কুতুব মিনারে প্রতি রাতে নেমে আসে মৃত কিছু আত্মা। থেকে থেকে জিকিরে মশগুল তারা। হক মওলা ইল্লাল লা। ইল্লাল্লাহু ইল্লাল লা। রাত যখন কোনো কথা বলে মানুষ চুপ হয়ে যায় তখন। তখন কবর থেকে কান্নার রব আসে কানে। তখন গভীর এক অন্ধকার পৃথিবীর পথে। তখন আমাকে ট্রেনের গতিতে ভাসাতে প্রমায়া জাগে হৃদয়ের আয়নাতে। চুপ হয়ে যাই আমি চুপ হয়ে যায় কবর কেবল অতীত এসে অতিথি অতিথি ভাব ধরে শ্রীরাম সুরে কুতুবি পাথর হিন্দু মন্দিরের আলপথে মুসলমান হলে জানালার চোখে পর্যটক আলো দেখে, বহুকাল আগে যারা আলো চাষ করে ঘুমিয়ে গ্যাছে তাদের ধূলো মিনারে মিনারে ছায়ার মতো গতরে লাগে তাদের ডাক শুনতে পাই সবুজ ডাক ধান পাঁকা ডাক রোদচশমা ডাক কোথায় যেন আমি থেমে যাই-- মানুষ বলতে পারি না নিজেকে, চোখের ভেতর যেন কালো মাঠ-- মনের মিনার। মনের মিনারে ভ্রমন
Day: May 13, 2020
দেখা হতে পারে বলে সাগরে জল আসে
এই যে থেমে গেলো আমার পথ এই যে আকাশে আর মেঘ হচ্ছে না এই যে আমার নদীতে বড় বেশি ভাটা এই যে কোনো জলে স্নান করি না আর এই যে আসমান থেকে জমিন, জমিন থেকে আসমান সব জায়গায় আমার বিষাদ এই যে বেড়ে যাচ্ছে আমার উলঙ্গ দহন, রূহের উত্তাপ দায়ী কে? তার জন্য দায়ী কে? তার জন্য দায়ী একমাত্র তুমি! সংবিধান, ইতিহাস, যুক্তি তর্ক নয় আমি জানি তুমিও জানো আমার হৃদয়মাছ কেন জলহীন ভূমি! আমি চাই না কাল কালো মেঘের মতো তোমার সুখপ্রদ সময়ে তুলে দিক বিষাক্ত ছোবল চাই না তোমার কান্না থেকে নদী হোক নদী থেকে সাগর সাগর থেকে অজস্র সাপের সংসার চলে আসো এখনো সময় তোমার এখনো আমার অপেক্ষা তোমার ডান হাতের গভীরে কোনো জঙ্গল নেই আমাদের মনঘর সঠিক আচার্য আশ্চর্য সহজিয়া নদী তুমি নালা হয়ে গেলে লজ্জা ত তোমার লজ্জা ত আমার কথা বলি না বলে যারা ভাবে নির্বাক চলচ্চিত্র
তরে ডাহি আমি বিন্নালার লাহান
হুন, তুমারে একটা কতা সরাসরি কইতে চাই, যে কতাডা কইতে চাই সেইডা তুমি জান বলে আমি বিসসাস করি। আসমানে যহন চান দেহি, চান থেইক্কা যহন দুদের লাহান সাদা সাদা ফুরনিমা রাইত নাইম্মা আহে তহন আমার তুমার কতা মনে ফরে। গাছের ডালে, আমার জানালায় বসন্ত আইলে আমি তুমারে টের ফাই, তুমি আইসা তহন আমার মনে ডুক্কু ডুক্কু হেলতে আরম্ভ কর। লাও পাতা দেহলে আমার চহে তুমার টুট বাইস্যা ওডে, বাজি কইরা হাইতে সখ জাগে। পিতিবির যতলা বালা গন্দ আছে। তাহে। পিতিবির যতলা বালা ফুল আছে। তাহে। পিতিবির যতলা বালা সুখ আছে। তাহে -- সব হানে আমি তুমারে দেহি। আরেকটা কতা কইয়্যা দেই, হুন, তুমার লগে যে আমার লাইন আছে এই কতাডা যদি তুমি ফিনি ফিনি মেঘের লাহান বুইল্যা যাওয়া সুরু কর তাইলে আমি তুমারে ঢাডা রইতে লাহান
দূরের আকাশ
তাবির তার নাম
তাবির। তার নাম। তাবির তার নাম। সন্ধ্যা হলে বাবলা গাছের সরাসরি নিচে আসেন। পাখি তখন ঘরে ফিরতে শুরু করে। শব্দধ্যান। তাবির এই সময় শব্দধ্যান করেন। বাবলা গাছের পাশেই তার ঘর। ছোট্ট একটা ঘর। একজন থাকতে পারে এমন ঘর। রুমও বলা যেতে পারে। তবে ঘর বলা সুবিধাজনক। কয়েকদিন পর পর এক মহিলা বাবলা গাছের সামনে এসে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে। তাবিরকেই গালিগালাজ করে। তাবির তখন ঘরের ভেতরে পরমের ধ্যানে মগ্ন। কোনোদিন আবার খুচরো কাজে ব্যস্ত থাকেন। কোনোদিন তাবির মহিলার সাথে অংশগ্রহন করেন। তাবির গালিগালাজ করেন না। মহিলাকে গালিগালাজ করার সুযোগ করে দেন। মেজর। তাবিরের বন্ধু। সে প্রায়ই তাবিরের বাবলা গাছের নিচে আসে। রাগ প্রকাশ করে মেজর। মহিলার প্রতি রাগ প্রকাশ করে। মহিলাকে দূর দূর করে তাড়িয়ে দিতে চায় মেজর। তাবির নিষেধ করে। অনেকদিন হয়ে
আমি আর আমাদের বাড়িতে নেই
গভীর রাতে রেললাইনের আওয়াজ শোনা যেতো। চার বছর বয়স থেকে আওয়াজটা শুনতাম । সকাল হয়ে গেছে ভাবতাম। কিন্তু না, সকাল হয়নি। আমার মনে সকালেরা অভিনয় করতো। সকাল সকাল ঘুমিয়ে গেলে ঘুমও একসময় ক্লান্ত হয়ে যায়। সকাল থেকে রেললাইনের আওয়াজ আর শোনা যেতো না, স্থানীয় শব্দ যেহেতু শক্তিশালী সেহেতু। এক সময় প্রতি রাতে একটা নির্দিষ্ট সময় আমার ঘুম আস্তে করে শরীর থেকে চলে যায়। কান মেলে দেখি রেললাইনের আওয়াজ। রেললাইনের উপর দিয়ে ট্রেন যখন গতিমুখী চলতে থাকে তখন এমন আওয়াজ হয়। দিনে দিনে রেললাইনের আওয়াজটার প্রতি আমার গভীর ভালোলাগাবোধ জেগে ওঠে। এখনো তাকে রন্ধ্রে রন্ধ্রে অনুভব করি। রেললাইন কিন্তু আমাদের বাড়ি থেকে অনেক দূরে। কেবল রাতেই সে আমাদের বাড়িতে আসতো। রেললাইন এখনো গভীর রাতে আমাদের বাড়িতে আসে, আমি আর আমাদের বাড়িতে নেই
পথে মানুষ ছাড়াও অনেকের সাথে দেখা হবে
মাঠের পর মাঠ মাঠের পর মাঠ এবং মাঠের পর মাঠ। ট্রেন চলছে তো চলছে। আসামির মতো বসে আছে, শুয়ে আছে নিজ সিটে তারা। জানালার চোখ দিয়ে সবুজ মাঠে শাদা বকের মতো মন্দির দেখা যায়। শরৎ বাবুর কোনো উপন্যাসের কোনো একটি চরিত্র খুব মনে পড়ছে। আকাশ হতে থেকে থেকে নেমে আসছে জাপানি রোদ। তাহলে বুঝতে পারলুম পৃথিবীর সব জায়গায় কমবেশি রোদ থাকে। এতো রোদের মাঝেও কারা যেন অন্ধকারের চাষ করে। রবিবাবুর অমলের মতো বসে আছি জানালার পাশে। অনেক পথের সাথে দেখা হচ্ছে। অনেক পথ। কোনো পথ সোজা, কোনো পথ অদ্বয়, কোনো পথ পাড়াত আবার কোনো পথে নেমে আসে ধান সবুজ। কোনো পথই মানুষের মনের মতো এতো লোভাতুর নয়। প্রত্যেক পথ একটি ভ্রমনের কথা বলে। আর মানুষ চিনে সীমানা। চোখের সীমানা দিয়ে লাফিয়ে লাফিয়ে
তোমার নামে নদী কিনবো
আমি একটা আকাশ কিনবো নদীর পাড়ে চাঁদের আলোয় তিল বসাবো নীলের গায়ে হলুদ কালার আলো থাকবে জল বরাবর জলের নিচে মাছের আবাস সুখ তরাতর বৃষ্টি এলে প্রেমের চালে শব্দ হবে চুলগন্ধ ফুলের চালে নাকে যাবে সবুজ একটা পাহাড় নামবে দূর জানালায় মেঘের একটা নহর নামবে ঘাটু ঝরনাগায় মধ্যরাতে তারার দল রীতিমতো দিবে কল সবুজ হাসি মনের দেশে উঠোন পথে চলবে হেসে আঙ্গুল আমার তোমার ক্ষেতে করবে চাষ রাত বিরাতে সবুজ একটা আলো এসে পড়বে তোমার নরম ঠোঁটে আমি তখন গরম বাতাস শরীর তোমার তুলার তাস আমি একটা বাড়ি করবো নদীর জলে তোমার সাজে ঠিক তখন আমার আকাশ সজল এক প্রেমের লাজে
ইয়েস নো ইয়েস
আমাদের বাড়িতে একটি বেড়াল আছে। বিড়ালটির দুটি চোখ, একটি নাক, একটি মুখ, দুটি পা আছে। বিড়ালটির প্রিয় খাবার তাজা ইন্দুর। অনেক পাহাড়ি মেয়েরা তাজা ইন্দুর রান্না করে খায়। অনেকে শখ করে বিড়াল পোষে। কারন বেড়াল আদুরে প্রাণি-- সুড়সুড়ি দিতে ও নিতে পছন্দ করে। বেড়াল দেখতে বাঘের মতো কিন্তু বাঘ না। আমার একজন প্রিয় মানুষ বেড়াল কাছে রাখে কারন সে চায় বাঘের অপভ্রংশ অন্তত কাছে থাকুক-- বাঘ নাই তো তাতে কী! যে বিড়ালটি আমার প্রিয় সেটি শিকারি। তাজা ইন্দুর আর তাজা টিকটিকি শিকার করে। শিকারি বেড়াল ম্যাথ ভালো জানে। তাইতো স্বামী না থাকলেও বাচ্চা-কাচ্চা নিয়ে তার সংসার ভালোই চলে। এক জন সাহাবীর নাম ছিল বেড়ালের বাপ বা বেড়ালের অভিভাবক। বাড়ি গেলে বিড়ালটি দৌড় দিয়ে আমার পায়ের কাছে আসে বাজার থেকে বাবা বাড়িতে গেলে তার নাতি-নাতনি
আয়তনে ছোট মুখ দেখাতে বড়
দাবা খেলতে জানে না মানুষ দাবা খেলতে জানে না চুমু খাবার আগেই তারা শুরু করে জলকেলি খেলা দাবা খেলার আগেই মানুষ দেখায় আফিম কৌতুক কৌশল যোগ্যতা পৌষের মেলা গতির মতন স্থির হয়ে আসে সৈয়দ শামসুল হক কিংবা তাহাদের পিতা একদিন পরে আগের দিন দেখা যায় আগের দিনে বসে দেখি পাবলিক বাস ভ্রমনে রমনে হনুমানে সাপ মুন্সি গ্রাম-- মৃত্যুর পর মৃত্যু মৃত্যুর পর মৃত্যু খানিকটা জীবন আর কত বেঁচে থাকা যায়-- এ যে নামাতা নামাতা আয়তন আয়তনে নামে সুখ আয়তনে নামে দুহ আয়তনে রাজ্য আয়তনে পরাজয় আয়তনে যতসব রাজার আসন আয়তনে কেনাবেচা আয়তনের ভেতর আয়তন মুখোমুখি বসিবার কতিপয় বচন একটা গতি বারবার বারবার মাথার ভেতর ডেকে ডেকে হয়রান কোথাও যেতে বলে কোথাও স্থির হতে দেয় না-- চলো চলো চলো চলতে চলতে থামা ভুলে গেছি-- কষ্ট হয় যে মনের ভেতর আর কত কষ্ট নিয়ে জীবনের সাথে বাজি খেলবা মন আর কত কষ্টের বারান্দায় ফেলবে যবনিকা চিহ্ন দাবা