লিলিথ। যায় আভিধানিক অর্থ ডাইনি। হ্যাঁ। ডাইনিটি এ্যাডামের মনকে ছন্নছাড়া করেছে। আজও এ্যাডাম লিলিথটানে উদাসীন। আমৃত্যু এ্যাডামের জীবনে লিলিথ অধরা। তাইতো এ্যাডামের প্রতিনিধি প্রত্যেক মানুষের জীবনে একজন লিলিথ থাকে যাকে সে পায় না। একজন ইভ থাকে যাকে নিয়ে সে সংসার করে। এ্যাডামের একা একা ভালো লাগে না। দেহসাথী প্রার্থনা করা হলো। আবেদন মঞ্জুর। সমস্ত সৌন্দর্যের সার বস্তু থেকে তৈরি করা হলো লিলিথকে। সুন্দরী লিলিথ বড় বেশি অহংকারী। মিলনক্ষণে এ্যাডামের নিচে শোতে তার আপত্তি। এ্যাডাম লিলিথকে বাধ্য করতে চায়। কিন্তু লিলিথ বাধ্যগত হওয়ার না। ফলস্বরূপ দুজন দুপথে দুভাবে! শেষ হয় তাদের মিলনস্পর্শ। শুরু হয় বিরহ স্পর্শকাতরতা। লিলিথ-এ্যাডাম এই কাহিনিপ্রবাহটি মেসোপটেমিয়া হিব্রু মিথলজির অংশবিশেষ। ভারতীয় কিচ্ছা-কাহিনিতেও একজন লিলিথ সজ্জিত সজীব। এখানকার লিলিথের নাম তিলোত্তমা। বিশ্বকর্মা সৌন্দর্যের মাখনে তিলে তিলে তাকে গড়েছেন। পুরুষের অর্ধঅংশ হতে নয়।
Month: January 2021
স্বরসতী
আকাশ। আজ কত দূরে। অথচ একদিন এই আকাশ হাতের কাছে ছিল। তখন আজকের মতো এতো মানুষ ছিলনা। মানুষ বলতে কেবল আমাদের পরিবার। ঠাকুরমা ছিলেন আমাদের পরিবারের সবচেয়ে লম্বা মানুষ। ঠাকুরমার রাগও ছিল খুবই বেশি। তাঁর একটি সুন্দর বদভ্যাস ছিল। আর তা হল খুব সকালে ঘুম থেকে উঠা, আমাদেরকে উঠানো। একদিন সকালে তিনি উঠোন ঝাড়ু দেয়ার কাজে ব্যস্ত। ঐ দিন আকাশটা কেন যেন আরো একটু নিচে নেমে আসে। ঠাকুরমা যখন সোজা হয়ে দাঁড়ায় তখনই আকাশের সাথে ধাক্কা খায়। ঠাকুরমা খুব বিরক্ত হচ্ছিলেন। ইয়া আলী বলে আকাশকে দিলেন এক ঝাড়ুমধ্যম। আকাশ আবার যথেষ্ট ব্যক্তিত্ববান। খুব লজ্জা পেল। আকাশ সিদ্ধান্ত নিল আর না, আর পৃথিবীর মানুষের কাছাকাছি থাকা যাবেনা। পৃথিবীর মানুষ হাতের কাছের মূল্যবান কিছু মূল্যায়ন করতে জানেনা। দূরের তুচ্ছ কিছু নিয়ে রাতকে দিন বানাতে পারে। যেই
কেন তুমি হাসতে জানো না?
চরমে যাবার ভয় বারবার জড়ায়ে ধরে পরমকে পাওয়ার আকুতি বারবার হৃদয়ে আসে গুনাগারের মতো ভগবান আমার বারবার ডাকে আমি যেতে চাই আমি ধরতে চাই ঘুমাতে চাই যোনির ভেতর গতিশীল নদী হয়ে ঘাসফুল অজ্ঞান না হয়ে মরে যায়, আকাশ থেকে নেমে আসে নৌকাবাইচ— লাল পতাকা— নাগরিক শব্দ থেকে নিস্তার নেই— বাড়িদের কোনো ঘর নেই— এতো নাইএর মাঝে ক্যামনে মাঝি নৌকা চালায় ইচ্ছে জাগে জানিবার— বৃষ্টির মতো মোনালিসা মেঘ আসে— সৃষ্টির জল চলে যায় পাহাড়ে— চলে যায় পর্বতের পরপারে। কেন তুমি হাসতে জানো না? কেন তুমি প্রার্থনার মতো চুপ থাকো ইথারে ইথারে? কেন তুমি পুষে রাখো কাফের অভিমান? আমি তো রোজ মানুষ, মিনিটে মিনিটে মানুষ, কিয়ামতের পরেও মানুষ— আমার জন্য একপাশে দোযখ অন্যপাশে স্বর্গ— অনিয়মিত হাসি আমাকেও দিতে হয়— স্বর্গের লোভে আমিও কায়েম করি সালাত— আমার হৃদয়েও আসে কামাতুর এলহাম। কেন তুমি মেলে ধরনা
এই নদীর নাম উন্নয়ন
সব নদীই কেমন যেন পুরাতন হয়ে যায় সব ঘাসেই কেমন যেন ময়লা জমে আমাদের বাড়ির সামনে অনেক সুন্দর একটি বাড়ি গড়ে ওঠেছিল— নির্জন মাঠ, সবুজ পোশাক, দক্ষিনা বাতাস— প্রকৃতির সুন্দর আয়োজনে ছিল বাড়িটি। আজ বাড়িটি শুধুই বাড়ি। তামাটে বর্নের নদীকন্যা ছিল চোখের সামনে, তার দেহে ছিল বাঁক, বাঁকে ছিল অজস্র জোয়ার, তাও আজ খরচ হয়ে গ্যাছে সময়ের নিহাদ ফ্যাশনে ওয়াল্ডে। যারা কালো চশমা পরে আমার চোখের সামনে দিয়ে হিরোবেশে পত পত করে হেঁটে যেতো তারা এখনো তেমনই আছে, তেমন নেই আর তাদের সম্পর্কে আমার ভাবনা, আমি এখন জেনে গেছি মাকাল ফল কেন এতো রূপ নিয়ে চেয়ে থাকে অহর্নিশ। মাকালের ঘর নেই, মাকালের নিজস্ব কোনো আকাশ নেই। সৎ হলে বলা যায় পাখি আকাশে উড়ে সৎ হলে বলা চলে মানুষের ঘর আছে আমাদের ঘর আছে সাগরে রয়েছে পৃথিবী, পৃথিবীর রয়েছে মাসিকস্রাব— জোয়ার। জোয়ারের
লিলিথকাব্য
রাধাস্নাত প্রকৃতি আমার ঝরা একখান মায়া আধখান প্যাঁচানো মারীচকায়া, আধখান ফানুসপায়া প্রকৃতিমানব শূন্য হয়েছে কৃষ্ণশূন্যতায় হংসমৈথুন আস্তানা গড়েনা দাহ্যমথুরায় লীলাপদ্ম কেন পেতেছে আসন আয়ুনঘোষ কাতরায় লিলিথকাব্য আকাশ হয়েছে ভাঙামেঘ উড়ে যায় বড়ায়ি তোমার ইচ্ছাপাখা মেলে ধর রাধাপৃথিবী বাতাস হয়েছে অনলে আনলে কৃষ্ণপাতা হেলিয়ে পড়ে লিলিথকমলে
বেহুলা ভাসান আমাদের নদী
ভুলে যেও আমাকে ভুলে যেও জলে স্থলে আকাশে বাতাসে ভুলে যেও ভুলে যেও আমাকে শব্দ হয়ে জীবিত থাকো মুখ থেকে মুখে বৈশাখ থেকে চৈত্রে জীবিত থাকো মাসের পর মাস জীবিত থাকো ব্রা প্যান্টি আন্ডারওয়্যারের মতো শতভাগ প্রায়োগিক দূরে ভাসতে ভাসতে অচেনা দ্বীপ আমি অচেনা গ্রহ কোনো পৃথিবীর দামি বিজ্ঞানীর কালকেতু ফুল্লরা তোমাদের ইতিহাস চকেট সংকট আমাদের কালের রাজহাস চকলেটলোভা গরীব অসহায় শিশুর মতো আমাকে ডাকবে না আর ভুলে যেও বারান্দায় ঝুলে থাকা শুকনো কাপড়ের মতো বাতাস আর সূর্যকে ভুলে যেও ঘুম আমার চোখেও নামে রাত আমার দেহেও বহে বসন্তগান আমিও গাইতে চাই আমিও চিনি উত্তর চিনি দক্ষিনের হাওয়া বর্ষার নবোপলীয় জল আমিও রক্ত মাংসের মানুষ একা ভুলে যেও সমস্ত কিছু নিয়ে একটা আকাশ একটা দুঃখ একটা সাইকেল রিংকেল একটা সকাল বেলার রজনীগন্ধা একটা সৃজনী শিল্পগ্রাম একটা প্রান্তিক রেলওয়ে স্টেশন একটা হুগলী নদী নীরব সুনসান ভুলে যেও ঝগড়াসমগ্র ভুলে গেলেই বেচে যাবে তুমি বেহুলা ভাসান আমাদের নদী
সময়ের ঢেউয়ের তালে
আমি মানে নিরাকার। যত গভীরে যাই ততই ছোট হয়ে আসে আমার চোখ কান নাক গলা মুখ। মুখের গল্প যেন সময়ের ফেনা— সময়ের ঢেউয়ের তালে ফেনাদের জীবন। একদিন একদিন করে মানুষ মরে যায় মানুষ মরে যেতে যেতে আশার বীজ রেখে যায় । আশার বীজ থেমে গেলে হৃদয়ের ঘাটে পানাফুল ফুটে— থেমে যাওয়ার নাম গতি, পরাজিত জীবন জয়ের বাতাস। নিরাকার আমির নাম নেই কোনো, কত নামে ডাকে লোকে আমাকে তোমাকে, আমাকে দেখা যায় না তবুও দীর্ঘজীবী কার্বন কপি আসে সময়ের ফ্লেপে। বাস্তব এমনই যা দেখে না তাকে দৃশ্য বলে যা শুনে না তাকে কথা বলে যা বুঝে না তাকে বোধ বলে এক চমৎকার অদৃশ্যের ভেতর কেটে যায় রাধাফুল জীবন, হরতাল, হাতিয়ার— আমার ঘরে আমিই নিরাকার।
ঝাউখোলাচোখ
গোলাপের যৌবন গন্ধে বাড়ে চাদের বয়স কমে জোছনায় জলের ছন্দে বাড়ে শাপলার বুক লোভে বাড়ে আকাঙ্খা বেদনা শোক রাত না দিন বুঝে উঠা কঠিন ঝাউখোলাচোখ মাছধরাঘুম স্বাধীন স্বাধীন কাপে বাড়ে চায়ের বয়স— জন্ম-মৃত্যু তার কাপের পৃথিবী চোখে বাড়ে চিরচেনা আকাশ— সাদা নীলের চলক ধ্রুবক অপেক্ষায় বাড়ে প্রেমিকের সাজ— চোখের নয় মনোমাদক কান্নায় কমে রোগের বয়স— বিনা নোটিশে অতি উত্তম নগদ কথায় কমে কাজের বহর— উদাস উচাটন গম্ভীর সর্বগত
গড় হিসাব আর বোরখার গল্প
বোরখা বিক্রি বাজারে বেড়েছে। মুসলিম মুমিনার সংখ্যা বাজারে বেড়েছে। এখন প্রত্যেক ঘরে ঘরে জন্ম নিবে আল্লার অলী। কারন মা যদি হয় মরিয়ম সন্তান হবে ইশা রুহুল্লাহ, মা যদি হন আমেনা ছেলে হবেন হযরত মোহাম্মদ ()। যেহেতু পর্দা নারীর হাতপায়ের মতো আরেকটি গুরুত্বপূর্ন অঙ্গ সেহেতু পর্দানশীল নারী ব্যতীত ফরহেজগার সন্তান আশা করা যায় না। জান্নাতের প্রত্যেক বিভাগে পর্দানশীল আমার বান্ধবীরা থাকবেই থাকবে ইনশাল্লাহ। এতক্ষন একটি গড় হিসাব হাজির করলাম। গড় হিসাব, মাথাপিছু আয়, জাতীয় আয় প্রভৃতি হিসাব অনেক সময় হাস্যকর। ধরেন একটি দেশে দশজন মানুষ। দুইজন মানুষের কাছে আছে দশ হাজার টাকা, ছয়জনের কাছে দুই হাজার, একজনের কাছে একশ টাকা, এক জনের কাছে কোনো টাকাই নাই। গড় হিসাব করলে যার কাছে টাকা নেই তার মাথায়ও একটি বিশাল অর্থপরিমান চলে আসবে, অথচ লোকটির
অচিন গন্ধ চেনা সুরে গান ধরে
সকাল বেলা দেখা হয়েছে কোন এক শুক্রবারের লগে। লাল শুক্রবার বলতে একখান কথা আছে। মা হিসাব করতেন শুক্করে শুক্করে আসট। কত লাল কিংবা আসট শুক্রবার জীবন থেকে চলে গেল দূরের কোনো এক অচেনা গ্রামে যেখানে সূর্য আসে না— থাকে শুধু অন্ধকার থাকে না বনলতা সেন থাকে না হাঁটাবাবা থাকে শুধু বন্ধ্যাকাল সময় এক নিষ্ঠুর ধারনা যা মানুষ বানিয়েছে বারবার। কাগজে ফুল গন্ধে মাতাল হাওয়া ভুলানো চোখের ভেতর। ভেতর ভেতর ভাই ভাই হলেও দ্বীপ একটা আছেই জলের চারিধারে। ভেতরে ভেতরে গন্ধ রোপন করলে আলো এসে কিলবিল করে জলপাই বনের গহীন প্রানে— তীব্র প্রান চাই আরও আরও তীব্র বিরাট এক ব্যথা প্রানে এসে থেমে যাবে কম্পনে কম্পনে। সরিষা ফুলের গাছে পাখির মতো পোকা বসে দিনরাত। কোথাও কোন আলো নেই— অন্ধকার। বিরাট এক অন্ধকারে মানুষ আরও মানুষ হয়ে পথ চলে সমবায়