারিয়াকে রেখেই দিয়েছিলাম দৌড়। ইভেন্ট শেষ করার পর দেখি পেটের গুরুর গুরুর আওয়াজ আর নাই।
মনে একধরনের শান্তি শান্তি ফিল আসতেছে। এমন সময় একজন বললেন আমার দৌড়োনোরর পদ্ধতি নাকি সুন্দর। আমাকে অনুসরন করে নাকি তিনি দৌড়াচ্ছিলেন। আনন্দ আরও বেড়ে গেলো। পরে জানতে পারি তিনি সেনাবাহিনীর কমান্ডো। মুক্তিযোদ্ধা জিয়াউর রহমান হলের ছাত্র ছিলেন পারভেজ। পরে সেকেন্ড লেফটেনেন্ট পদবি নিয়ে চলে যান সেনাবাহিনীতে।
গতকাল দুপুরেও আমি বলতে পারি না আমি যে এই ম্যারাথনে অংশগ্রহন করবো। অংশগ্রহন করেছি। অসুস্থতা নিয়েও অংশগ্রহন করেছি। ৪৫০ জনের মধ্যে নিজের অবস্থান ত্রিশের ভেতর রাখতে পেরেছি। এটিই আমার আনন্দ।