ভুলে যেও আমাকে ভুলে যেও জলে স্থলে আকাশে বাতাসে ভুলে যেও ভুলে যেও আমাকে শব্দ হয়ে জীবিত থাকো মুখ থেকে মুখে বৈশাখ থেকে চৈত্রে জীবিত থাকো মাসের পর মাস জীবিত থাকো ব্রা প্যান্টি আন্ডারওয়্যারের মতো শতভাগ প্রায়োগিক দূরে ভাসতে ভাসতে অচেনা দ্বীপ আমি অচেনা গ্রহ কোনো পৃথিবীর দামি বিজ্ঞানীর কালকেতু ফুল্লরা তোমাদের ইতিহাস চকেট সংকট আমাদের কালের রাজহাস চকলেটলোভা গরীব অসহায় শিশুর মতো আমাকে ডাকবে না আর ভুলে যেও বারান্দায় ঝুলে থাকা শুকনো কাপড়ের মতো বাতাস আর সূর্যকে ভুলে যেও ঘুম আমার চোখেও নামে রাত আমার দেহেও বহে বসন্তগান আমিও গাইতে চাই আমিও চিনি উত্তর চিনি দক্ষিনের হাওয়া বর্ষার নবোপলীয় জল আমিও রক্ত মাংসের মানুষ একা ভুলে যেও সমস্ত কিছু নিয়ে একটা আকাশ একটা দুঃখ একটা সাইকেল রিংকেল একটা সকাল বেলার রজনীগন্ধা একটা সৃজনী শিল্পগ্রাম একটা প্রান্তিক রেলওয়ে স্টেশন একটা হুগলী নদী নীরব সুনসান ভুলে যেও ঝগড়াসমগ্র ভুলে গেলেই বেচে যাবে তুমি বেহুলা ভাসান আমাদের নদী
Month: May 2020
আকাশ দিলে চলবে মেঘ আমি চাষ করে নিবো
চরমে যাবার ভয় বারবার জড়ায়ে ধরে পরমকে পাওয়ার আকুতি বারবার হৃদয়ে আসে গুনাগারের মতো ভগবান আমার বারবার ডাকে আমি যেতে চাই আমি ধরতে চাই ঘুমাতে চাই যোনির ভেতর গতিশীল নদী হয়ে ঘাসফুল অজ্ঞান না হয়ে মরে যায়, আকাশ থেকে নেমে আসে নৌকাবাইচ-- লাল পতাকা-- নাগরিক শব্দ থেকে নিস্তার নেই-- বাড়িদের কোনো ঘর নেই-- এতো নাইএর মাঝে ক্যামনে মাঝি নৌকা চালায় ইচ্ছে জাগে জানিবার-- বৃষ্টির মতো মোনালিসা মেঘ আসে-- সৃষ্টির জল চলে যায় পাহাড়ে-- চলে যায় পর্বতের পরপারে। কেন তুমি হাসতে জানো না? কেন তুমি প্রার্থনার মতো চুপ থাকো ইথারে ইথারে? কেন তুমি পুষে রাখো কাফের অভিমান? আমি তো রোজ মানুষ, মিনিটে মিনিটে মানুষ, কিয়ামতের পরেও মানুষ-- আমার জন্য একপাশে দোযখ অন্যপাশে স্বর্গ-- অনিয়মিত হাসি আমাকেও দিতে হয়-- স্বর্গের লোভে আমিও কায়েম করি সালাত-- আমার হৃদয়েও আসে কামাতুর এলহাম। কেন তুমি মেলে ধরনা
গার্হস্থ্য নয়, কসমিক
মানুষের মতো দেখতে উদ্ভুত কালো রঙের আকাশটা কোথায় যেন হারিয়ে যায়, বারবার তাকে ধরার চেষ্টা করি, বারবার শেয়াল ডাকে পাশের ঝোপঝাড়ে। রেললাইন পথ তারপর রেললাইন আবার পথ আবার সেই চেনা চেনা আকাশ। আকাশের মুখ থেকে ভেসে আসে জিব্রাইলের ডানা, মৃত্যুর মতো নিয়ে যেতে চায় আমাকে,আমি ভয় পাই, ভয় পেয়ে জেগে উঠি, আমি ভয় পাই, আমি ভয় পাই না। জানালা খোলা মাঠ জানালা তারপর খোলা নির্জন মাঠ তারপর আমার চোখ আটকে যায় মেঠোপথে। আমার চোখ আটকে যায় আমাদের অনেক দিনের চেনা কোনো এক বারান্দায়। মানুষ বসে থাকে পাখি উড়ে চলে গাছপালা কেবল চুপ করে দেখে যায় অনেক মানুষের কথাগল্প গল্পদৃশ্য। পৃথিবীর চুল আরেক পৃথিবীর বাতাসে কাঁপতে থাকে,আমি তাদের কম্পন হাত দিয়ে হৃদয় দিয়ে ধরার চেষ্টা করি, তারা ধরা দেয় না, পলাতক প্রেমিকার মতো ইশারায় কথা বলে, ইশারায় বন্যা আনে, বর্ষা গৃহপালিত হয়ে যায় গরীবের ঘরে। মানুষ কেমন
জানালার পাশে দরজার বাড়ি
জানালা দরজা নয় দরজার ছোট বোন জানালাটা আমার খুব চেনা একদম মনের কাছের কোনো কথা আজকাল কথাগুলো ব্যথা হয়ে যায় ব্যথার আলিফ- লায়লায় যদি সিন্দবাদ হতে পারতাম উত্তরাধিকার সম্মানে পেতাম জাদুর তরবারি আমাকে কেটে ভাসিয়ে দিতাম নীল দরিয়ায় জল থেকে বাষ্প, বাষ্প থেকে বৃক্ষ এইভাবেই একদিন জানালা হতাম জানালা দরজা নয় দরজার মতো দেখায় কেবল
কুতুব মিনারে তাকে দেখতে যায় যারা
কুতুব মিনারে প্রতি রাতে নেমে আসে মৃত কিছু আত্মা। থেকে থেকে জিকিরে মশগুল তারা। হক মওলা ইল্লাল লা। ইল্লাল্লাহু ইল্লাল লা। রাত যখন কোনো কথা বলে মানুষ চুপ হয়ে যায় তখন। তখন কবর থেকে কান্নার রব আসে কানে। তখন গভীর এক অন্ধকার পৃথিবীর পথে। তখন আমাকে ট্রেনের গতিতে ভাসাতে প্রমায়া জাগে হৃদয়ের আয়নাতে। চুপ হয়ে যাই আমি চুপ হয়ে যায় কবর কেবল অতীত এসে অতিথি অতিথি ভাব ধরে শ্রীরাম সুরে কুতুবি পাথর হিন্দু মন্দিরের আলপথে মুসলমান হলে জানালার চোখে পর্যটক আলো দেখে, বহুকাল আগে যারা আলো চাষ করে ঘুমিয়ে গ্যাছে তাদের ধূলো মিনারে মিনারে ছায়ার মতো গতরে লাগে তাদের ডাক শুনতে পাই সবুজ ডাক ধান পাঁকা ডাক রোদচশমা ডাক কোথায় যেন আমি থেমে যাই-- মানুষ বলতে পারি না নিজেকে, চোখের ভেতর যেন কালো মাঠ-- মনের মিনার। মনের মিনারে ভ্রমন
দেখা হতে পারে বলে সাগরে জল আসে
এই যে থেমে গেলো আমার পথ এই যে আকাশে আর মেঘ হচ্ছে না এই যে আমার নদীতে বড় বেশি ভাটা এই যে কোনো জলে স্নান করি না আর এই যে আসমান থেকে জমিন, জমিন থেকে আসমান সব জায়গায় আমার বিষাদ এই যে বেড়ে যাচ্ছে আমার উলঙ্গ দহন, রূহের উত্তাপ দায়ী কে? তার জন্য দায়ী কে? তার জন্য দায়ী একমাত্র তুমি! সংবিধান, ইতিহাস, যুক্তি তর্ক নয় আমি জানি তুমিও জানো আমার হৃদয়মাছ কেন জলহীন ভূমি! আমি চাই না কাল কালো মেঘের মতো তোমার সুখপ্রদ সময়ে তুলে দিক বিষাক্ত ছোবল চাই না তোমার কান্না থেকে নদী হোক নদী থেকে সাগর সাগর থেকে অজস্র সাপের সংসার চলে আসো এখনো সময় তোমার এখনো আমার অপেক্ষা তোমার ডান হাতের গভীরে কোনো জঙ্গল নেই আমাদের মনঘর সঠিক আচার্য আশ্চর্য সহজিয়া নদী তুমি নালা হয়ে গেলে লজ্জা ত তোমার লজ্জা ত আমার কথা বলি না বলে যারা ভাবে নির্বাক চলচ্চিত্র
তরে ডাহি আমি বিন্নালার লাহান
হুন, তুমারে একটা কতা সরাসরি কইতে চাই, যে কতাডা কইতে চাই সেইডা তুমি জান বলে আমি বিসসাস করি। আসমানে যহন চান দেহি, চান থেইক্কা যহন দুদের লাহান সাদা সাদা ফুরনিমা রাইত নাইম্মা আহে তহন আমার তুমার কতা মনে ফরে। গাছের ডালে, আমার জানালায় বসন্ত আইলে আমি তুমারে টের ফাই, তুমি আইসা তহন আমার মনে ডুক্কু ডুক্কু হেলতে আরম্ভ কর। লাও পাতা দেহলে আমার চহে তুমার টুট বাইস্যা ওডে, বাজি কইরা হাইতে সখ জাগে। পিতিবির যতলা বালা গন্দ আছে। তাহে। পিতিবির যতলা বালা ফুল আছে। তাহে। পিতিবির যতলা বালা সুখ আছে। তাহে -- সব হানে আমি তুমারে দেহি। আরেকটা কতা কইয়্যা দেই, হুন, তুমার লগে যে আমার লাইন আছে এই কতাডা যদি তুমি ফিনি ফিনি মেঘের লাহান বুইল্যা যাওয়া সুরু কর তাইলে আমি তুমারে ঢাডা রইতে লাহান
দূরের আকাশ
তাবির তার নাম
তাবির। তার নাম। তাবির তার নাম। সন্ধ্যা হলে বাবলা গাছের সরাসরি নিচে আসেন। পাখি তখন ঘরে ফিরতে শুরু করে। শব্দধ্যান। তাবির এই সময় শব্দধ্যান করেন। বাবলা গাছের পাশেই তার ঘর। ছোট্ট একটা ঘর। একজন থাকতে পারে এমন ঘর। রুমও বলা যেতে পারে। তবে ঘর বলা সুবিধাজনক। কয়েকদিন পর পর এক মহিলা বাবলা গাছের সামনে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। তাবিরকেই গালিগালাজ করে। তাবির তখন ঘরের ভেতরে পরমের ধ্যানে মগ্ন। কোনোদিন আবার খুচরো কাজে ব্যস্ত থাকেন। কোনোদিন তাবির মহিলার সাথে অংশগ্রহন করেন। তাবির গালিগালাজ করেন না। মহিলাকে গালিগালাজ করার সুযোগ করে দেন। মেজর। তাবিরের বন্ধু। সে প্রায়ই তাবিরের বাবলা গাছের নিচে আসে। রাগ প্রকাশ করে মেজর। মহিলার প্রতি রাগ প্রকাশ করে। মহিলাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিতে চায় মেজর। তাবির নিষেধ করে। অনেকদিন হয়ে
আমি আর আমাদের বাড়িতে নেই
গভীর রাতে রেললাইনের আওয়াজ শোনা যেতো। চার বছর বয়স থেকে আওয়াজটা শুনতাম । সকাল হয়ে গেছে ভাবতাম। কিন্তু না, সকাল হয়নি। আমার মনে সকালেরা অভিনয় করতো। সকাল সকাল ঘুমিয়ে গেলে ঘুমও একসময় ক্লান্ত হয়ে যায়। সকাল থেকে রেললাইনের আওয়াজ আর শোনা যেতো না, স্থানীয় শব্দ যেহেতু শক্তিশালী সেহেতু। এক সময় প্রতি রাতে একটা নির্দিষ্ট সময় আমার ঘুম আস্তে করে শরীর থেকে চলে যায়। কান মেলে দেখি রেললাইনের আওয়াজ। রেললাইনের উপর দিয়ে ট্রেন যখন গতিমুখী চলতে থাকে তখন এমন আওয়াজ হয়। দিনে দিনে রেললাইনের আওয়াজটার প্রতি আমার গভীর ভালোলাগাবোধ জেগে ওঠে। এখনো তাকে রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনুভব করি। রেললাইন কিন্তু আমাদের বাড়ি থেকে অনেক দূরে। কেবল রাতেই সে আমাদের বাড়িতে আসতো। রেললাইন এখনো গভীর রাতে আমাদের বাড়িতে আসে, আমি আর আমাদের বাড়িতে নেই