রেজা বন্ধু কই গেলা তুমি? তোমারে আমি হারিকেন লাগাইয়া হুজি-- দোহানে হুজি, বাজারে হুজি, বোলপুর ইস্টিশনের প্লাটফর্মে হুজি, ব্রক্ষ্মপুত্র নদের পুব পারে হুজি-- তোমার দেখা নাই তো নাই-- আমারে তুমি এমন কইরা বুইল্যা যাইতে পারলা, পারলা রেজা বন্ধু! মানু কেমনে পারে মানুরে টুসটাস বুইল্যা যাইতে! আমি তো তোমারে বুলি নাই-- আবার রবীন্দ্রনাথের মতো কইও না নয়নের সামনে তুমি নাই বিধায় নয়নের মাইদদে নিছ ঠাই-- হুদা জানি তর লাইগগা হৃদয় আমার ফালদা ফালদা ওডে-- আয়নায় চাইলে হালি গুলা গুলা লাগে -- চোখের বিততে একটা আস্তা ডাহাইত দেখি-- এই ডাহাইত কী জানে বন্ধু আমার কই আছে? বন্ধুরে দেহার মনে লই, আদুর কইরা হের লগে যদি কতা কইতে পারতাম-- বন্ধু তোমারে যেদিন হারাইছি হেদিন থেইক্কা আমি বুলি গেছি মান আরাফা নাফসাহু ফাগাদ আরাফা রাব্বাহুর কথা,
Year: 2020
জানালায় বন্দী থাকে রাত আর দিন
কাক কাকের মতে উড়ে তাল তালের মতো পড়ে নদী নদীর মতো বহে শিশু আপন মনে কাঁদে গতির উপরেও গতি বলে কিছু একটা থাকে থেমে থেমে আসে বোধ-- বোধের সাজানো বাসর তরমুজের ব্যবসা করে যে লোকটা সেও জানে তরমুজ মানে লাল আর সবুজ জলকেলি মাংসের ভেলকি-- তরমুজ জানে অন্যকিছু-- অন্যরকম আলোর মতো কালো হয়ে আসে চিন্তার ঋতু। ব্যবসার ভাষায় কথা বলতে পারে না যে লোকটি সে বড় বোকা সমাজের কাছে-- কিছু হয়ে ওঠে না কিছুই হয়ে ওঠে না ঘোড়ার ডিম টাইপের কিন্তু সময়ের কাছে সে যেন স্মার্ট এনাফ। কার কাছে কি কতা কমু চোখের কাছে চোখ বড় একা দরজা খোলা থাকে জানালায় বন্দী থাকে কিছু অপেক্ষা
পাথর তারপর জল থেকে দূরে
দুঃখ পেলে আকাশে চোখ রেখো একটা তারা জ্বলছে রোজ নামছে নিচে দেখো দুঃখ পেলে জানালা খুলে দিও আসবে বাতাস আমারই মতো প্রানে টেনে নিও দুঃখ পেলে কবিতা পড়তে বসো কাব্য সুখের আলো আসবে উদার মনে হেসো দুঃখ পেলে জলের পাশে হেঁটো ঢেউয়েরা সব গায়বে গান দুঃখসুতা কেটো দুঃখ পেলে দুঃখ করো বসে চোখের জলে কথা বলো নিজের সাথে হেসে
চাষে জীবন
বড় কিছু হলে হলাম না হয় হলাম আকাশ থেকে একটি চাঁদ পেলে পেলাম না হয় পেলাম পৃথিবীকে দেশের মত দেখতে গেলাম না হয় গেলাম তোমার ভেতর লুকিয়ে থেকে সুখটি নিলাম না হয় নিলাম নিষাদ রাতের সাগর থেকে শান্তি এনে তোমায় দিলাম না হয় দিলাম আকাশ ভরা তারার দেশে ঘুরতে গেলাম না হয় গেলাম ভালোবাসি বলতে গিয়ে বলে ফেললাম না হয় ফেললাম যুদ্ধ তবে বেঁধে গেল না হয় গেল বৃষ্টি তবে হয়ে গেল না হয় গেল জোয়ার তবে এসে গেল না হয় গেল জেলে তবে জাল ফেলল না হয় ফেলল আমিও আকাশ আশা রাখি হবো চাষা চাষে জীবন চাষে জীবন জীবন খাসা
রিপুমাছের গতিপ্রকৃতি
ছায়া থেকে দূরে কোনো এক মানুষ
কোনো এক বর্ষার রাতে নদীর দারে কোনো এক ঘরে মাথার উপরে বৃষ্টির চাল-- তোমাকে ডাকি যদি আসবে? জানালা চোখে ঢেউ দেখা যায় এক ঢেউয়ের উপর আরেক ঢেউ, আরেক ঢেউয়ের উপর অন্য কোনো ঢেউ ভাসবে? দুটি হাঁস ভাসতে ভাসতে ভুলে গ্যাছে বাড়ির ঠিকানা আমাদের ঘরে তখন একটানা বৃষ্টি, হিমশীতল বাতাস তুমি আসলে, ভাসলে, ভাসালে অনেকদিন পর তুমি অনেকের কথা ভুলে গেলে অনেকের কথা মাথায় নিয়ে তুমি হয়েছিলে মুদির দোকান আজকে তুমি শব্দটি আমার, কেবলই আমার, আজকে আনন্দ আমার বেদনার সমান
মাটিতে গাছ কেটে তাকাবেন আসমানের দিকে
দুধের মধ্যে পাউডার মেশাবেন আপনি, প্রিয় রসালো ফল আমের মধ্যে ফরমালিন মেশাবেন আপনি, গরিবের কৃমিনাশক ঔষধ আনারসের মধ্যে হরমোন দিবেন আপনি, ইনস্ট্যান্ট এনার্জি কলার মধ্যে কার্বোহাইড্রেট দিবেন আপনি, শিক্ষাকে বাণিজ্যিক করবেন আপনি, বাঙালির হাজার বছরের প্রিয় জায়গা রসালো মিষ্টির মধ্যে হাইড্রোজ দিয়ে ধবধবে সাদা ইংরেজ করে ফেলবেন আপনি, খেজুরের গুড়ের মধ্যে চিনি দিয়ে লাভে লাভ করে ফেলবেন আপনি, আমাদের হাজার বছরের প্রোটিন ভিটামিনের আকর ঘিয়ের মধ্যে সোয়াবিন দিয়ে ব্যবসা করবেন আপনি, ফল গাছের পরিবর্তে কাঠ গাছ দিয়ে আকাশ বাতাস ভারী করে ফেলবেন আপনি, অধিক দুধের আশায় আপনার গোমাতাকে দিনের পর দিন ধর্ষণ করে যাবেন আপনি, উচ্চ ফলের আশায় আপনার মাটিকে নষ্ট করবেন আপনি, আপনার সন্তানকে দিনের পর দিন প্রতিযোগী পণ্য করে তুলবেন আপনি.... তারপরেও বলবেন ইমিউনিটি সিস্টেম স্ট্রং থাকবে,তাই না !? বলবেন
প্রচন্ড প্রকাণ্ড মাতন্ড রাগ হয় আমার আমাদের
রাস্তাঘাটে লাশের পর লাশ পড়ে থাকবে, বর্ষার জলে ভেসে যাবে লাশ, অতীতে দুর্ভিক্ষের কথা আমরা ভুলে গেছি, আবার দুর্ভিক্ষ নেমে আসবে, প্রিয়জন ভুলে যাবে প্রিয়জনের কথা, ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালাবে, মা খুঁজে পাবেনা সন্তানের লাশ, সন্তান খুঁজে পাবে না বাবা-মার লাশ, হুজুর ওয়াজ করা ভুলে যাবে-- তখন তার মনে পড়বে কতই না মিথ্যা ব্যাখ্যা দিয়েছিল কোরআনের আয়াতের। আজ যারা অনেক সচেতন তারা মারা পড়বে অসচেতনদের জন্য, যারা অসচেতন তাদের? তাদের তো চোখ কান বলে কিছু নেই, তারা বিড়ালের মতো ইতর, তাদের মাথায় পাথর পড়লে বুঝতে পারে পাথর বলে কিছু একটা আছে, তাদের পা কাটা পড়লে বুঝতে পারে পাও কাটতে পারে, তারা সমস্যার আগে কখনো সমস্যা নিয়ে কিছু ভাবতে পারে না, ক্ষুধা লাগলে ঠিকই খাবার খেতে বসে আরামসে, সন্তান কখন আনতে
রাত আর দিন কোনোদিন এক হয় না
বাঁশপাতার চোখ বলতে আপনারা কী বুঝবেন আমি জানি না। আমি জানি কাল ভোর ফুটবে। ঠিক কাল নয়। আজই। একটু পরেই অন্ধকার চলে যাবে গ্রামের বাড়ি। মসজিদে মসজিদে আযান হবে একটু পরেই।লাল আর অসম বিরোধ জলের সাথে যাচ্ছে জীবন যাচ্ছে সময়। বাঘচোখ বলতে আমরা নদীর গর্জন বুঝি। আমরা বলতে যারা বাঘের মাংস খেতে অভ্যস্ত হয়নি তারা।আমরা বলতে যারা এখনো বাঘের খাবার হয়নি তারা। তারপর হাওয়া আর পলাশের প্রান্তর। একটা লাল রং গিলে খায় সবুজ প্রান্তিক জোন। গলার শীত কমে গেলে ডিসটোপিয়া বন্যা আমাদের গ্রামে বেড়াতে আসে। বেড়ানো তার অভ্যাস। পুরাতন সাইকেল আর টিউবওয়েল পড়ে থাকে ইটের চমকচিত্রে। ইউটোপিয়ান আগামী কল্যানী কর্মকারকে পূজা দিতে আসে রোজ। আমাদের বর্ষাকাল। ‘আমরা কিংবা আমাদের’ বলতে যা বুঝি সেখানেও থাকে বিন্দু বিন্দু বিভেদের দেয়াল। মানুষ তার দেয়াল ভাঙে
বাবা ও তার বাবার জীবন
সময় বদলে গেছে। বদলে যাচ্ছে মানসিকতা। তৈরি হচ্ছে বিলাসিতার আপডেট ভার্সন। আব্বা ফজরের আযানের আগে ঘুম থেকে উঠতেন। মাঠে যেতে হবে, জমিকে লাঙল চালিয়ে করতে হবে আবাদি, ফসলি। খুব তাড়া। এতো ভোরে রান্না করার সুযোগ নেই। আব্বা পানিতে জমানো ভাত থালায় তুলতেন, আম্মা তাড়াতাড়ি শুটকিভর্তা করে আব্বার পাতে দিতেন। পান্তা ভাত আর শুটকিভর্তার আদলে আব্বা তাঁর পেট মহাশয়কে সন্তুষ্ট করতেন। আমার ঠাকুরদাও তাই করতেন। এই হলো কৃষকশ্রেণীর নাস্তা করার স্টাইল। নাস্তা করার নাগরিক অর্থ তাঁরা জানেন না। তাঁরা কেবল উদরপূর্তি করার জন্য খায়। শর্করা, আমিষ, স্নেহ পর্দাথের খবর তাঁদের কান পর্যন্ত পৌঁছে না। অথচ কৃষক শ্রেণী সত্যিকারের মানুষ, সব সাধকের বড় সাধক। সেই সাধকদের সঠিক মূল্যায়ন না করে, অবমূল্যায়নের সিনেমা তৈরি করে নাগরিক জীবন। সেই সিনেমার নাম `পান্তা- ইলিশ ভক্ষণ'। সিনেমা হলটির